প্রীতম দে
ফুটবলারদের পারফরম্যান্সই কি শুধু মুগ্ধ করে? হয়তো না। ফুটবলপ্রেমীরা তাঁদের নায়ককে নানা ভাবে অনুসরণ এবং অনুকরণ করে থাকেন। আচরণ, ব্যক্তিত্ব, পারফরম্যান্স, সব দিক থেকে সংশ্লিষ্ট ফুটবলার তাঁর ভক্তের কাছে নায়ক। এমনই একজন ফুটবলপ্রেমী কলকাতার বুকে রয়েছেন। পেশায় তিনি চিকিৎসক। তাঁর আরও একটা পরিচয়, মেসি ভক্ত। সামনেই বড় দিন। তার আগে একজন বড় মনের মানুষ, ফুটবলপ্রেমী, মেসি ভক্ত চিকিৎসককে নিয়ে Tv9Bangla-র বিশেষ প্রতিবেদন।
গলার কাছে স্টেথোস্কোপ। বুকে লিও মেসির ছবি। ডাক্তারবাবু পরেছেন স্যান্টাক্লজ এর পোশাক। বুকে ব্যাজের মতো সাঁটা লিওনেল মেসির ছবি। আর সকলের মতো শুধু এবং শুধুমাত্র মেসির গোলের ফ্যান নন তিনি। মেসি উদ্বুদ্ধ করেছেন অন্য ভাবে। মানুষের পাশে থাকার ‘মেসি মন্ত্র’ নিয়ে বড়দিনের প্রাক্কালে পথ শিশুদের পাশে চিকিৎসক অজয় মিস্ত্রি। সান্টা ক্লজের লাল পোশাক গায়ে। ময়দানের পাশে উড়াল পুলের নিচে যারা থাকে, সেই সব শিশুরা লাইন দিয়েছে। সামনে একটা বড় কেক আর মেসির অনুরাগী ডাক্তারবাবু। এই ফুটপাথবাসীদের সর্বক্ষণের ভরসা ডাক্তার অজয় মিস্ত্রি। করোনা থেকে শুরু করে মাঝেমধ্যেই তিনি এখানে এসে ফ্রি ক্যাম্প করেন। ওদের চিকিৎসা করেন। ওষুধপত্র দেন। অনেক সময় ওনার ফোনে একটা কল করলেও চলে আসেন সরাসরি। আর বছরের বিশেষ দিনগুলোয় উপহারের ডালি নিয়ে হাজির হন। যেমনটা বড় দিনের আগে হয়েছেন।
সদ্য বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এ বার যেন ডাক্তারবাবুর কাছে দ্বিগুন ‘বড় দিন’। মেসির হাতে বিশ্বকাপ। আর এই মুহূর্তটা ভাগ করে নেওয়ার জন্য কাছের মানুষদের পাশেই ডাক্তার বাবু। “সবাই মেসির গোলে মুগ্ধ আর আমি মুগ্ধ তার সামাজিক কাজকর্মে। লোক চক্ষুর আড়ালে থেকেও কী বিশাল সমাজসেবার কাজ করেন, এ খবর গুগল সার্চ করলে সহজেই পাওয়া যায়,” বলেন ডাক্তার অজয় মিস্ত্রি। বাংলা, ছত্তিশগঢ়, ওডিশার গ্রামে গ্রামে ঘুরে নিজের সাধ্যমতো বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন, ওষুধ পত্র দেন। বড় দিনের সময় দেন কেক, গরম জামা কাপড়। সারা বছরই এদের সঙ্গে সময় কাটান। মেসির যেমন ফাউন্ডেশন আছে সমাজ সেবার জন্য, ঠিক সেরকমই ‘হিউম্যানিটি ট্রাস্ট’ নামে একটি সংস্থা করেছেন ডাক্তারবাবু। নিজের উপার্জনের একটা অংশ দেন নিয়মিত। সান্টা ক্লজের লাল পোশাক গায়ে হাজার গরম পোশাক দিলেন। আর বড়সড় একটা কেক কেটে নিজের হাতে খাওয়ালেন ফুটপাথের কচিকাঁচাদের।