একটা গ্রাম জুড়ে শুধু থাকে শিয়ালরা। শুনে অবাক হচ্ছেন! কিন্তু বাস্তবে সত্যিই এমন গ্রাম রয়েছে। জাপানে রয়েছে Zao গ্রাম। আরও একটি নামে এই গ্রাম পরিচিত। অনেকেই একে বলেন Fox Village। এই গ্রামের যেদিকেই তাকাবেন আপনার নজরে আসবে মোটাসোটা ফ্লাফি শিয়াল। কী সুন্দর লোমশ গা তাদের। একঝলক দেখে লোমশ কুকুর ভেবে ভুল করতেও পারেন।
জানা গিয়েছে, এখানে রয়েছে অন্তত ছ’টি ভিন্ন প্রজাতির শিয়াল রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য রেড ফক্স, সিলভার ফক্স এবং প্ল্যাটিনাম ফক্স। যাঁরা শিয়াল ভালবাসেন কিংবা লোমশ প্রাণী ভালবাসেন, এককথায় যাঁরা বেশ পশুপ্রেমী, তাঁদের এই জায়গা বেশ ভাল লাগবে বলে আশা করা যায়। ফটোগ্রাফির জন্যও লোমশ মোটাসোটা শিয়ালরা আদর্শ। দিব্যি মানুষের সঙ্গে মিশে যায়। পোজ দিয়ে ছবিও তোলে।
১৯৯০ সালে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই Zao Fox Village। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকের আনাগোনা লেগেই থাকে জাপানের এই গ্রামে। শিয়ালদের সঙ্গেই গ্রামের ভিতরে নিজের ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াতে পারেন পর্যটকরা। শুধু তাই নয়, কয়েকদিন থাকার পরই শিয়ালদের সঙ্গে বেশ বন্ধুত্বও হয়ে যায় পর্যটকদের। মানুষ-শিয়ালের বন্ধুত্ব! জুটির নাম শুনলে বেখাপ্পা লাগলেও, এদের দোস্তি কিন্তু বেশ জমাটি।
প্রাচীন কাহিনীতে বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়েছে যে মানুষের সঙ্গে সঙ্গেই থাকত শিয়ালরা। জাপানিরা এমনটা বিশ্বাসও করেন যে সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের সঙ্গী হয়েছে শিয়ালরা। জাপানি ভাষায় এদের বলে kitsune। জাপানের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, শিয়াল হল Shinto Inari spirits- এর বার্তাবাহক। অর্থাৎ উন্নয়নের বার্তা নিয়ে আসে তারা। এখানেই শেষ নয়। প্রতি বছর নিউ ইয়ার্স ইভে টোকিও শহরের Oji Inari-jinja Shrine- এ ফক্স প্যারেডের আয়োজন করা হয়।
তবে শিয়াল ছাড়াও জাপানের এই গ্রামে আরও আকর্ষণ রয়েছে। বরফে মোড়া পাহাড় ঘেরা এই গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাক লাগিয়ে দেয়। তবে এখানে যেতে হলে দিতে হবে অ্যাডমিশন ফি। ভারতীয় মুদ্রায় ৬৯০ টাকা অ্যাডমিশন ফি দিতে হবে জাপানের এই গ্রামে ঢোকার জন্য। তবে স্কুল পড়ুয়া আর ছোট বাচ্চাদের জন্য কোনও প্রবেশ মূল্য নেই। তবে শিয়ালদের ধরতে গেলে কিন্তু টাকা খসাতে হবে আপনাকে। বড় লোমশ মোটাসোটা শিয়ালদের জড়িয়ে ধরে ছবি তুলতে গেলে দিতে হবে ২৭৬ টাকা।
তবে মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলেও আদতে এরা বন্য। তাই বেশি সখ্য না দেখানোই ভাল। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বেশি কাছাকাছি না ঘেঁষার নিষেধবাক্যও লেখা রয়েছে বোর্ডে।