Ashutosh Sharma: KKR এর পন্ডিতমশাইয়ের রাতের ঘুম কাড়তে পারেন আশুতোষ শর্মা

চন্দ্রকান্ত পন্ডিত গত বছর কেকেআরের কোচ হন। সাফল্য আসেনি। লাল-বলের ক্রিকেটে কোচ হিসেবে যতটা নির্ভরযোগ্য, সাদা বলে যে নয়, কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টও যেন বুঝতে পেরেছিল। এ বার মেন্টর হিসেবে আনা হয়েছে গৌতম গম্ভীরকে। দুর্দান্ত খেলছে কেকেআর। একদিকে প্লে-অফের দৌড়ে থাকার লড়াই, অন্য দিকে বঞ্চনার জবাব। ‘পন্ডিতের’ টিমের বিরুদ্ধে এ বার আশুতোষের ব্যাট কেমন জ্বলে ওঠে সেদিকে বিশেষ নজর থাকবে।

Ashutosh Sharma: KKR এর পন্ডিতমশাইয়ের রাতের ঘুম কাড়তে পারেন আশুতোষ শর্মা
কেকেআরের ঘুম ওড়াতে তৈরি আশুতোষ শর্মা।Image Credit source: BCCI
Follow Us:
| Updated on: Apr 26, 2024 | 12:01 AM

কলকাতা: আইপিএল (IPL) কত কিছু জানায়। কত্ত ক্রিকেটারকে চেনায়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে একটা ভালো ইনিংস…। রাতারাতি কোনও এক আনক্যাপড ক্রিকেটারকে লাইমলাইটে নিয়ে আসতে পারে। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। আশুতোষ শর্মা (Ashutosh Sharma) নামটাও তেমনই। এ বারের আইপিএলে পঞ্জাব কিংস টিমের হয়ে খেলছেন। যাঁরা ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের একটু খোঁজ খবর রাখেন, তাঁদের কাছে অবশ্য আশুতোষের নামটা নতুন নয়। এ বার ইডেনে প্রীতির টিমের এই অস্ত্রই কেকেআরের পন্ডিতমশাইয়ের ঘুম ওড়াতে তৈরি। নাইট কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের সঙ্গে আলাদা ‘কানেকশন’ রয়েছে আশুতোষের।

ইডেনে কি বদলার ম্যাচ আশুতোষ শর্মার?

ফেরা যাক ২০১৯-২০’র সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে। তা হলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে। মধ্যপ্রদেশের হয়ে সে বার সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী ছিলেন আশুতোষ। তিনি ১৬৫.২৪ গড়ে ২৩৩ রান করেছিলেন। ৩টি হাফসেঞ্চুরি। অনবদ্য ছন্দে থাকার পরও আশুতোষ এক কঠিন পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন।

এক সাক্ষাৎকারে আশুতোষ বলেছিলেন, ‘২০১৯ সালে মধ্যপ্রদেশের হয়ে আমি শেষ ম্যাচে ৮৪ রান করেছিলাম। তারপর পরের বছর একজন পেশাদার নতুন কোচ টিমে আসে। কিছু কারণবশত তিনি আমাকে পছন্দ করতেন না। আমি ৪৫ বলে ৯০ রান করেছিলাম সিলেকশন ম্যাচে। কিন্তু তারপরও সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির স্কোয়াডে জায়গা হয়নি।’

এ বার ২০২০ সালের মার্চে ফিরে যাওয়া যাক। আসলে সেই সময় মধ্যপ্রদেশ টিমের নতুন কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন চন্দ্রকান্ত পন্ডিত। একটা সময় মধ্যপ্রদেশের হয়ে খেলেছেন। আক্ষেপ ছিল, প্লেয়ার হিসেবে মধ্যপ্রদেশের হয়ে রঞ্জি ট্রফি না জেতার। কোচ হিসেবে সেটাই করতে চেয়েছিলেন। সফলও হয়েছিলেন। ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে বা বলা ভালো লাল-বলের ক্রিকেটে কোচ হিসেবে অন্যতম সফল কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিত। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সেই অর্থে সাফল্য নেই।

সাক্ষাৎকারে আশুতোষ অবশ্য সরাসরি চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের নাম করেননি। কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছেন, কার জন্য কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। ভালো পারফর্ম করেও কোচের ব্যক্তিগত অপছন্দের বলে মধ্যপ্রদেশের হয়ে আর কপাল খোলেনি আশুতোষের। সেই তিনিই এখন প্রীতির টিমের অন্যতম অস্ত্র।

মধ্যপ্রদেশের হয়ে হঠাৎ করেই সুযোগ না পেতে পেতে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন আশুতোষ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ওই সময় অবসাদে ভুগছিলাম। আমার মাঠে ঢোকার অনুমতিও ছিল না। শুধু জিমে গা ঘামাতে পারতাম আমি। তারপর আমাকে রুমে ফিরে আসতে হত। হঠাৎ কেন আমার সঙ্গে এমন আচরণ, এর কারণও আমাকে জানানো হয়নি। আমি ভাগ্যবান যে রেলওয়েজের একটা চাকরি পেয়ে যাই। ওখানে আমি অনেক সমর্থন পেয়েছি। কিন্তু আমি মধ্যপ্রদেশে কাটানো শেষ ২টো বছরের কথা আর কখনও ভাবতে চাই না। রাতের পর রাত ঘুমোতে পারতাম না। শুধুই ভাবতাম, আমাকে কেন ওরা বসিয়ে রেখেছে, দল থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। আর এই ভাবনাই আমাকে আরও অবসাদের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।’

সেই চন্দ্রকান্ত পন্ডিত গত বছর কেকেআরের কোচ হন। সাফল্য আসেনি। লাল-বলের ক্রিকেটে কোচ হিসেবে যতটা নির্ভরযোগ্য, সাদা বলে যে নয়, কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্টও যেন বুঝতে পেরেছিল। এ বার মেন্টর হিসেবে আনা হয়েছে গৌতম গম্ভীরকে। দুর্দান্ত খেলছে কেকেআর। একদিকে প্লে-অফের দৌড়ে থাকার লড়াই, অন্য দিকে বঞ্চনার জবাব। ‘পন্ডিতের’ টিমের বিরুদ্ধে এ বার আশুতোষের ব্যাট কেমন জ্বলে ওঠে সেদিকে বিশেষ নজর থাকবে।