Jagadhatri Puja in Chandannagar: আজই হবে আলোর সেরা খেলা! জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার একাল-সেকাল

TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপ্তা দাস

Nov 23, 2023 | 7:35 PM

Jagaddhatri Puja 2023: ভক্তদের অসন্তুষ্ট না রেখেই এ বছর দশমীতে নয়, একাদশীর দিনই বের করা হয়েছে আলোর শোভাযাত্রা। আর সেই চোখ ধাঁধানো আলোর কেরামতির দেখার দিন হল আজই। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার দেখার জন্য চন্দননগরের এই মুহূর্তে তিল ধারণের জায়গা নেই। ঐতিহ্যবাহী এই প্রাচীন শহর আগেও সমৃদ্ধ ছিল, এখনও সেই সমৃদ্ধিধারা অব্যাহত।

Jagadhatri Puja in Chandannagar: আজই হবে আলোর সেরা খেলা! জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার একাল-সেকাল

Follow Us

নিয়ম মেনে প্রতি বছর দশমীর দিন পালিত হয় চন্দননগরের জগদ্বিখ্যাত আলোর শোভাযাত্রা। কিন্তু এ বছর তিথি-নক্ষত্রের জাঁতাকলে জগদ্ধাত্রীপুজো পালিত হয়েছে মাত্র তিনদিন। কিন্তু সারা বছর এই উত্‍সবের দিকেই চেয়ে থাকেন আলোর শহরের বাসিন্দারা। ভক্তদের অসন্তুষ্ট না রেখেই এ বছর দশমীতে নয়, একাদশীর দিনই বের করা হয়েছে আলোর শোভাযাত্রা। আর সেই চোখ ধাঁধানো আলোর কেরামতির দেখার দিন হল আজই। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার দেখার জন্য চন্দননগরের এই মুহূর্তে তিল ধারণের জায়গা নেই। ঐতিহ্যবাহী এই প্রাচীন শহর আগেও সমৃদ্ধ ছিল, এখনও সেই সমৃদ্ধিধারা অব্যাহত। সব দিক থেকেই সর্বসেরা। ফরাসিদের অধীনে থাকার সময়ও ফরাসি সংস্কৃতি ও আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে বিশেষ করে এই শহরের জগদ্ধাত্রী পুজো ও শোভাযাত্রা আলাদ আকর্ষণীয় ছিল।

জগদ্ধাত্রী পুজো কীভাবে শুরু হল, কে সর্বপ্রথম প্রচলন করেছিলেন, তা এখন সকলেরই জানা। তবে জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার সূচনা কবে হয়েছিল? আলোর শহরের এই বিখ্যাত পুজোর নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮ শতকের মধ্যভাগ থেকে। রেলপথ শুরু হওয়ার পর থেকেই শহরে ভিড় করতে থাকেন দূর-দূরান্তের ভক্তরা। লোকজন আসা শুরু হতেই এই শহরের পুজোর আভিজাত্য ও আয়োজন আরও বৃদ্ধি পায়। ধীরে ধীরে পুজোর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সকলকে মোহিত করতে শুরু করে। শোভাযাত্রা ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক চরম আকর্ষণ। প্রথমে জগদ্ধাত্রীর মূর্তিকে কাঁধে করে গোটা শহর ঘুরে দেখানো হত। বাইরে থেকে আসত প্রতিমাকে কাঁধে বহন করার বাহকরা।

কাঁধ থেকে চলে যায় বাঁশের খাঁচা। প্রতিমা যাওয়ার পথে ফুল ছড়িয়ে বিদায় জানানো হত। প্রথম দিকে মশাল জ্বালিয়ে প্রতিমার সামনে র‍্যালি করে নিয়ে যাওয়া হত। সাধারণত, জমিদার বাড়ির ও প্রভাবশালী কমিটি গুলিতে শোভাযাত্রায় অ্যাসিটিলিন ও ডেলাইটের আলো জ্বালানো হত। বাঁশের খাঁচা করে প্রতিমা কাঁধে নিয়ে ঘোরার পাশাপাশি মশাল জ্বালিয়ে সারারাতা শোভাযাত্রার আয়োজন করা হত। তারপর এল বৈদ্যুতিক লাইট। ১০৪৮ সালে জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রায় ব্যবহার হয় অভিনব বৈদ্যুতিক টিউব। এই টিউব ব্যবহার করা বেশ ব্যয় সাপেক্ষও ছিল। কারণ এদেশের আলো তো নয়ই, হল্যান্ডের ফিলিপ্সের আলো ব্যবহার করা হত। সেই বাল্বের গায়ে রঙিন ও পাতলা প্লাস্টিক জড়িয়ে আলোর রকমারি কারসাজি করা হত। এর পর ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে বাজারে এল টুনি বাল্ব। এই বাল্বের কদর ছিল প্রচুর। প্রতিমার সামনে লড়ি করে বিভিন্ন থিমের উপর আলোর কেরামতি দেখাতে ব্যবহার করা হত এই টুনিবাল্বের। সেই শোভাযাত্রার রূপই ছিল চোখ ধাঁধানো। সেই বাল্বের ছোঁয়ায় জায়গা করে নিয়েছে কার্গিলের যুদ্ধ থেকে পথের পাঁচালি, শেরপাদের কর্মকাণ্ড থেকে শিশুদের বর্ণপরিচয়। উজ্জ্বল ও সুন্দর আলোর চারিপাশে কেউ টেক্কা দিতে পারত না। লড়াই চল পুজো কমিটির মধ্যে। এরপর বাজার কাঁপাতে এল এলইডি আলো। ২০০৩ সালে সর্বপ্রথম চারমন্দিরতলা জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় ব্যবহার করে এই বিশেষ ও সস্তার আলো। চন্দননগরের আলোকসজ্জা এখন বিশ্বখ্যাত। দেশ-বিদেশের মাটিতে চন্দননগরের আলো এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। জগদ্ধাত্রী পুজোর দশমীতে সারারাত ধরে চলে আলোর কার্নিভাল। চলে ব্যান্ডের সুর-তাল-লয়, আদিবাসীদের দামামা,থিমের আলোর নানা কারসাজি। যা দেখে মানুষ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকেন। বিষাদ মনে নিরঞ্জনের পথে হেঁটে যায় জগদ্ধাত্রীর মৃন্ময়ী মূর্তিগুলি।