Paris Olympics 2024: তালিবানের জন্য দেশ-ছাড়া, মানিজাকে ‘তালাশ’ করে নিল প্যারিস অলিম্পিক
Paris Olympics 2024, Manizha Talash: ছেলেদের তাও মাফ করা হয়েছিল। কিন্তু মেয়ে হয়ে ছেলেদের সঙ্গে নাচ? দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্যই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন মানিজা। সেও তো সহজ ছিল না। কাবুলের পাহাড়ি পথ ধরে পাকিস্তানের আশ্রয় পেয়েছিলেন প্রথমে। কিন্তু সেই উদ্বাস্তু শিবিরও ছিল অসহনীয়।
কাবুলের সেই ক্লাব বড় প্রিয় ছিল তাঁর। একগুচ্ছ ছেলের সঙ্গে ওখানেই যে হাতেখড়ি ব্রেক ডান্সে। নামতে ভালোবাসতেন। স্বপ্ন দেখতেন, একদিন নাম করবেন ব্রেক ডান্সার হিসেবে। তিনি কি জানতেন, এই নাচই দেশ ছাড়া করবে তাঁকে? বছর তিনেক আগে সব হিসেব উল্টে দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নেয় তালিবান। দেশে ফের অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। আরও ভালো করে বললে, ঘরের চার দেওয়াল আর বোরখায় ঢাকা পড়ে যায় অসংখ্য মেয়ের মুখ, মন আর স্বপ্ন। শুধু জেগে থাকা দুটো চোখ আর কতটা ছটফট করতে পারে? পারে, কারও কারও পারে। পারে বলেই তো ‘তালাশ’ করছিলেন নতুন জীবনের। মানিজা তালাশকে না হলে যে চেনাই হত না বিশ্বের!
এ বারই অলিম্পিকের খাতায় নাম লিখিয়েছে ব্রেকিং। আদর করে ওই ইভেন্টকে ব্রেক ডান্স বলে ডাকা উচিত। তাতে দুটো ইভেন্ট রয়েছে। বি-বয়েজ আর বি-গার্লস। মানিজা নামবেন বি-গার্লসে। তিন বছর আগেও আফগান মেয়ে জানতেন না তাঁর জন্য একটা অন্য রকম পৃথিবী অপেক্ষা করে রয়েছে। ৩ বছর আগে, ২০২১ সালে তালিবানি ক্ষমতার পরই বোম পড়ে তোলগোল পাকিয়ে যায় সাধের কাবুলের নাচের ক্লাব। ছেলেদের তাও মাফ করা হয়েছিল। কিন্তু মেয়ে হয়ে ছেলেদের সঙ্গে নাচ? দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্যই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন মানিজা। সেও তো সহজ ছিল না। কাবুলের পাহাড়ি পথ ধরে পাকিস্তানের আশ্রয় পেয়েছিলেন প্রথমে। কিন্তু সেই উদ্বাস্তু শিবিরও ছিল অসহনীয়। জীবন ও স্বপ্নের খোঁজে সেখান থেকেই পাড়ি দেন স্পেনে। অবশেষে ওই দেশই তাঁকে দিয়েছে শান্তি আর স্বপ্নের খোঁজ। অলিম্পিকে উদ্বাস্তু টিমে সুযোগ পেয়েছেন।
২১ বছরের মানিজা বলেছেন, ‘আমি স্বপ্ন আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলাম। কখনও ভাবিনি, আমার দেখা স্বপ্নটা এত সুন্দর হতে পারে। তালিবান ক্ষমতায় আসার পর দেশ ছেড়েছিলাম। যে কোনও উদ্বাস্তুর পক্ষে অন্য একটা দেশে গিয়ে বেঁচে থাকা খুব কঠিন। তবে আমার মনে হয়, আফগানিস্তানে থেকে যে মেয়েরা লড়াই করছে, স্বপ্ন মুঠোয় ধরার চেষ্টা করছে, তারা আমার কাছে রোল মডেল।’
একটা অলিম্পিক পদক কি বদলে দেবে মানিজার জীবন? না, তিনি নিজেই তেমনটা মনে করছেন না। ‘একটা পদক জেতা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি আফগানিস্তানের লোকজনের কাছে প্রমাণ করতে চাই, ব্রেক ডান্স একটা নাচ নয়, খেলা। এটাই কলা, এটাই সংস্কৃতি।’
View this post on Instagram