নয়াদিল্লিতে শেষ হল PWR DUPR ইন্ডিয়া মাস্টার্স পিকলবল টুর্নামেন্ট। আর শেষ দিন ইতিহাস। একের পর এক অনবদ্য পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্টে আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভারতের খেলোয়াড় আরমান ভাটিয়া। অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করে তিনটি ইভেন্টের ফাইনালে উঠেছিলেন। অবশেষে ইতিহাসও গড়লেন। তাঁর সামনে ত্রিমুকুটের হাতছানি ছিল। পিকলবলে তিনিই যে ভারতের সেরা প্রতিভা, ২৫ বছরের আরমান ভাটিয়া প্রমাণ করে দিলেন। পুরুষদের সিঙ্গলস, পুরুষদের ডাবলস এবং মিক্সড ডাবলস, তিনটি ইভেন্টেই চ্যাম্পিয়ন।
গত ২৪ অক্টোবর নয়াদিল্লির লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের কোর্টে শুরু হয়েছিল ইন্ডিয়া মাস্টার্স পিকলবল টুর্নামেন্ট। সব মিলিয়ে ৭৫০ প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন এই টুর্নামেন্টে। শেষ দিন অর্থাৎ আজ রবিবার ছিল নানা ইভেন্টের ফাইনাল। পুরুষদের সিঙ্গলস ফাইনালে আরমান ভাটিয়ার প্রতিপক্ষ ছিলেন ডাস্টিন বয়ার। আমেরিকার এই পিকলবল প্লেয়ার এই টুর্নামেন্টে শীর্ষ বাছাই। তাঁকেই ফাইনালে হারালেন আরমান। শুরুটা খারাপ হলেও দ্রুত ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেন শীর্ষ বাছাই ডাস্টিন। ০-৩ পিছিয়ে থেকে প্রথম গেমটি জেতেন ১১-৮ ব্যবধানে। কিন্তু দ্বিতীয় গেম থেকে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন ভারতের আরমান ভাটিয়া। ১১-৯ ব্যবধানে দ্বিতীয় গেম জিতে ম্যাচ সমতায় ফেরান। নির্ণায়ক তৃতীয় গেমে ৮-০ লিড নিয়েছিলেন ডাস্টিন। সেখান ১১-৮ ব্যবধানে গেম এবং চ্যাম্পিয়নশিপও নিশ্চিত করেন আরমান ভাটিয়া।
মিক্সড ডাবলসে আরমান জুটি বেঁধেছিলেন নেদারল্যান্ডসের রুস ভ্যান রিকের সঙ্গে। এই ইভেন্টেও চ্যাম্পিয়ন। ডাচসঙ্গীকে নিয়ে প্রথম গেমটি ১১-৫ ব্যবধানে জেতেন আরমান। দ্বিতীয় গেমটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে দাঁড়ায়। ড্যানি টাউনসেন্ড ও জর্জ ওয়াল জুটি দ্বিতীয় গেম জেতে ১১-১০ ব্যবধানে! এর থেকেই পরিষ্কার, কতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। যদিও তৃতীয় গেমে একবিন্দুও জমি ছাড়েনি আরমান ও তাঁর ডাচসঙ্গী। ১১-১ ব্যবধানে তৃতীয় গেম জিতে ট্রফি নিশ্চিত করেন আরমান ভাটিয়া।
পুরুষদের ডাবলসে আরমানের সঙ্গী ছিলেন হর্ষ মেহতা। তাঁদের প্রতিপক্ষ আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার মিচেল হারগ্রিভস-রোমান এস্ত্রেজা জুটি। ত্রিমুকুটের লক্ষ্য পূরণ থেকে এক কদম দূরে ছিলেন আরমান। যোগ্য সঙ্গ দেন হর্ষ মেহতাও। প্রথম গেমটি সহজেই ১১-৪ ব্যবধানে জেতেন আরমান ও হর্ষ। এখান থেকে আর পিছন ফিরে তাকানোর জায়গায় ছিল না। লক্ষ্য শুধুই চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দ্বিতীয় গেমটিও ১১-২ ব্যবধানে জিতে ঐতিহাসিক ত্রিমুকুটের লক্ষ্য পূরণ করেন আরমান ভাটিয়া।
ভারতে পিকলবলে উন্নতি হচ্ছিল। আরমান ভাটিয়ার এই ত্রিমুকুট জয়ের পর এই খেলার প্রতি আগ্রহ যে আরও বাড়বে এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। হয়তো আরও অনেকেই পেশাদার ভাবে পিকলবলকে বেছে নেবেন। আরমান, হর্ষদের পারফরম্যান্স সেই প্রেরণাই জোগাবে।