
বান্ডিল বান্ডিল টাকা। টেবিলে থরে থরে সাজানো। মাটিতেও পড়ে রয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ টাকা। সবাই বসে গুনছেন সেই টাকা। এমন দৃশ্য দেখেছেন কখনও?

না, দুর্নীতি বা চুরির টাকা নয়। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা বেরিয়েছে দানবাক্স থেকে। বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মংসিংহের কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদেই পাওয়া গিয়েছে টাকা। তাও আবার ২৮ বস্তা!

পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকেই মিলেছে এই বিপুল পরিমাণ টাকা। এর আগেও মসজিদের দানবাক্স থেকে কোটি কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। তবে এবারের টাকা সব রেকর্ড ভেঙেছে।

ময়মংসিংহের অন্তগর্ত কিশোরগঞ্জে, নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। এই মসজিদে রয়েছে ৯টি লোহার দানবাক্স। সেই দানবাক্স খোলা হয়েছে আজ। ৩ মাস ২৬ দিন পর শনিবার সকালে এই দানবাক্সগুলো খোলা হয়। আর তাতে এবার রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

দুপুর থেকে চলছে এই গণনার কাজ। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ৩৫০ জনের একটি দল। গণনার কাজ কখন শেষ হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবার ৩ মাস ২৬ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছে। এবার রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার ছাত্ররা এই টাকা গণনার কাজ করছেন।

এর আগে গত ২০ এপ্রিলও পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। সেবার রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। নগদ অর্থ ছাড়াও ঐ সময়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল।

এই মসজিদ সম্পর্কে জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জে। এক সময়ে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে হঠাৎই দেখা যায় মসজিদ। শত শত বছর ধরে মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত আছে ওই সাধকের আস্তানায়।

পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকার মানুষ জন। পরে যা ছড়িয়ে পড়ে দেশ বিদেশে। মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমনই বিশ্বাস।

বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, সোনা ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন।