কলকাতা: প্যাট কামিন্স বেশ অবাকই হয়েছেন। সিরিজের মাঝে হঠাৎ কেন অবসর নেবেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন? হরভজন সিংও একই রকম আশ্চর্য। অশ্বিনের হঠাৎ অবসরের পিছনে কি অন্য কোনও কাহিনি রয়েছে? ১০৬ টেস্ট খেলে ৫৩৭ উইকেট নেওয়া দক্ষিণী স্পিনার দিন-রাতের টেস্টে খেলেছেন এই ক’দিন আগেও। ব্রিসবেন টেস্টে তাঁর বদলে খেলানো হয়েছে রবীন্দ্র জাডেজাকে। পারথ টেস্টে খেলেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। দলে আর নিয়মিত নন বলেই কি অবসরের আচমকা সিদ্ধান্ত? বেশ কিছু যুক্তি উঠে আসছে। সব মিলিয়ে ৪টা কারণ, যা হয়তো বাধ্য করল অশ্বিনকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে। কী সেই কারণগুলো?
রবীন্দ্র জাডেজা
প্রথম দুটো টেস্টে সুযোগ পাননি জাডেজা। কিন্তু গাব্বায় নামতেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এমনিতেও বিদেশে টেস্ট থাকলে এক স্পিনার হিসেবে অশ্বিনের থেকে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য থেকেছেন জাডেজাই। বাঁ হাতি অলরাউন্ডারকেই খেলানো হয়েছে বারবার। অশ্বিনকে বসতে হয়েছে ডাগআউটে। ব্রিসবেনে জাডেজা ভালো খেলে দেওয়ায় আপাতত একাদশে ঢোকার সুযোগ নেই অশ্বিনের। মেলবোর্নের পিচ পেস সহায়ক। জাডেজা যা খেলেছেন, একমাত্র স্পিনার হিসেবে তাঁকেই খেলানো হবে। সিডনির পিচে আবার স্পিন থাকে। সেখানেও খেলবেন জাডেজা। অশ্বিনের সুযোগ থাকছে না।
ওয়াশিংটন সুন্দর
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরকেই অশ্বিনের বিকল্প ভাবা হচ্ছে। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড টেস্টেও তিনি ভালো খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পারথে সিরিজের প্রথম টেস্টেও যে কারণে ২৫ বছরের অলরাউন্ডারকেই খেলানো হয়েছে। যদিও তিনি তেমন ভালো পারফর্ম করতে পারেননি। কিন্তু অশ্বিনের মতো সিনিয়র স্পিনারের বদলে নতুন মুখ খুঁজে নেওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই ভারতের। সুন্দর যে টিম ম্যানেজমেন্টের বাজি, সেটা বুঝে গিয়েছেন অশ্বিন।
নীতীশ কুমার রেড্ডি
অনেক ক্ষেত্রেই টেস্টে অলরাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন অশ্বিন। ৬টা টেস্ট সেঞ্চুরিও করেছেন। ঘরের মাঠের কথা ভাবলে কিন্তু একটা জায়গা এতদিন খোলা ছিল, পেসার-অলরাউন্ডার ছিল না ভারতের হাতে। হার্দিক পান্ডিয়া লাল বলে খেলেন না। সেই জায়গাটা পূরণ করে ফেলেছেন নীতীশ। বোলার হিসেবে কার্যকর। বিপদের সময় ব্যাটের হাতও চমৎকার। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দলকে ভরসাও দিতে পারেন। ২১ বছরের নীতীশের উত্থান ভারতীয় টিমের একাদশে অশ্বিনের জায়গা আরও সঙ্কুচিত করে ফেলেছে।
হোম সিরিজ নেই
সামনে তাকালে ঘরের মাঠে কোনও টেস্ট সিরিজ নেই ভারতের। ঘরের মাঠে টেস্টে ৩৮৩টা উইকেট পাওয়াই অশ্বিনকে অপরিহার্য করে তুলেছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর ভারতের সামনে জুনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তারপর ইংল্যান্ড সফর। অশ্বিনকে ঘরের মাঠে অবসর নিতে হলে অপেক্ষা করতে হত অনেকটাই। ততদিন তাঁর জায়গা টিমে অক্ষত থাকত, তাও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
বোঝাই যাচ্ছে, হঠাৎ করে নয়, হিসেব কষেই অশ্বিন টেস্ট অবসর নিয়েছেন। তার আগে টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে নিশ্চিত ভাবেই কথা বলেছেন সিনিয়র অফস্পিনার। পরিস্থিতি যে তাঁর অনুকূলে নয়, তা বুঝেই অবসরের সিদ্ধান্ত অশ্বিনের।