Ratha Yatra 2024: ৫৪ বছর পর রথযাত্রায় বিশেষ যোগ! দুদিনের রথ টানায় শ্রীক্ষেত্রে বদলে যাচ্ছে অনেক নিয়ম
Hindu Festival: শহস্রধারা স্নানের পর বেজায় অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথদেব। রথযাত্রার আগে টানা ১৫দিন ধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন গণদেতা। এই ১৫দিন ধরে পুরীর মন্দিরের নিভৃতে চলে জগন্নাথদেবের সেবা-শুশ্রুষা। আনা হয়ে রাজবৈদ্যদের। তাঁদের সেবা ও চিকিত্সায় সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। চিকিত্সার পর নবযৌবন ফিরে পান। করা হয় নেত্রোত্সবও। টানা ১৫দিন জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের নিভৃতবাসকে আনসারা বলা হয়ে থাকে। এই রীতি পালিত হয় রথযাত্রার ঠিক আগের দিন।
সারা বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। পুরীর রথযাত্রা উত্সব নিয়ে দেশের সকলেই মুখিয়ে রয়েছেন। ক্যালেন্ডার মতে, আগামীকাল রথযাত্রা। তবে তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় প্রায় নমাস আগে থেকেই। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শুরু হয়ে যায় জগন্নাথদেবের রথ নির্মাণ। প্রতি বছরের মতো এবছরও আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রার উত্সব পালিত হয়। সাতদিনের জন্য গুণ্ডিচা মন্দির তথা মাসির বাড়িতে ঘুরতে যান তিন ভাই-বোন।
জ্যোতিষশাস্ত্র ও ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এ বছর আষাঢ় মাসের কৃষ্ণ পক্ষ কমে যাচ্ছে। তাই একই সঙ্গে রথযাত্রা ও নেত্রোত্সব, নবযৌবন দর্শন পালিত হবে এবছর। ১৯৭১সালের সময়সূচি ও রীতি মেনে পালিত হল গোটা রথযাত্রার উত্সব। আগামী ৭ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে রথযাত্রা। এবছর রথযাত্রা উত্সবের নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, এবছর রথ টানার শুভ সময় ও পুজোর সময় শুরু হচ্ছে ৬ জুলাই থেকে। ৬ জুলাই অর্থাৎ ২১ আষাঢ়ে শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি শুরু হচ্ছে। ৬ জুলাই, শনিবার ভোররাত ৪টে ৪ মিনিটে তিথি শুরু হচ্ছে। আর ৭ জুলাই অর্থাৎ ২২ আষাঢ়ে শেষ হচ্ছে শুদ্ধ সময়। রবিবার ভোররাত ৪টে ৩৩ মিনিটে শেষ হবে এই তিথি।
পঞ্জিকা অনুসারে, রথযাত্রার দিনে শুরু হচ্ছে চন্দ্র দর্শন, রবি পুষ্য যোগ ও সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ। বিরল এই বিশেষ শুভ যোগে পালিত হবে রথযাত্রা উত্সবও। রথযাত্রার দিনে ৫৩ বছর পর এই মহাযোগ ঘটতে চলেছে। বদলাতে চলেছে জগন্নাথদেবের রথযাত্রার আয়োজন ও রীতি রেওয়াজের বেশ কিছু নিয়ম। রথযাত্রা উত্সব হল হিন্দুধর্মের অত্যন্ত পবিত্র একটি উত্সব। হিন্দু-অহিন্দু, জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে কয়েক লক্ষ মানুষ রথ টানতে বা রথের রশি স্পর্শ করতে চেষ্টা করেন।
কথিত আছে, রথের দড়ি জীবনে একবার স্পর্শ করলে পুনর্জন্ম থেকে ও গোটা জীবনের পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। স্নানযাত্রার পরের দিন থেকেই জগন্নাথধামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহস্রধারা স্নানের পর বেজায় অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথদেব। রথযাত্রার আগে টানা ১৫দিন ধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন গণদেতা। এই ১৫দিন ধরে পুরীর মন্দিরের নিভৃতে চলে জগন্নাথদেবের সেবা-শুশ্রুষা। আনা হয়ে রাজবৈদ্যদের। তাঁদের সেবা ও চিকিত্সায় সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। চিকিত্সার পর নবযৌবন ফিরে পান। করা হয় নেত্রোত্সবও। টানা ১৫দিন জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের নিভৃতবাসকে আনসারা বলা হয়ে থাকে। এই রীতি পালিত হয় রথযাত্রার ঠিক আগের দিন।
এই প্রাচীন আয়ুর্বেদিক প্রথা মেনে চলা আসছে দ্বাদশ শতক ধরে। জগন্নাথদেবের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হয় একপ্রকার ভেষজ তেল বা মহৌষধি। মধু, অশ্বগন্ধা, কর্পূর, নানা রকম ফুল, অন্যান্য জড়িবুটি উপাদান দিয়ে এই বিশেষ ওষুধ তৈরি করা হয়। এই মহৌষধি বানানোর পদ্ধতি জানেন একমাত্র বেশ কিছু নির্দিষ্ট রাজবৈদ্যরা। প্রায় এক বছরের বেশি পুরনো এই প্রথা প্রতিবছর পালিত হয়।