‘ভোজনরসিক বাঙালি’। অক্ষরে-অক্ষরে মিলে যায় এই কথাটা। ভারতে খাদ্যের বৈচিত্র্য়ও লক্ষ্য করা যায়। আর সেখানে বাংলার খাবার রয়েছে তালিকার বেশ উপরে। খাদ্যের দিক দিয়ে বাংলাকে টেক্কা দেওয়ার কেউ নেই। তাছাড়া বাংলা ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যের খাদ্য নিয়ে এত চর্চা করা হয় না। ফিরে তাকালে এমন অনেক ঘটনা উঠে আসবে, যেখানে দেখা যাবে বাঙালি খাবার নিয়ে খুবই আবেগপ্রবণ। বাড়িতে অতিথি এলে পঞ্চব্যাঞ্জন রেঁধে খাওয়াতে ভালবাসে। জন্মদিন হোক বা বিয়ের অনুষ্ঠান, সেখানেও থাকে বিভিন্ন পদের সম্ভার। শোনা যায়, অধ্যাপক বিজ্ঞানী সত্যেন বোস অবসর সময়ে রকমারি পদ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতেন, আবিষ্কার করতেন নতুন রন্ধনপ্রণালীও। এমনকী নোবেলজয়ী অধ্যাপক অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জিও নতুন নতুন রান্না করতে ভালবাসেন। তিনিও কিন্তু একজন ভোজন রসিক। তাছাড়া জলভরা তালশাঁস থেকে শুরু করে গন্ধরাজ মোমো সবই বাঙালির আবিষ্কার।
বাঙালি খাবারকেও উদযাপন করে। তাই তো বছর বছর পালিত হয় খাদ্য উৎসব। প্রতি বছরের মতো এ বছরও বেহালা ক্লাবে ধুমধাম করে পালিত হতে চলেছে খাদ্য উৎসব ‘পেট পুজো’। আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ‘পেট পুজো’। চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। বেহালা ক্লাবের মাঠে চারদিন ধরে চলবে ‘পেট পুজো’। এ বছর পঞ্চম বর্ষে পা দিল বেহালা ক্লাবের খাদ্য উৎসব। খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে জমজমাট আয়োজন বেহালা ক্লাবের।
শীতের মরশুম, মানেই নলেন গুড়ের সম্ভার। আর সামনেই মকর সংক্রান্তি। তাই এই বেহালা ক্লাবের ‘পেট পুজো’য় থাকছে পিঠেপুলি, পাটিশাপটা। এছাড়াও রয়েছে বাংলার নানা পদ। এছাড়া প্রতিষ্ঠিত রন্ধন শিল্পীরা আধুনিক ও সাবেকি রন্ধনপ্রণালীর উপর বক্তব্য রাখবেন। আপনি চাইলে তাঁদের থেকে শিখেও নিতে পারেন বেশ কিছু রেসিপি। তবে, বেহালা ক্লাবের খাদ্য উৎসব শুরু খাবারের মধ্যে আবদ্ধ নেই। শীতের সন্ধ্যায় রকমারি খাবারের পাশাপাশি এখানে থাকছে বাউল, ফকির গানের অনুষ্ঠান। সুস্বাদু পদ ও লোকগীতিতে আপনার মন ও পেট দুটোই ভরে যাবে।
অভিনবত্বে বেহালা ক্লাব সবসময় প্রথম সারিতে থেকেছে। দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে নাট্য উৎসব সব কিছুতে এগিয়ে বেহালা ক্লাব। এমনকী মহামারীর সময় কোভিড আক্রান্তদের সেবায় সবসময় এগিয়ে ছিল বেহালা ক্লাব। ক্লাবের সদস্যরা প্রাণ হাতে নিয়ে আক্রান্তদের বাড়িতে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছিল। এবারও মানুষের কথা ভেবেই বেহালা ক্লাব খাদ্য উৎসবের আয়োজন করেছে।