Raj Bhavan: গভর্নরের বাড়ির ভিতরটা কেমন, এবার সাধারণের জন্য রাজভবনে শুরু হতে চলেছে হেরিটেজ ওয়াক
Kolkata Governor's House: এতদিন পর্যন্ত রাজভবন সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল। ইতিহাস জানা থাকলেও গেটের বাইরে দাঁড়িয়েই দেখতে হত। এবার হেঁটে দেখতে পারবেন রাজভবনের ভিতরও।
কলকাতার অন্যতম ‘ল্যান্ডমার্ক’ রাজভবন। শহরবাসী রাজভবনের ঠিকানা জানলেও ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। বইয়ের পাতা, বিশেষজ্ঞদের মুখে রাজভবনের গল্প শুনলেও ভিতরে ঢুকে তা ‘এক্সপেরিয়েন্স’ করা যায় না। কিন্তু এবার কার্যত শেষ হচ্ছে সেই ঔপনিবেশিক মানসিকতা। এবার আপনি ঘুরে দেখতে পারবেন বাংলার রাজভবন। সম্প্রতি বাংলা সফরে এসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাজভবনের প্রতীকী চাবি তুলে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। এখন থেকে রাজভবন হল ‘জন রাজভবন’। সাধারণ মানুষ এবার খুব সহজেই ঘুরে দেখতে পারবেন রাজভবনের বাইরের ও ভিতরের অংশ। আর এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘হেরিটেজ ওয়াক’।
রাষ্ট্রপতি গত বছর দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা উপলক্ষে রাজভবনকে (Governor’s House) জনগণের রাজভবনে (People’s Raj Bhavan) পরিণত করার পরামর্শ দিয়েছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং ঔপনিবেশিক মানসিকতা ভাঙতেই এই সিদ্ধান্ত। যদিও কবে থেকে ‘জন রাজভবন’-এ হেরিটেজ ওয়াক শুরু হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পয়লা বৈশাখ থেকে শুরু হতে পারে এই হেরিটেজ ওয়াক।
১৭৯৯ সাল থেকে ১৮০৩ সালের মধ্যে তৈরি হয়েছিল কলকাতা রাজভবন। ৮৪,০০০ স্কোয়ার ফিট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই হেরিটেজ ভবন। বাগান-সহ রাজভবনের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখার জন্য জনপ্রতি ৫০ টাকা ধার্য করা হবে। এক-একটি হেরিটেজ ওয়াকে ২৫ জন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ঘুরে দেখা যাবে রাজভবনের নিচের ঘর, ঝুলন্ত সেতু, সুইমিংপুল, বাগান-সহ বিভিন্ন জায়গা। এমনকী ঘুরে দেখতে পারবেন রাজভবনের লাইব্রেরিও। যেখানে বাংলার প্রথম গভর্নর সি রাজাগোপালাচারীর লেখার ডায়েরি থেকে শুরু করে বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর লেখা বেলিয়াঘাটার হায়দার মঞ্জিলে গান্ধীজির অনশনের বই রয়েছে। এমনকী সেখানে গান্ধীজি-ঘনিষ্ঠ নির্মলকুমার বসুর লেখা বইও রয়েছে। রাজভবনে প্রবেশ করা মাত্রই আপনি দেখতে পাবেন চিনের কামান, যা ১৮৪২ সালে নানকিং থেকে ভারতে আনা হয়েছিল। রাজভবনের যে অংশে গান্ধীজি এসেছিলেন, সেই অংশও ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
এতদিন পর্যন্ত রাজভবন সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল। ইতিহাস জানা থাকলেও গেটের বাইরে দাঁড়িয়েই দেখতে হত। এবার হেঁটে দেখতে পারবেন রাজভবনের ভিতরও। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি নিজের উদ্যোগে সেকেন্দ্রাবাদের ‘রাষ্ট্রপতি নিলয়’ সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দিয়েছেন। এবার সেই একই পথে হাঁটলেন বাংলার রাজভবনের ক্ষেত্রেও।
মানুষ যাতে সহজেই রাজভবনে হেরিটেজ ওয়াকের অংশ হয়ে উঠতে পারেন, তার জন্য অ্যাপ তৈরির কথাও ভাবছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ভারতীয় জাদুঘর এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়ামের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে রাজভবনে হেরিটেজ ওয়াকের জন্য আপনি স্লট বুক করতে পারবেন। এমনকী কিউআর কোড (QR Code) তৈরির পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। এতে এক ক্লিকেই আপনি রাজভবন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন। তবে, কবে থেকে এই হেরিটেজ ওয়াক শুরু হবে, সেটাই এখন দেখার।