Lord Kuber: রাতারাতি কোটিপতি হতে চান? চোর থেকে সম্পদের দেবতা কীভাবে হলেন, জানলে চোখ উঠবে কপালে
Dhanteras 2023: হিন্দু শাস্ত্রমতে, সম্পদের দেবতা কুবের দেবের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। বাস্তুমতে, কুবেরদেবকে বাড়ির উত্তর দিকের অবস্থান বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে কুবেরদেবের দৃষ্টি যদি কোনও ব্যক্তির উপর পড়ে, তাহলে সেই ব্যক্তির জীবনে কখনও আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয় না। সেই ব্যক্তিকে জীবনে আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয় না।

ধনী হওয়ার ইচ্ছে প্রায় অধিকাংশের। স্বপ্নপূরণের চাহিদা মেটাতে তাই হিন্দুধর্মে বহু দেবতার আরাধনা করা নিয়ম রয়েছে। সনাতন হিন্দুশাস্ত্র মতে, সম্পদের দেবতা হিসেবে কুবেরকে পুজো করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে ধনতেরসের দিন সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য ধনকুবেরের আরাধনা করার রীতি রয়েছে। কথিত আছে, নিয়মিত কুবেরদেবের পুজো করা হলে ঘরে সমৃদ্ধি ও সুখ-শান্তি বজায় থাকে। আর্থিক সঙ্কটও কেটে যায় দ্রুত। সাধারণত, ধনসম্পত্তি ও সৌভীগ্যের প্রতীকও হলেন কুবেরদেব। কিন্তু এই কুবেরদেব আসলে কে? ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখলে আগে জানা উচিত ধনকুবেরের আসল পরিচয় কী? একজন সাধারণ মানুষ থেকে সম্পদের দেবতা কীভাবে হলেন, তার আসল রহস্যটা সকলেরই জানা উচিত।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, সম্পদের দেবতা কুবের দেবের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। বাস্তুমতে, কুবেরদেবকে বাড়ির উত্তর দিকের অবস্থান বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে কুবেরদেবের দৃষ্টি যদি কোনও ব্যক্তির উপর পড়ে, তাহলে সেই ব্যক্তির জীবনে কখনও আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয় না। সেই ব্যক্তিকে জীবনে আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয় না। অগাধ টাকা পয়সার পাহাড়ে বসে থাকেন সেই ব্যক্তি। ধনতেরসের দিন ধনকুবেরের পুজো করা রেওয়াজ রয়েছে। মনে করা হয়, কুবেরদেবের পুজো করলে যে কোনও ব্যক্তির ভাগ্য বদলে যেতে পারে। কেন কুবের দেবকে সম্পদের ঈশ্বর তকমা দেওয়া হয়েছে, তা অধিকাংশই জানেন না।
সম্পদের দেবতা কুবের আসলে কে?
রামায়ণের কাহিনি অনুসারে, সম্পদের দেবতা কুবেরকে রাবণের সৎ ভাই বলে মনে করা হয়। কুবেরের পিতা ছিলেন অসুররাজ বিশ্রব। তিনি রাজকন্যা কৈকেসীকেও বিয়ে করেছিলেন। রাবণ, কুম্ভকর্ণ, বিভীষণ ও শূপর্ণক হলেন তাঁদের সন্তান। কঠোর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা কুবেরকে তিনটি বর প্রদান করেন। বিশ্বের সম্পদ বা নিধি, দেবতাদের সমান সম্মান ও পুষ্পকরথ প্রদান করেছিলেন। এই বর পাওয়ার পর লঙ্কারাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। তখন কুবের গন্ধমাধব পর্বতে বসতি স্থাপন করতে শুরু করেন। কৈলাস পর্বতের কাছেই তিনি বসবাস শুরু করে। অনেকেই বলেন, কৈলাস হল কুবেরের বাসস্থান। অন্যদিকে,রাবণের মৃত্যুর পর কুবেরকে রাক্ষসদের নতুন সম্রাট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কুবের তখন লঙ্কাকে স্বর্ণনগরীতে পরিণত করেন। আধুনিক শ্রীলঙ্কা কুবেরের হাত ধরেই তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়। শুধু তাই নয়, কথিত আছে যে কুবেরদেব বাড়ির উত্তর দিকে থাকেন। ভগবান শিবের একজন মহান ভক্ত। নয়টি ভান্ডারের দেবতা বলে মনে করা হয়। কুবের দেবকে ধন-সম্পদের দেবতা বানানোর পেছনে রয়েছে আরও বহু পৌরাণিক কাহিনি। তবে স্কন্দ পুরাণে লেখা রয়েছে শাস্ত্রে বহু কাহিনী প্রচলিত আছে। বিশ্বাস করা হয় যে সে তার পূর্বজন্মে চোর ছিল।
স্কন্দপুরাণ কী বলছে?
স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, কুবেরদেব পূর্বজন্মে একজন ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। নাম ছিল গুণনিধি। গুণের নাম থাকলেও তখন তাঁর কোনও গুণ ছিল না। কারণ চুরির মতো মহাপাপ কাজে তিনি লিপ্ত হয়েছিলেন। এই পাপের কথা তাঁর ব্রাহ্মণ বাবা জানতে পেরে তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। গৃহহীন হওয়ার পর, এক শিব মন্দিরে থাকতে শুরু করেন। সেখানে নিজের কীর্তির ছাপ রাখতে ভোলেননি তিনি। চুরি করেন ওই শিবমন্দিরেও। সেখানে প্রসাদ চুরির করার প্ল্যান করেন। রাতে মন্দিরের পুরোহিত ঘুমিয়ে পড়ার পর তিনি মন্দিরে চুরি করতে প্রবেশ করেন। পুরোহিতের হাত থেকে বাঁচতে প্রদীপের উপর একটি কাপড় বিছিয়ে দেন। ঘন কালো অন্ধকারে চুরি করতে যাবেন,তখনই পুরোহিতের হাতে ধরা পড়ে যান। এমনকি ধাক্কাধাক্কিতে গুণনিধির মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর যমদূত যখন গুণনিধিকে ইহলোকে যাত্রা করছিলেন, তখন অন্যদিকে শিবের দূতরাও যাত্রা করছিলেন। শিবের দূতরা গুণনিধিকে ভোলেবাবার কাছে নিয়ে হাজির হলে শিব তাঁকে ক্ষমা করে দেন। তিনি মনে করেছিলেন, মহাদিদেবকে বাঁচাতেই তিনি প্রদীপের উপর কাপড় বিছিয়ে দিয়েছিলেন। এই কাজের জন্য তুষ্ট হয়ে ভোলেবাবা গুণনিধিকে কুবের নাম দেন। শুধু তাই নয়, দেবতাদের সম্পদের কোষাধ্যক্ষ হয়েও তিনি পূজিত হন।
