মনে পড়ে বল বিকৃতি কান্ডের পর স্টিভ স্মিথের পরিস্থিতি? দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়েছিলেন চোখের জলে। বিমানবন্দরে তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করা হয় যেন কোনও আসামী। কেরিয়ার হয়তো সেখানেই শেষ…। তৎকালীন অধিনায়ক, ক্রমশ সেরা ব্যাটার হওয়ার পথে…এমন সময় বড় ধাক্কা। এক বছরের জন্য নির্বাসিত করল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। বল বিকৃতি যিনি করেছিলেন, সেই ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টের পাশাপাশি সহ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকেও নির্বাসিত করা হয়। সেই স্টিভ স্মিথ নামছেন শততম টেস্ট খেলতে। যেন পুনর্জন্ম। শততম টেস্টের আগে স্টিভ স্মিথকে নিয়ে TV9Bangla Sports-এর এই বিশেষ প্রতিবেদনে।
বল বিকৃতি কান্ডের পর দেশে ফিরেই সাংবাদিক সম্মেলনে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। একটা বছর অপেক্ষায় থেকেছেন ব্যাগি গ্রিন ফেরৎ পাওয়ার। কেরিয়ার নিয়ে আশঙ্কা ছিল। আদৌ দেশের হয়ে আবারও খেলা হবে তো! প্রস্তুতি চালিয়ে নিজের মতোই। সেখানেও প্রশ্ন থাকে, যদি দলে ফেরেনও, সতীর্থরা তাঁকে মেনে নিতে পারবেন? স্টিভ স্মিথের যখন জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন হয়, অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। স্মিথকে নিয়ে দলের বাকিদের বোঝান। ভুল মানুষেরই হয়, আর সে যখন ভুলটা স্বীকার করে, শাস্তির পর ঘুরে দাঁড়াতে চায়, দ্বিতীয় একটা সুযোগ প্রাপ্য। স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারদের আগের মতোই দলে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
গত বার ইংল্যান্ডে হয়েছে ওডিআই বিশ্বকাপ। ২০১৯ সালের সেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড সমর্থকরা ‘প্রতারক’ বলে স্বাগত জানান স্মিথকে। ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেও এমন পরিস্থিতি হওয়ায় বিরাট কোহলি গ্যালারির দিকে ইঙ্গিত করেন, গালি নয়, তালি দিন। সে বছর অ্যাসেজ সিরিজ, ইংল্যান্ডের মাঠেই। প্রথম ম্যাচে দু-ইনিংসেই সেঞ্চুরি। শেষ ম্যাচে স্টিভ স্মিথ যখন আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন, গ্যালারি স্ট্যান্ডিং অভেশন দিয়েছিল স্টিভ স্মিথকে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হোসেন ধারাভাষ্যে বলেছিলেন, ‘রিডেমশন ইজ ওয়েল অ্যান্ড ট্রুলি কমপ্লিট’। হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করেছিলেন স্টিভ স্মিথ।
সেই ইংল্যান্ডের মাটিতেই কেরিয়ারের শততম টেস্টে নামছেন। অস্ট্রেলিয়ার এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবে। অজি ক্রিকেটে ডন ব্র্যাডম্যানের আসনে যাঁকে বসানো হয়, সেই স্টিভ স্মিথ অনন্য মাইলফলকের সামনে।