মুম্বই: আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ! অস্ট্রেলিয়ার কাছে তো সহজ প্রতিপক্ষ। একটা সময় পরিস্থিতি এমনই ছিল। ওয়ান ডে-তে হাতে গোনা তিন ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান। এর মধ্যে দু-বার বিশ্বকাপের মঞ্চে। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। এ বার শুরুর দু-ম্যাচে হোঁচট খেয়েছিল। তারপর থেকে বিধ্বংসী পারফর্ম করছে অজিরা। তারপরও কি আফগানিস্তানকে ভয় পাওয়ার কারণ আছে? বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বলতে হয়, অবশ্যই আছে। মুম্বইয়ের আইকনিক ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের পরামর্শ এবং স্পিনের ফাঁদ সাজিয়ে প্রস্তুত আফগানিস্তান। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপ যৌথ ভাবে আয়োজন করেছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। পার্থে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নারের ১৭৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের সৌজন্যে ৪১৭-৬ বিশাল স্কোর গড়ে অজিরা। ২৭৫ রানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের মঞ্চে সেটিই ছিল সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। এই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াই সেই রেকর্ড ভেঙেছে। গত বিশ্বকাপে ব্রিস্টলে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান। রান তাড়ায় ৯১ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জিতেছিল অজিরা। এ বার পরিস্থিতি অন্যরকম। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে আফগানিস্তান। শুধু তাই নয়, প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও জিতেছে। টানা তিন ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ার সামনে আফগানিস্তান।
ওয়াংখেড়েতে ম্যাচের আগের দিন আফগানিস্তানের প্র্যাক্টিসে ছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর। আফগান প্লেয়ারদের নানা পরামর্শও দেন। তাতে বেশ কিছুটা প্রেরণা পেতে পারেন রশিদ খান, মহম্মদ নবিরা। আফগানিস্তানের মূল শক্তি স্পিন বোলিং। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, মহম্মদ নবির মতো অভিজ্ঞ স্পিনত্রয়ীর সঙ্গে বাঁ হাতি রিস্ট স্পিনার নুর আহমেদ। পেস বোলিং আক্রমণও ভরসা দেওয়ার মতো। ফজলহক ফারুকি ধারাবাহিক ভালো পারফর্ম করছেন। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের মতো পেস বোলিং অলরাউন্ডার রয়েছেন। তেমনই রান তাড়ায় বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং করছে আফগানিস্তান। সেমিফাইনালের স্বপ্ন সফল করতে সর্বস্ব দিয়ে লড়াইয়ে প্রস্তুত আফগান শিবির। বিশ্বকাপের মঞ্চে এ বারই তাদের সেরা পারফরম্যান্স। সেই ধারা বজায় রাখাতেই নজর।
অস্ট্রেলিয়া গত ম্যাচে পায়নি গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। এই ম্যাচে মিচেল মার্শ, ম্যাক্সওয়েল দু-জনেই ফিরছেন। আগের দিনের অনুশীলনে চোট পান স্টিভ স্মিথ। তাঁর খেলা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। স্মিথ একান্তই না খেলতে পারলেও অজি টিম প্রবল শক্তিশালী। ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড গত ম্যাচে বড় রান না পেলেও বিধ্বংসী ফর্মে রয়েছেন। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তান জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে। অজি ব্যাটারদের স্পিনের বিরুদ্ধে দুর্বলতা রয়েছে।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে কোনঠাসা করেছিল আফগানিস্তান। নবীন উল হক এবং ফজলহক ফারুকির পেস জুটির সামনে হিমশিম খেয়েছিল অজিরা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল হাফসেঞ্চুরির ইনিংসে পরিস্থিতি সামাল দেন। রান তাড়ায় রশিদ খান মাত্র ২৩ বলে ৪৮ রান করেছিলেন। মাত্র ৪ রানে হারে আফগানিস্তান। আজকের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার একটা স্বস্তি হতে পারে, ওয়াংখেড়েতে সামলাতে হবে আফগানদের। এই ম্যাচটি চেন্নাইয়ের পিচে হলে! কিছুটা হলেও আতঙ্কে থাকত অজিরা। তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে ওয়াংখেড়েতেও সমস্যায় পড়তে হতে পারে অস্ট্রেলিয়াকে।