‘চিক ফ্লিক’ সিজন ওয়ানের পর অপেক্ষা ছিল দর্শক মহলে। এ বার আসছে চিকফ্লিক সিজন টু। মিল্কি ওয়ে ফিল্মসের প্রযোজনায় গল্প লিখেছেন জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত দেব এবং দুর্বার শর্মা।
প্রথম সিজনের পর গল্প এগিয়ে যায় আরও এক বছর। জিনিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছে তনয়কে। মন্টুকে ছেড়ে বিয়ে করে নিয়েছে সোমা এবং বাম্পিকে ছেড়ে অভিনয় করতে মুম্বই পাড়ি দিয়েছে স্যুইটি। এদের তিনজনের জীবনই চলছিল একদম নিরসভাবে। মনের দুঃখেই একদিন এরা মিলিত হয় বাজিরাও মাস্তানি পাবে। যেটা ছিল আবার জুয়ার ঠেক। জুয়াতে রায়বাহাদুর পাওয়া ঘটক ফ্যামিলির ছেলে মন্টু আবেগের বশে জুয়াতে পঞ্চাশ লাখ হেরে বসে।
এদিকে ভারতের একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানীর (চন্দ্রবিন্দু) ল্যাবে তৈরী হওয়া ‘অমৃত’র ফর্মুলা নিয়ে শোরগোল পড়ে চারিদিকে। এই ফর্মুলা ভারতকে বিশ্বরাজনীতি, মেডিক্যাল সায়েন্সে কয়েক যোজন এগিয়ে দিত। এগিয়ে দিত, কারণ এসব হওয়ার আগেই মাখন পুরো ফর্মুলাটাই পাচার করে দিতে চায় বাংলার ড্রাগ মাফিয়া জেঠুর কাছে।
এটা জানার পর সঙ্গে সঙ্গে এই প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে বাংলার স্মাগলিং জগতের ক্যুইন, মেডুসাও। সঙ্গী সেই গজা ও লিমকা। মাখনের থেকে সেই ফর্মুলা হাতিয়ে মেডুসা বিক্রি করতে যায় জেঠুকে। বিনিময়ে দাবি করে এক কিলো কোকেন। কিন্তু সে ডিল ভেস্তে যায়। সৌজন্যে আমাদের গল্পের তিন নায়ক; তনয় বাম্পি ও মন্টু। মাস্তানির সেই শর্ত রক্ষা করতে গিয়ে মাস্তানির নির্দেশেই ওরা জেঠু –মেডুসার ডিল ভণ্ডুল করতে যায়।
ডিলের সময়ে গোল বাঁধে কারণ জিনিয়াকে জেঠুর সাথে দেখে স্থির থাকতে পারেনা তনয়। ঝাঁপিয়ে পড়ে জিনিয়াকে বাঁচাতে। ফলে বাধ্য হয়েই জিনিয়া তনয় মন্টু আর বাম্পিকে নিয়ে ওঠে তারই এক আস্তনায়। এতকাল তনয়ের থেকে দূরে থাকার কারণ হিসেবে জিনিয়া সকলকে বলে সে আসলে দিল্লি থেকে আগত স্পেশাল আন্ডারকভার এজেন্ট। জেঠুর পুরো গ্যাংটাকে ধরতেই সে জেঠুর দলে ভিড়ে গিয়েছিল। বিশ্বাস করে তনয়রা। ওদের সম্পর্ক একটু করে স্বাভাবিক হতে শুরু করে আবার।
ওদিকে কোকেন আর ফর্মুলা হাতছাড়া হয়ে দিশেহারা মেডুসার আদেশে গজা লিমকা তাদের ডেরায় তুলে আনে জেঠুর একমাত্র মেয়ে বিম্বোকে। কারণ মেডুসা বিশ্বাস করে জেঠুই আসলে ওই চারজনকে দিয়ে প্ল্যান ভেস্তে দিয়েছে। পরিস্থিতি ঘোরালো হয় যখন কমিশনারের আচরণও সন্দেহজনক হয়ে পড়ে অফিসার দুরন্ত বটব্যালের কাছে।
সকলে মিলিত হয় এক জায়গায়। জেঠু-মাস্তানি- মেডুসা নিজেরা নিজদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা চরমে ওঠে যখন গোলাগুলি শুরু হয় এবং এন্ট্রি নেয় কমিশনার মৈত্রেয়ী রায় এবং দুরন্ত বটব্যাল। একে অপরকে দোষারোপ করে। জানা যায় মাস্তানিই আসলে আন্ডারকভার এজেন্ট। জিনিয়া নয়। ভোল বদলায় জিনিয়া।
বন্ধুত্ব, বিশ্বাস, বিশ্বাস ভঙ্গ, ভালবাসা, আনন্দ, ইনোসেন্সের একটা উদযাপনের মধ্যে দিয়ে আবর্তিত হতে থাকে ‘চিক ফ্লিক’ সিজন টু-এর গল্প।
কমেডির মোড়কে আগাগোড়া একটা রহস্য টানটান ভাবে থেকে যায়। আলো পড়লেই চরিত্রেরা পরিস্ফুট হয় আবার পরক্ষণেই বদলে যায় তারা।
সব শেষে পড়ে থাকে শুধু বন্ধুত্ব । উদযাপন। সমস্ত হুজ্জতির পরে একটা দারুণ আনন্দ। ভালো লাগার ঘোর।
এই সিরিজে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, সুদীপা বসু, সায়ন ঘোষ, সবুজ বর্ধন, সায়নী চট্টোপাধ্যায়, অনুজয় চট্টোপাধ্যায়, রাতাশ্রী দত্ত, জিনা তরফদার প্রমুখ। পরিচালনা করেছেন জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।