নয়াদিল্লি: শরথকমলের কামাল… এটা বললে কিছু ভুল বলা হবে না। বয়স তাঁর চল্লিশ। কিন্তু তাঁকে দেখে তা বোঝার জো নেই। বয়স যে শুধু মাত্র একটা সংখ্যা তা পুরোদস্তুর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন ভারতের তারকা প্যাডলার অচিন্ত্য শরথকমল (Achanta Sharath Kamal)। বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমস (Birmingham Commonwealth Games) থেকে ৪টি পদক নিয়ে দেশে ফিরেছেন শরথকমল। যার মধ্যে রয়েছে তিনটি সোনা ও ১টি রুপো। চল্লিশের শরথের পারফরম্যান্স দেখলে মনে হবে এ তো বছর কুড়ির আগের শরথ। যে বয়সে একাধিক ক্রীড়াবিদরা অবসর নিয়ে নেন, সেই বয়সেই সকলকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন শরথকমল।
৪০ বছর বয়সে এই সাফল্য পাওয়া নিয়ে শরথ বলেন, “আমার যে ৪০ বছর বয়স, মানুষ সেটায় বেশি জোর দিচ্ছে। আমি জানি না লোকে আমাকে কেন বলে প্রবীণ যোদ্ধা, বুড়ো ঘোড়া। কোর্টে আমার দিকে দেখলে কি আপনি ৪০ বছর বয়সী একজনকে খেলতে দেখতে পান না? এমন একজনকে দেখতে পাবেন যে পাগলের মতো চারপাশে ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং সাহস দেখিয়ে চিৎকার করছে। আমি খুশি যে আমি আমার জীবনের এই পর্যায়ে এভাবে খেলতে পারি এবং এখনও সোনা জিততে পারি।”
অলিম্পিক ও কমনওয়েলথের জন্য নিজেকে চ্যালেঞ্জ দেন শরথকমল। তিনি বলেন, “প্রতি দুই বছর পর পর অলিম্পিক ও কমনওয়েলথ গেমসের একটা নতুন চ্যালেঞ্জ আমার সামনে থাকে। কমনওয়েলথে আমি চেষ্টা করছিলাম কীভাবে খেতাব ফিরে পাওয়া যায়। যা আমি এ বার করতে পেরেছি। ছোট ছোট চ্যালেঞ্জগুলোও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় খেতাব আমি ১০ বার জিততেই পারি। তবে ১১ বারের সময় না জিতলে আমার মনে হবে কিছু একটা পেলাম না।”
অলিম্পিকের পদকের অপেক্ষায় রয়েছেন শরথ। তাই তাঁর পাখির চোখ এ বার প্যারিস অলিম্পিক। শরথ জানান, গ্রুপের মধ্যে সত্যিই একটা ভালো প্রতিযোগিতার পরিবেশ রয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, তিনি বরাবর নিজের সঙ্গেই লড়েন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি অন্য কাউকে অনুকরণ করার চেষ্টা করার চেয়ে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য নিজের সঙ্গে লড়াই করা সহজ কাজ। আমার কাছে অলিম্পিকের পদক নেই। তাই সেটাই আমার কাছে এখন মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
৪০ বছরের শরথ অনায়াসেই স্বীকার করে নেন, এটাই তাঁর কেরিয়ারের জীবনের সেরা সময়। তিনি বলেন, “নিঃসন্দেহে আমি বর্তমানে কেরিয়ারের সেরা সময় কাটাচ্ছি। ২০ বছর বয়সে আমি জানতাম আমাকে ভালো পারফর্ম করতে হবে। আমি মনে করি নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। তবেই বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে প্রয়োজন, খেলাধূলার জন্য কী প্রয়োজন। অভিজ্ঞতা ধীরে ধীরে আসবেই। ২০০৪-২০১২ সালের মধ্যে আমি জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করতাম। আমি যখন ইউরোপে গিয়েছিলাম এবং পেশাদারভাবে খেলা শুরু করেছিলামস তখন আমি অনেক কিছু শিখেছি। সেই অভিজ্ঞতা আমার কাজে লেগেছে। এ ছাড়া শান্তির জন্য আমি বরাবর এপিজে আব্দুল কালাম আজাদ পড়ি। যা আমার মনকে শান্তি দেয় কিংবা কোনও সমস্যায় পড়লে তার সমাধান করতে সাহায্য করে।”