কলকাতা: স্পোর্টস। যেন সব কিছুর সমাধান। মন খারাপের ওষুধ। পলক কোহলির জীবনে স্পোর্টসের আলাদা মাত্রা রয়েছে। সেই গল্পই শোনাবো। ছবি দেখে কিছুটা আন্দাজ করা যায়। সবটা যদিও নয়। তবে এই গল্পটাও হার না মানার। যেখানে প্রতিনিয়ত সমাজের সঙ্গে লড়তে হয়। তার চেয়েও বড় কথা, নিজের সঙ্গেই কঠিন লড়াই। সেখানে হেরে যাওয়ার ভাবনাই আগে আসে। পলক সেই পথে হাঁটেননি। মানসিক লড়াইয়ে জিতেছেন। আরও অনেককেই যেন জিতিয়েছেন। ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের এই প্রতিভার নজরে এ বার প্যারিস। পরবর্তী অলিম্পিকের আসর বসছে প্যারিসে। তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন পলক। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
জেদ, সাহস ও লড়াইয়ের অন্য নাম পলক কোহলি। সালটা ২০১৭। তার আগে একটি মিলের কর্মী ছিলেন পলক কোহলি। ‘পলক ফেলতেই’ না হলেও চার বছরে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। পলক হয়ে উঠেছিলেন প্যারালিম্পিয়ান। অদম্য জেদ আর সাহস না থাকলে তা পারা যায় না। জন্ম থেকেই তাঁর একটা হাত আর দশজনের মতো নয়। খেলাধুলোর ক্ষেত্রে বরাবরই সাইডলাইনেই পড়ে থাকতে হত। সমাজের সঙ্গে যেন এখানেই লড়াই।
কঠিন চ্যালেঞ্জ, পরিবারের সমর্থন এবং চেষ্টায় ঘুরে দাঁড়ানো। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই সফর তুলে ধরেছেন পলক নিজেই। বলছেন, ‘ব্যাডমিন্টনে আসা আমার কাছে পুরোপুরি আশীর্বাদ ছিল। জীবন বদলে দিয়েছে। পরিস্থিতি যেমন ছিল, একটা সময় মনে করতাম, আমার জীবনে কিছুই নেই, সব শেষ। হয়তো আমাকে ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার বানানো ঈশ্বরের পছন্দ ছিল।’
আরও ভালো ভাবে ব্যাখ্যায় পলক বলেন, ‘জন্ম থেকেই আমার হাতে সমস্যা ছিল। অন্য যা কিছুই চেষ্টা করতাম, একটা কথাই শুনতে হত-এটা তোমার দ্বারা হবে না। কারও একটু সমস্যা থাকলেই আমরা প্রতিবন্ধী তকমা এঁটে দিই। তার ওপর আমি মেয়ে। কেউ ভরসা না করলেও সমবেদনা জানাতো। পরিবার সব বিষয়ে পাশে থেকেছে। এমন একটা পরিবারে জন্মেছি, যেখানে এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি, আমি কোনও সমস্যা নিয়ে জন্মেছি।’
জীবন বদলেছিল এক অচেনা মানুষের সাক্ষাতে! একটি শপিং মলের বাইরে দেখা হয়েছিল গৌরব খান্নার সঙ্গে। ভারতীয় প্যারা ব্যাডমিন্টন দলের কোচ। পলকের জীবনে মোড় ঘোরানো মুহূর্ত ছিল সেটাই। গৌরবই তাঁকে প্যারা ব্যাডমিন্টনের কথা বলেন। আর এই খেলাতেই পলক নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেন। পলকের নজরে এখন শুধুই প্যারিস প্যারালিম্পিকে পদক।