Vishwakarma Puja 2023: অরন্ধনে দেবী মনসাকে কেন পুজো করা হয়? কারণটা জানেন না ৯০ শতাংশ
Hindu Festival: কথিত আছে, মনসা দেবী হলেন বাঙালির এক জনপ্রিয় দেবতা। লৌকিক দেবদেবীর মধ্য অন্যতম। ভাদ্রের খামখেয়ালি প্রবল বৃষ্টি ও প্যাচপ্যাচে গরম থেকে শিরশিরে ঠান্ডার বাতাবরণ নিয়ে আসে আশ্বিন। বর্ষার সময় সাপেদের উপদ্রব শুরু হয়। তারপর শীতকাল আসতেই শীতঘুমে চলে যায় তারা। কিন্তু এই মাঝামাঝি সময় সাপেদের আনাগোনায় গ্রামাঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে থাকে।
বারো মাসে তেরো পার্বন,বাঙালির হালখাতায় এই প্রবাদ জ্বলজ্বল করে, এখনও। রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। কিন্তু আজ থেকেই বাঙালির ঘরে ঘরে আজ হেঁসেলে চলছে বিরাট আয়োজন। রান্না পুজো। গ্রামবাংলা এই পুজো অত্যন্ত পরিচিত ও রেওয়াজ রয়েছে। বিশেষত রাঢ় বাংলার বিস্তৃণ এলাকায় বাঙালির ঘরে ঘরে এই উত্সব পালিত হয়। বহু পার্বণের মধ্যে এই অরন্ধন উত্সব অন্যতম। ভাদ্র মাসের শেষ ও আশ্বিন মাসের প্রথম দিনেই পালিত হয় এই অরন্ধন পুজো। এই উত্সবের প্রধান উদ্দেশ্য হল, ভাদ্র মাসের রান্না আশ্বিন মাসে খাওয়া-দাওয়া। প্রথা নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণত মহিলাদের হাত ধরেই এই রান্না পুজোর উত্সব পালন করা হয়। অনেকে এই রান্না পুজোকে ইচ্ছে রান্না বা বুড়ো রান্না বলে থাকেন। আবার আটাশে রান্না বা ধরাটে রান্না বলেও পরিচিত কয়েকটি জায়গায়।
বিশ্বকর্মা পুজোর প্রস্তুতির পাশাপাশি বাঙালির হেঁসেলে আজ শুরু হয়েছে রান্না পুজোর আয়োজন। অরন্ধনের অর্থ হল, রন্ধন না করা, রান্না করা নিষেধ। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন তাই রান্না করা হয় না। তাই তার আগের দিন বহু পদের রান্না করা হয়। শুধু তাই নয়, এদিন মনসা পুজো করারও রীতি রয়েছে। আসলে রান্না পুজো মানেই হল মনসা পুজো। এর কারণ উনুনের গর্তকে দেবী মনসার প্রতীক বলে মনে করা হয়। বছরের প্রতিটি দিন এই উনুন বা আভেনেই রান্না করা হয়। তাই উনুনকে উপাসনা করতে এই পুজোর আয়োজন। মনসার পুজো হিসেবে এই প্রচলিত উত্সব পরম্পরা অনুযায়ী পালন করা হয়ে আসছে।
কথিত আছে, মনসা দেবী হলেন বাঙালির এক জনপ্রিয় দেবতা। লৌকিক দেবদেবীর মধ্য অন্যতম। ভাদ্রের খামখেয়ালি প্রবল বৃষ্টি ও প্যাচপ্যাচে গরম কাটিয়ে শিরশিরে ঠান্ডার বাতাবরণ নিয়ে আসে আশ্বিন। বর্ষার সময় সাপেদের উপদ্রব শুরু হয়। তারপর শীতকাল আসতেই শীতঘুমে চলে যায় তারা। কিন্তু এই মাঝামাঝি সময় সাপেদের আনাগোনায় গ্রামাঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে থাকে। এই সময় দেবী মনসাকে সন্তুষ্ট রাখতে ও সংসারে দেবীর কৃপা বজায় রাখতে এদিন বাড়িতে উনুনে আর রান্না করা হয় না। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন তাই মাছ, ডাল, সাত রকমের ভাজাভুজি রান্না করে রাখা হয়। তার পরের দিন আর বাড়িতে কোনও টাটকা রান্না করার নিয়ম নেই।
রান্না পুজোর শুরু করার আগে দক্ষিণবঙ্গের বাড়িতে বাড়িতে মাটির উনুন জ্বালানোর নিয়ম রয়েছে। তাই আগে থেকে গোবর ডল দিয়ে পকিষ্কার করে তার উপর আলপনা দিয়ে মনসা পাতা বা শালুক পাতা বসিয়ে দিয়ে ঘট স্থাপন করা হয়। রান্না পুজোয় মুগের বা মুসুর ডাল, পান্তা ভাত, চালতার ডালও হয়, চালতা দিয়ে টক, ইলিশ মাছের পদ, শাক, নানা রকমের ভাজাভুজি, নারকেল ও কুমড়ো ভাজা রান্না করা হয়। এই জনপ্রিয় পার্বণের জন্য বাড়িতে উপস্থিত থাকেন আত্মীয়-স্বজনরা। ভাদ্র সংক্রান্তির দিন দেবী মনসাকে রান্না করা খাবার নিবেদন করে তারপর বাড়ির সদস্যরা খাবার খান। কথিত আছে, ভাদ্রের রান্না আশ্বিনে খাওয়ার রীতি রয়েছে এদিন।