Sanath Seth: ৯১ বছরে প্রয়াত দুই প্রধানের গোলকিপার সনত্ শেঠ
Sanath Seth: বছর কয়েক আগেও ময়দানের নানা অনুষ্ঠানে দেখা যেত তাঁকে। বয়সের কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন। নিজের ঘরেই কাটত দিন। একাকীত্বে তাঁর সঙ্গী ছিল একটা রেডিও। তাতেই রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতেন তিনি। সনতের প্রয়াণে শোকের ছায়া ময়দান ও পানিহাটিতে।
কলকাতা: সময় পেলে বেহালা বাজাতেন। আঙুলের ব্যথায় তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বহুদিন। স্ত্রী ছিলেন সর্বক্ষণের সঙ্গী। বছর খানেক আগে তিনিও মারা যান। তারপর থেকে একাকীত্বে ভুগতেন। পাঁচ ও ছয়ের দশকে রেলওয়ে এফসি, এরিয়ান হয়ে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)-মোহনবাগানে (Mohun Bagan) চুটিয়ে খেলেছেন। ময়দানের অত্যন্ত সফল গোলকিপার সনত্ শেঠ (Sanath Seath) মারা গেলেন। ৯১ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনী গোস্বামীর সঙ্গে খেলেছেন এক সময়। তাঁর সময়ের সেরা দুই ফুটবলারের প্রয়াণের খবরে ভেঙে পড়েছিলেন। সেই দাপুটে কিপার শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ প্রয়াত হন (passes away)। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। শেষ দিকে হাঁটতেও পারতেন না পানিহাটি বাসিন্দা।
১৯৪৯ সালে সনত্ ডাক পান রেলওয়ে এফসিতে খেলার জন্য। জেলা লিগে গোলকিপার হিসেবে বেশ নামডাক করে ফেলেছেন তখন। রেলওয়ে এফসির দুই কিপারের চোট থাকায় কলকাতা লিগে খেলার সুযোগ পেয়ে যান। মোহনবাগান ম্যাচ দিয়ে ময়দানে কেরিয়ার শুরু তাঁর। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন বছর রেলওয়ে এফসিতে খেলে ১৯৫২ সালে সই করেন এরিয়ানে। সেখান থেকে ১৯৫৭ সালে ইস্টবেঙ্গলে খেলার ডাক পান। তবে পরের বছরই চলে যান মোহনবাগানে। পিটার থঙ্গরাজ আর সনত্ই ছিলেন তখন দুই প্রধানের শেষ প্রহরী। বড় টিমে পা রাখার আগেই ভারতীয় টিমে (Indian Football team) খেলে ফেলেছিলেন। তবে, ১৯৫৬ সালের হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে না খেলতে পারার আক্ষেপ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যায়নি সনতের। মোহনবাগান থেকে ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত আবার এরিয়ানেই খেলেন সনত্। ১৯৬৮ সালে ফের সই করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলে। লাল-হলুদ জার্সিতেই অবসর নেন।
বর্ণময় ফুটবল কেরিয়ার নিয়ে যখনই কথা উঠত, সনত্ বলতেন, ‘রেলওয়ে এফসিতে আমার জন্ম। এরিয়ান ক্লাব ছিল আমার মামারবাড়ি। ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান মাসি-পিসির বাড়ি।’ ফুটবলকে বিদায় জানালেও উত্তর ২৪ পরগণা লিগে খেলেছেন তার পরও অনেক দিন। ফুটবলকে পুরোপুরি বিদায় জানানোর পর খুদেদের কোচিংও করিয়েছেন সনত্। বছর কয়েক আগেও ময়দানের নানা অনুষ্ঠানে দেখা যেত তাঁকে। বয়সের কারণে শেষ কয়েক বছর কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন। নিজের ঘরেই কাটত দিন। একাকীত্বে তাঁর সঙ্গী ছিল একটা রেডিও। তাতেই রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতেন তিনি। সনতের প্রয়াণে শোকের ছায়া ময়দান ও পানিহাটিতে।
আরও পড়ুন : ISL 2021: বছরের শেষ ম্যাচেও জয় অধরা লাল-হলুদে