নয়াদিল্লি : সুনীল ছেত্রী। ভারতীয় ফুটবলই শুধু নয়, বিশ্ব ফুটবলেও এক অতি পরিচিত নাম। মাঠে খুবই সিরিয়াস। খেলার প্রতি দায়বদ্ধ। মাঠের বাইরেও তাঁর সরল হাসি মন জয় করে। তবে এই সুনীল ছেত্রী ছেলেবেলায় পিছনে লাগতেন, ব্যাকবেঞ্চার ছিলেন! শুনতে কিছুটা হলেও অবাক লাগে। ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রী এগুলো নিজেই ভাগ করে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শুরুর দিকেও এমনই ছিলেন। সময়ের সঙ্গে প্রত্যেকের মধ্যে বিরাট পরিবর্তন দেখা যায়। সুনীল ছেত্রীর মধ্যেও এই পরিবর্তন দেখা গিয়েছে ২০১১ সাল নাগাদ। সে বছর আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান ভারতীয় ফুটবলের আর এক কিংবদন্তি বাইচু ভুটিয়া। ভারতীয় দলের তৎকালীন কোচ বব হাউটন নেতৃত্বের জন্য বেছে নেন সুনীল ছেত্রীকে। তারপর থেকেই যেন এই বদল। তার আগে কেমন ছিলেন ভারতীয় ফুটবলের পোস্টার বয়? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ডিজনি প্লাস হটস্টারে একটি অনুষ্ঠানে সেই পুরনো প্রসঙ্গই উঠে এল সুনীল ছেত্রীর কথায়। বলেন, ‘কোচ বব হাউটন ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরিয়ে দিয়েছিলেন। হঠাৎ বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। তার আগে পর্যন্ত অতি সাধারণ একজন ফুটবলার ছিলাম। বলা ভালো ব্যাকবেঞ্চার ছিলাম। সে সময় স্টিভেন ডায়াস, (এনপি) প্রদীপদের সঙ্গে মিলে সিনিয়রদের নিয়ে হাসিমস্করা করতাম। খুব প্র্যাঙ্ক করতাম। এক বাক্যে আমিই ছিলাম নাটের গুরু।
দায়িত্ব অনেকের মধ্যেই বাড়তি পরিবর্তন আনে। ভারতীয় দলের সেই ক্যাপ্টেন আর্মব্যান্ডই সুনীলের কেরিয়ারে নতুন মোড়। আরও যোগ করেন, ‘ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরতেই টিম মিটিংয়ে সামনের সারিতে বসা শুরু করি। ধীরে ধীরে অনুভব করেছিলাম, নেতৃত্বের চাপ কতটা। আগের মতো খোশমেজাজে থাকার পরিস্থিতি ছিল না বললেই ছিল। তখন আর শুধু নিজেকে নিয়ে নয়, পুরো দলকে নিয়েই ভাবতে হত।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে দু-দশক। কম সময় নয়। গড়েছেন নানা নজির। কয়েক সপ্তাহ আগেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোলের নিরিখে ছাপিয়ে গিয়েছেন কিংবদন্তি ফেরেন্স পুস্কাসকে। ক্লাব ফুটবলেও ব্যাপক সাফল্য রয়েছে তাঁর। নেতৃত্ব পেয়ে নিজেকে কী ভাবে বদলে ছিলেন! সুনীলের কথায়, ‘আমি সুনীল ছেত্রী, আমার ড্রিবল, পাস, ক্রসিং, গোল—আগে চিন্তাভাবনার মূল বিষয় ছিল এগুলোই। প্র্যাক্টিস হোক বা ম্যাচ। এগুলো করেই সন্তুষ্ট থাকতাম। অনেকেই বিদ্রুপ করত। গায়ে মাখতাম না। অধিনায়ক হওয়ার মাঠে যেমন পুরো দল এবং নিজেকে নিয়ে ভাবতে হত, তেমনই মাঠের বাইরেও। একটা সময় পর নিজেই নিজেকে বোঝাই-অযথা চাপ নিও না, কাজটা একই। মাঠে ও মাঠের বাইরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলো।