CWG 2022: বার্মিংহ্যামে এ বার সোনার ফসল বাংলার অচিন্ত্যর, ভারতের তৃতীয়

বাংলার ছেলের হাত ধরে কমনওয়েলথ গেমস থেকে এল তৃতীয় সোনা।

CWG 2022: বার্মিংহ্যামে এ বার সোনার ফসল বাংলার অচিন্ত্যর, ভারতের তৃতীয়
বার্মিংহ্যামে এ বার সোনার ফসল বাংলার অচিন্ত্যর, ভারতের তৃতীয়Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 01, 2022 | 11:58 AM

বার্মিংহ্যাম: কমনওয়েলথ গেমস (Birmingham Commonwealth Games 2022) থেকে ফের সোনা এল ভারতের ঝুলিতে। ভারোত্তোলনে পুরুষদের ৭৩ কেজি বিভাগের ফাইনালে সোনা জিতলেন বাংলার ছেলে অচিন্ত্য শিউলি (Achinta Sheuli)। মোট ৩১৩ কেজি ওজন তুলে ভারোত্তোলন থেকে তৃতীয় সোনা পেলেন ২০ বছরের অচিন্ত্য। স্ন্যাচ ইভেন্টে ভারতের ভারোত্তোলক অচিন্ত্য শিউলি প্রথম লক্ষ্য নিয়েছিলেন ১৩৭ কেজি। যা তিনি সহজেই তোলেন। দ্বিতীয় চেষ্টায় তিনি তোলেন ১৪০ কেজি। এরপর তৃতীয় চেষ্টায় লক্ষ্য ছিল ১৪৩ কেজি। সেটাও  সহজেই তুলে নেন অচিন্ত্য।

এরপর ক্লিন অ্যান্ড জার্কে প্রথম প্রচেষ্টায় তিনি তোলেন ১৬৬ কেজি। দ্বিতীয় চেষ্টায় ১৭০ কেজির লক্ষ্য ছিল, তবে তা পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু হাল ছাড়েননি। তৃতীয় বারও ১৭০ কেজিই চেষ্টা করেন। এবং সফল হন। স্ন্যাচে ১৪৩ কেজি তোলার পর ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৭০ কেজি তুলে সব মিলিয়ে ৩১৩ কেজি তুলে নিজে সোনা জিতে নিলেন অচিন্ত্য।

যিনি খুব সুন্দর সেলাই করতে পারেন, ৩১৩ কেজি ওজনও তুলতে পারেন! কথাটা কেমন শোনাচ্ছে তাই না! একজন ভারোত্তোলকের হাতের তালু যেমন হয়, অচিন্ত্যরও তেমনই। কিন্তু ছোটবেলার কথা জানলে…। বাবা রিক্সা চালাতেন। সংসারের খরচ তাতে জুটত না। পরিবারের বাকিদেরও কাজ করতে হত। শাড়িতে এমব্রয়ডারি, জরির কাজ। অচিন্ত্যর বয়স তখন ৮ বছর। বাবার মৃত্যু হয়। বাড়িতে একটা পোলট্রি ফার্ম ছিল। শেয়ালের হানায় সেটিও নষ্ট হয়। অচিন্ত্যও সেলাইয়ের কাজ শিখে নেন।

হাওড়ার দেওলপুর গ্রামের অচিন্ত্য ১২ বছর বয়সে স্থানীয় জিমে যোগ দেন। তবে সেলাইয়ের কাজ ছেড়ে নয়। তাঁর দাদা ওয়েটলিফটিং করতেন। পরিবার সামলাতে নিজের ইচ্ছের জলাঞ্জলি দিতে হয়। অচিন্ত্যর দাদাও সেলাইয়ের কাজ করেন। তাঁর কাছেই কাজ শেখেন অচিন্ত্যও। তা হলে ভারোত্তোলনের জন্য সময় বের করতে পারতেন? কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম সোনা জয়ের পর সে কথাই বলেছিলেন অচিন্ত্য। জিমে যোগ দেওয়ার পর জীবনটা খুবই কঠিন ছিল। ট্রেনিং, স্কুল, সঙ্গে সেলাইয়ের কাজ। তিন বেলার খাবার জোটানো কঠিন ছিল। বাবা বেঁচে থাকাকালীন, মাকে কোনও কাজ করতে হয়নি। বাবার মৃত্যুর পর মাকেও সেলাইয়ের কাজ করতে হয়।

অচিন্ত্য এবং দাদাও একই কাজ করতে বাধ্য হন। দাদা ভারোত্তোলনের ট্রেনিং নিতেন। অচিন্ত্যর সঙ্গে ভারোত্তোলনের পরিচয়ও হঠাৎ করেই। গ্রামে বাড়ির কাছেই ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন। ভোকাট্টা একটা ঘুরি কাছেই জিমের সামনে পড়ে। সেখানেই নজরে পড়ে অনেকেই জিম করছেন। তাঁর দাদাও রয়েছেন। সেই থেকেই ভারোত্তোলনে প্রেম, কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে দু বার সোনার পদক এবং এবার বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে রেকর্ড গড়ে সোনার পদক।