CWG 2022: কমনওয়েলথে ৭/৭ অজিদের, লজ্জায় ডুবল ভারতের হকি!

Commonwealth games 2022: বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসের হকি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে আবার হেরে বসল মনপ্রীত সিংয়ের টিম। কিন্তু যে টিম সারা টুর্নামেন্ট জুড়ে চমৎকার পারফর্ম করেছে, সেই তাদেরই এমন লজ্জার হার মেনে নিতে পারছে না ভারতের হকিমহল।

CWG 2022: কমনওয়েলথে ৭/৭ অজিদের, লজ্জায় ডুবল ভারতের হকি!
Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 08, 2022 | 6:51 PM

বার্মিংহ্যাম: অস্ট্রেলিয়ার একচেটিয়া সাফল্যে চিড় ধরানো গেল না। ঠিক যেমন পাল্টানো গেল না ভারতীয় হকি টিমের পারফরম্যান্সের খতিয়ানও। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফাইনাল মানেই যেন হারের গল্পকথা। গোলের মালা পরা। ২০১০ সালে দিল্লি কমনওয়েলথ গেমস (Commonwealth Games 2022) থেকে শুরু হয়েছিল যা। ১২ বছর পরও সেই ছবি বদলাল না। বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসের হকি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে আবার হেরে বসল মনপ্রীত সিংয়ের টিম। কিন্তু যে টিম সারা টুর্নামেন্ট জুড়ে চমৎকার পারফর্ম করেছে, সেই তাদেরই এমন লজ্জার হার মেনে নিতে পারছে না ভারতের হকিমহল। টোকিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পেয়ে হকির (Hockey) পুনরুত্থান হয়েছিল। কমনওয়েলথ গেমসের ফাইনালে হার খানিকটা হলেও পিছিয়ে দিল শ্রীজেশ, হরমনপ্রীতদের।

এতদিন কমনওয়েলথ গেমসে লজ্জার হার ছিল ২০১০ সালে। সে বার ঘরের মাঠে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮ গোল হজম করেছিল ভারত। তার আগে, ১৯৯৮ সালে গ্রুপ স্টেজে ৫-২ হেরেছিল ভারতীয় হকি টিম। ২০১৪ সালে গ্লাসগো গেমসের ফাইনালে ভারত হেরেছিল ৪-০। এ বার সেটাই দাঁড়াল ০-৭। গেমসে ভারতের সোনার জোয়ার নিয়ে চলছে চর্চা। তার মধ্যেই ২০১০ সালের লজ্জাকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলল হকি টিম। একই সঙ্গে অজিদের হকি প্রাধান্যে দাঁত ফোটাতে পারলেন না মনপ্রীতরা। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার কমনওয়েলথ গেমসে হকি জুড়েছিল। সেই মালয়েশিয়া গেমস থেকে ধরলে, অস্ট্রেলিয়া বরাবর সোনা নিয়েই ফিরেছে। এ বারও তাই ঘটল। টানা সপ্তমবার কমনওয়েলথ গেমসের হকিতে সোনা জয় অজিদের।

ম্যাচের ফলাফল অস্ট্রেলিয়া-৭ : ভারত-০

প্রথম দুটো কোয়ার্টারেই সোনার ফয়সালা হয়ে গিয়েছিল। প্রথম কোয়ার্টারে জোড়া গোল খেয়ে গিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আবার তিনটে গোল হজম করতে হয়। পরের দুটো কোয়ার্টারেও আরও দুই গোল। তিনকাঠির তলায় শ্রীজেশের মতো অভিজ্ঞ কিপার না থাকলে লজ্জার মাত্রা আরও বাড়ত। তিনি একাই প্রায় চারটে গোল সেভ করেন। না হলে স্কোরলাইন ০-১২ বা ০-১১ হতে পারত। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শেষ দিকে আবার কাঁধে চোট নিয়ে বেরিয়ে যান ক্যাপ্টেন মনপ্রীত সিং। আগের ম্যাচে চোট পাওয়ায় ফাইনালে খেলতে পারেননি বিবেক সাগর প্রসাদ। মনপ্রীতের মতো সিনিয়র মাঠে থাকলে হয়তো লজ্জা কিছুটা কমত।

কেন পারল না মনপ্রীত সিংয়ের ভারত?

এক, প্রথম কোয়ার্টারেই ৩টে পি-সি পেয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। অজিদের ডি-র মধ্যে বারবার ঢুকতে দিলে যে কোনও সময় গোল তুলে নিতে পারে। মনপ্রীতরা ভালো করেই জানতেন। ঘটনা হল, তা সত্ত্বেও অজিদের ডি-র বাইরে আটকানো যায়নি।

দুই, ভারতীয় প্লেয়াররা বল পেলেই দু’জন অজি প্লেয়ার সবসময় উঠে এসেছেন পিছন থেকে, যাতে বল দখলে নিতে পারেন। সেই সঙ্গে ভারতের সাপ্লাই লাইন কেটে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাঁরা। ভারতের তরফে সেই চেষ্টা দেখা যায়নি।

তিন, ভারতীয় ফরোয়ার্ডরা সে ভাবে সাপোর্ট পাননি। বিপক্ষের বক্সের ধারেকাছে পাস না মেলায় কার্যকারীতা হারিয়েছিলেন তাঁরা। বাধ্য হয়েছিলেন নিজেদের অর্ধে নেমে আসতে। ফলে প্রথম দুটো অর্ধে সে ভাবে জ্বলেই উঠতে দেখা যায়নি ভারতীয়দের।

চার, কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়ে দ্রুত নামতে পারছিলেন না ভারতীয় ডিফেন্ডাররা। দ্বিতীয় গোলটা সেই কারণেই হল।

পাঁচ, অস্ট্রেলিয়ার মতো গতিশীল টিমকে হারানোর জন্য পাল্টা গতি দরকার ছিল। সেই সঙ্গে দরকার দুরন্ত স্ট্যাটেজি। যার কোনওটাই সে ভাবে তুলে ধরতে পারেননি মনপ্রীতরা।

ছয়, চাপে পড়লে ভারতীয় টিমের ভেঙে পড়ার বিখ্যাৎ ইতিহাস এ বারও বদলানো গেল না। বিশেষ করে ডিফেন্স বিপক্ষ টিমের বারবার হানা নিতে পারল না।