রক্তিম ঘোষ
কলকাতা: ইডেন যেন পাঠশালা হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে। ভারত দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগের দিনও এমন চিত্র ধরা পড়েছে। রাবাডা-এনগিডিরা মাঠেই বসে পড়েছিলেন প্রাক্তন প্রোটিয়া কিংবদন্তি শন পোলকের ক্লাসে। শনিবার পাকিস্তান-ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে প্রাক্তন পাক তারকা রামিজ রাজার ক্লাসে হাজির হয়েছিলেন বাবর-ইফতিকাররা। আর সোমবার সন্ধেয় অজি শিবিরের আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস হল একেবারে ইডেনের বুকে। এ বার ছাত্রের ভূমিকায় মার্নাস লাবুশেন। শিক্ষকের ভূমিকায় ‘ওয়ান অ্যান্ড অনলি ‘ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কেমন হল সেই অনুশীলন? বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
আফগানিস্তান ম্যাচের সেই অতিমানবীয় ইনিংস। শেষদিকে তো পায়ের এত যন্ত্রণা, দৌড় দূর কী বাত, ডান পা এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে কষ্ট হচ্ছিল। সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আফগান স্পিনারদের বিরুদ্ধে কোনও ফুটওয়ার্ক ছাড়াই একের পর এক ব্যাটিং সংহার চালিয়ে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। যার মধ্যে সবচেয়ে নজরকাড়া ছিল রিভার্স স্কুপ। ম্যাড ম্যাক্সের সেই পাওয়ারফুল রিভার্স স্কুপে বল আছড়ে পড়েছিল গ্যালারিতেও। ম্যাচ শেষে আফগানিস্তানের কোচ জোনাথন ট্রট সেই ইনিংস প্রসঙ্গে বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, ম্যাক্সির জন্য গ্যালারিতেও ফিল্ডার রাখতে হত!
রিভার্স স্কুপ এখন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং সংহারের অন্যতম অস্ত্রের নাম। একেবারে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন সেই শটকে। স্পিনারদের বিরুদ্ধে এই উপমহাদেশের পিচে যা বেশ কার্যকরী হয়েছে এই বিশ্বকাপে। এ বার ম্যাক্সওয়েলের দ্বারস্থ সতীর্থ লাবুশেন। তাঁকেও শিখিয়ে দিতে হবে রিভার্স স্কুপ। সোমবার ইডেন গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়ার অনুশীলনের মাঝে একবারে আবদার লাবুশেনের। নেটের বাইরে লাবুশেনকে নিয়ে পড়লেন ম্যাক্সি। একেবারে আনকোরা ছাত্রকে শিক্ষকরা যেভাবে পাখি পড়ার মতো বোঝান, ঠিক তেমনি ম্যাক্সওয়েল শেখালেন লাবুশেনকে। রিভার্স স্কুপ শট। পায়ের পজিশন কী হবে, ব্যাট কোন কোনা থেকে নামাতে হবে-পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখান ম্যাক্সওয়েল।
ম্যাক্সওয়েলের ক্লাস শেষে সোজা নেটে যান লাবুশেন। এরপর শুরু ম্যাক্সের থেকে পাওয়া শিক্ষাকে হাতে কলমে প্রমাণ করার পালা। স্থানীয় নেট বোলার হোক বা থ্রোডাউন- একের পর এক রিভার্স স্কুপ মেরে গেলেন লাবুশেন। নেটের বাইরে কড়া নজর রাখলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কোথাও ভুলচুক হলেই আবার দেখিয়ে দিচ্ছেন অজি তারকা। দক্ষিণ আফ্রিকার ২ স্পিনার- শামসি ও কেশব মহারাজ। দুই স্পিনারের বিরুদ্ধে ম্যাক্সওয়েলের রিভার্স স্কুপ কতটা প্রয়োগ করে সফল হতে পারেন লাবুশেন, তা দেখার অপেক্ষায় থাকবে ১৬ নভেম্বরের ইডেন গার্ডেন্স।