লর্ডসের সেই দিনটা মনে পড়ে! চার বছর কেন, চল্লিশেও হয়তো ভোলা সম্ভব নয়। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড সমর্থকদের জন্য। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল। টানা দ্বিতীয় বার বিশ্বকাপ ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল কিউয়িরা। ১০০ ওভারেও ফয়সালা হল না ম্যাচের! এরপর সুপার ওভার। সেখানেও টাই! কয়েক মুহূর্ত পরেই উচ্ছ্বাসে মাতলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটার এবং সমর্থকরা। মাঠে হতাশায় ডুবে কিউয়ি ক্রিকেটাররা। মহাকাব্যিক একটা ফাইনালের পর চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ হয়েছিল বাউন্ডারি সংখ্যার বিচারে। যেখানে শেষ হয়েছিল, ঠিক যেখান সেখান থেকেই শুরু! আমেদাবাদে আজ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। বোধনেই মুখোমুখি গত বারের দুই ফাইনালিস্ট। মাঝে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। এক যুগ পর ভারতের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের আসর। উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
সদ্য ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ খেলেছে ইংল্যান্ড। ১৯-এর বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এই ফরম্যাটে চার বছর পর মুখোমুখি হয়েছিল দু-দল। এ বার একই মঞ্চে। ফুল ফিট না হওয়ায় প্রথম ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে পাবে না নিউজিল্যান্ড। নেতৃত্ব দেবেন টম ল্যাথাম। নেতা বদলেছে ইংল্যান্ড শিবিরে। তবে সেটা পাকাপাকি ভাবে। বিশ্বজয়ী অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্য়ান অবসর নিয়েছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেওয়া হয় জস বাটলারকে। তাঁর নেতৃত্বে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। দুই ফরম্যাটেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন নামছে আজ।
ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। বিশ্বকাপের জন্য অবসর ভেঙে ফিরেছেন। গত বিশ্বকাপ ফাইনালের নায়ক প্রথম ম্যাচে নামতে পারবেন কিনা, ধোঁয়াশা রয়েছে। তাঁর কোমরের চোট পুরোপুরি সেরে ওঠেনি। বিশ্বকাপের পর অস্ত্রোপচারের কথাও রয়েছে। তেমনই ইংল্যান্ড বোলিং লাইন আপ কতটা ফিট রয়েছেন, চিত্রটা পরিষ্কার নয়। আইপিএলের সৌজন্যে দু-দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ, পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। পরস্পরের শক্তি-দুর্বলতা জানা। তারপরও কোনও দল জিতবে, কেউ হারবে। মাঠে নেমে যে দল স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারবে, বাজিমাত করবে তারাই।
নিউজিল্যান্ড শিবিরে বাড়তি নজর বাঁ হাতি পেসার ট্রেন্ট বোল্টের দিকে। পিচ, পরিস্থিতি, প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, নতুন বলে তাঁকে সামলানো চ্যালেঞ্জ। নিউজিল্যান্ড টিমে একঝাঁক চনমনে ক্রিকেটার রয়েছেন। ইংল্যান্ড অবশ্য অভিজ্ঞতায় বেশি জোর দিয়েছে। হয়তো ৫০ ওভারের ফরম্যাট বলেই। দীর্ঘ সময় এই ফরম্যাট থেকে বিরতি নেওয়া জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, দাবিদ মালানরা এই দলের অন্যতম ভরসা। নতুন মুখ হ্যারি ব্রুক একাদশে জায়গা পেলে, আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকবে। ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার যে কোনও দিনই ভয়ঙ্কর। কিউয়ি শিবিরে তেমনই উইল ইয়ং, ডেভন কনওয়ে, ড্যারেল মিচেলের কথা আলাদা করে বলতে হয়।
আমেদাবাদে সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক পিচ দেখা যায়। বিশ্বকাপের জন্য কিছুটা বদল হতে পারে। পিচ যেমনই হোক ইংল্যান্ডের লেগ স্পিনার আদিল রশিদের কথা ভুললে চলবে না। রিস্ট স্পিনাররা যে কোনও পিচেই ফ্যাক্টর হতে পারেন।
ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ: জনি বেয়ারস্টো, দাবিদ মালান, জো রুট, বেন স্টোকস/হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার, লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, মার্ক উড, আদিল রশিদ, রিস টপলি। এই একাদশ খেলানো হলে পার্টটাইম স্পিনারের ভূমিকায় দেখা যাবে জো রুট, লিয়াম লিভিংস্টোনকে।
নিউজিল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ: উইল ইয়ং, ডেভন কনওয়ে, ড্যারেল মিচেল, গ্লেন ফিলিপ্স, টম ল্যাথাম, জেমস নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, ঈশ সোধী, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট। যদি এই একাদশ খেলানো হয়, নিউজিল্যান্ডের কম্বিনেশনে ভারসাম্য খুবই ভালো। মিডিয়াম পেসাররা সাহায্য পেলে ড্যারেল মিচেল রয়েছেন। ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন এবং ট্রেন্ট বোল্টের সঙ্গে প্রয়োজনে নিশাম এবং মিচেলকে ব্যবহার করা যাবে। তেমনই বাঁ হাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার এবং রিস্ট স্পিনার ঈশ সোধী সমস্যায় পড়লে ব্যাক আপ হিসেবে থাকছেন গ্লেন ফিলিপ্স। লেগ ব্রেক-অফস্পিন দুটোই রয়েছে তাঁর ঝুলিতে!