বউকে মিথ্যে বলার আগে প্রেমানন্দ মহারাজের এই কথাটা বার বার স্মরণ করুন
দুনিয়ায় প্রচুর মানুষ রয়েছেন, যাঁরা নানা পরিস্থিতি থেকে চট করে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য কথায় কথায় মিথ্যে বলেন। এমনই এক ব্যক্তি সম্প্রতি বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন। সেখানে হিন্দু আধ্যাত্মিক গুরু প্রেমানন্দ মহারাজজিকে জানান, তিনি খুব মিথ্যে কথা বলেন।

লোকে আমায় ভালোই বলে দিব্যি চলনসই, দোষের মধ্যে একটু নাকি মিথ্যে কথা কই… শঙ্খ ঘোষের ‘মিথ্যে কথা’ কবিতার এই লাইন গুলো যদি কেউ অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেন, তা হলে কী হবে? দুনিয়ায় প্রচুর মানুষ রয়েছেন, যাঁরা নানা পরিস্থিতি থেকে চট করে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য কথায় কথায় মিথ্যে বলেন। এমনই এক ব্যক্তি সম্প্রতি বৃন্দাবনে গিয়েছিলেন। সেখানে হিন্দু আধ্যাত্মিক গুরু প্রেমানন্দ মহারাজজিকে (Premananda Maharaj) জানান, তিনি খুব মিথ্যে কথা বলেন। তাই তাঁর স্ত্রী তাঁর উপর বিশ্বাস হারিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কী করা উচিত?
প্রেমানন্দ মহারাজজির কাছে এক ভক্ত বলেন, “অনেক সময় নানা সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য আমি মিথ্যে কথা বলি। আর সেই মিথ্যে কথা আমাকে আরও বড় সমস্যায় ফেলে দেয়। আমার এই স্বভাবের জন্য আমার স্ত্রী আমাকে আর বিশ্বাস করতে পারে না।” ওই ভক্তর এই কথা শুনে মহারাজজি বলেন, “হ্যাঁ আমাদের অনেক সময় মনে হয় যে মিথ্যে কথা বললে পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে যেতে পারব। কিন্তু সাময়িক সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে গেলেও সমস্যা পিছু ছাড়বে না।”
মিথ্যে কথা বলার অভ্যাস ছাড়তে চাইছেন ওই ব্যক্তি। তিনি প্রেমানন্দ মহারাজজিরকে জিজ্ঞাসা করেন এই স্বভাব কী করে ত্যাগ করব? উত্তরে মহারাজজি বলেন, “নিজের মনের ভাবনা থেকে এই অভ্যাস ছাড়তে হবে। অনেক মানুষ বিভিন্ন সময় নিজেকে চালাক মনে করে এমন অনেক মিথ্যা কথা বলে। মোবাইলেও অনেকে মিথ্যে কথা বলে। এটা ঠিক নয়। অনেকে এটা ভাবেন যে, একটা মিথ্যা কথা বলে হাজারটা সাফাই দিতে হল না। কিন্তু ওই মিথ্যা কথা আমাদের সত্যি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে একবার মিথ্যে কথা বলার প্রবণতা দেখা গেলে, তা মোটেও ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে আপনি সত্যি বললেও স্ত্রী মানতে চাইবে না। যারা বেশি মিথ্যা বলে, সেই তারাই যদি কোনও সময় সত্যি বলে, তারপরও সহজে কেউ বিশ্বাস করতে পারে না। মনে হতে থাকে মিথ্যা কথাই বলছে সেই ব্যক্তি।”
যাঁর কথায় কথায় মিথ্যা বলা স্বভাব, সেই ব্যক্তির হুট করে এই স্বভাব বদলে যেতে পারে না। এই প্রসঙ্গে প্রেমানন্দজি বলেন, “আমার মনে হয় মিথ্যে কথা বলা ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হবে। আজ থেকে সত্যবাদী হরিশচন্দ্র হব, বললেই তো আর হয় না। কারণ যে ব্যক্তি এতদিন মিথ্যা বলে পরিস্থিতি থেকে বেরিয়েছে, তার মুখে, মাথায় সেই সংক্রান্ত কথাই আসবে। তাই ধীরে ধীরে সত্যি বলতে হবে। যদি সত্যি বলে দেওয়া হয়, তা হলে ফাঁসি তো আর হবে না। কিন্তু আমাদের আচরণ ঠিক হয়ে যাবে। জীবন ঠিক হয়ে যাবে।”
সবশেষে ওই ভক্তকে প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, “স্ত্রীকে গিয়ে বলবেন আমি বৃন্দাবন থেকে ঘুরে এসেছি। এ বার হরিশচন্দ্রর মতো চাল চালব। মিথ্যা বলব না। তুমি আমার উপর বিশ্বাস করো। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশ্বাস না থাকলে আর জীবন কোন কাজের। ভাবুন আপনি যাই বলুন, সে যদি বিশ্বাস না করে, বলে এগুলো সব মিথ্যা কথা। তা হলে আর লাভ কীসের। আর কাউকে কখনও ঠকাবে না।”





