Papmochani Ekadashi: জীবনের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি দেয় এই ব্রত, জেনে নিন এর মাহাত্ম্য…
Papmochani Ekadashi 2022: বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এটিই শেষ একাদশী। এই একাদশী নিষ্ঠা ভরে পালন করলে অনেক রকম সমস্যা, রোগের হাত থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব। বলা হয় এই একাদশী পালন করলে স্বর্গলাভের সুযোগ পাওয়া যায়
ফাগ্লুনের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে পাপমোচনী একাদশীর (Papmochani Ekadashi) উল্লেখ রয়েছে শাস্ত্রে। এই দিন অনেকেই একাদশীর উপবাস রাখেন। শাস্ত্রমতে, সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, যদি নিষ্ঠাভরে পালন করা হয় এই একাদশী ব্রত। বছরের এটাই হল শেষ একাদশী। এরপর শুরু হয় নতুন বিক্রমী সংবত। হোলিকা দহন ও চৈত্র নবরাত্রির মধ্যে পড়ে এই একাদশী। পাপমোচনি একাদশী যখন বৃহস্পতিবারে পড়ে, তখন তার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এবং তখন এই তিথিকে গুরুভার একাদশীও বলা হয়। এই একাদশীর উপবাস অত্যন্ত শুভ এবং ফলদায়ক। নারায়ণের আর্শীবাদ পেতেই অনেকে এই একাদশীর উপবাস রাখেন।
এই দিন ভোরবেলা অর্থাৎ সূর্যোদয়ের মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে কুশ ও তিলযুক্ত জলে স্না করার বিধি রয়েছে। আগে অনেকেই পুজো পাঠ না করা অবধি জল খেতেন না। কিন্তু তা আজকের দিনে সম্ভব নয় এবং স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকারক। যে কারণে দুধ, বাদাম, বিভিন্ন ফল, ফলাহার এসব খেয়েই থাকার রীতি রয়েছে। বলা হয় এদিন যে কোনও খাদ্যশস্য থেকে দূরে থাকতে। পরের দিন সকালে বিষ্ণুর পুজো করে এই উপবাস সাঙ্গ হয়। এই পাপমোতনী একাদশীর দিন ‘শ্রী বিষ্ণু সহস্রনাম’পাঠ করার রীতি রয়েছে।
এদিন বাড়ির নারায়ণকে অবশ্যই তুলসী পাতা, ফুল, ফল, প্রদীপ এবং ধূপকাঠি দেখিয়ে পুজো দেবেন। সন্ধ্যেতে শীতল ভোগ দিতে পারলে ভাল। এই দিনের সন্ধ্যারতির কিন্তু বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যে সব জায়গায় মন্দিরে নারায়নের বিগ্রহ রয়েছে সেই সব জায়গায় এদিন বিশেষ পুজোপাঠের আয়োজন করা হয়। এই পাপমোচনী একাদশরী নেপথ্য গল্পটিও বেশ অন্যরকম।
প্রাচীনকালে চৈত্ররথ নামে একটি বন ছিল। অপ্সরারা সেখানে নপুংসকদের সঙ্গে থাকতেন। এই বনে মেধবী নামে এক ঋষিও তপস্যায় মগ্ন থাকতেন। তিনি শিবের ভক্ত ছিলেন। একদিন মঞ্জুঘোষা নামের এক অপ্সরা তাকে মোহিত করে। মেধবী তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন। ঋষির সেই সময় দিন-রাত্রির কোন জ্ঞান ছিল না বলেই তাঁর কামভাব ছিল পূর্ণ এবং তাঁরা দুজন একসঙ্গে অনেকখানি সময় কাটিয়েছিলেন। মঞ্জুঘোষ একদিন ঋষিকে বললেন, ‘হে ঋষি, এখন আপনি আমাকে স্বর্গে যাওয়ার অনুমতি দিন’। অপ্সরার কথা শুনে ঋষি সময় বুঝে গম্ভীরভাবে চিন্তা করতে লাগলেন। যখন তিনি জানতে পারলেন যে পঁচাত্তর বছর নিজেকে ভোগ করতে করতে কেটে গেছে, তখন তিনি অপ্সরাকে কালের রূপ বোঝাতে শুরু করলেন। ভোগ-বিলাসে এত সময় নষ্ট হয়েছে দেখে ঋষি রুদ্ধ হন। তখন তিনি অপ্সরাকে অভিশাপ দেন। পরে অবশ্য সেই পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার বিধানও দেন। তখনই তিনি বলেন পাপমোচনী একাদশীর উপবাস করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায় এবং স্বর্গলাভ হয়। সেই থেকেই এই একাদশী পালন শুরু হয়।