দোকান থেকে এক বোতল জল কিনলেন, তারপরে সিল কেটে গলায় ঢেলে দিলেন। গলা তো ভিজল, কিন্তু সেই সঙ্গে শরীরে ঢুকে গেল 2.4 লাখ প্লাস্টিকের টুকরো। ভাবছেন তো, এমনটা আবার হয় নাকি? বিজ্ঞানীরা নতুন গবেষণায় এমনটাই দেখেছেন। পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বোতলের জল বিপজ্জনক। এমনকী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এক লিটার বোতলজাত জলে গড়ে 2.4 লাখ মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায়। এই হিসেব আগের সমীক্ষার তুলনায় 10 থেকে 100 গুণ বেশি বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
মাইক্রোপ্লাস্টিক কী?
মাইক্রোপ্লাস্টিক এক মাইক্রোমিটারের মতো ছোট হতে পারে অর্থাৎ এক মিটারের এক মিলিয়ন ভাগ। অর্থাৎ 5 মিমি পর্যন্ত। ন্যানোপ্লাস্টিক একটি মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট। তার মানে এক মিটারের একশ মিলিয়ন ভাগ। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আমেরিকায় বিক্রি হওয়া জনপ্রিয় শীর্ষ ব্র্যান্ডের বোতলের জলের পরীক্ষা করেছেন। আর তার ফলাফল দেখে অবাক বিজ্ঞানীরাও।
পরীক্ষায় কী দেখা গিয়েছে?
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিটি বোতলে 100 ন্যানোমিটার প্লাস্টিকের কণা ছিল। তাঁরা প্রতি লিটারে 1.1 থেকে 3.7 লাখ ন্যানোমিটার প্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন। আর বাকিটা ছিল মাইক্রোপ্লাস্টিক। 2.4 লক্ষ মাইক্রোপ্লাস্টিকের 90 শতাংশই ন্যানোপ্লাস্টিক। প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।
এক বোতলেই লুকিয়ে সর্বনাশ…
এই গবেষণায় এক লিটার বোতলজাত মিনারেল ওয়াটারে সাত ধরনের সাধারণ প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে। এটি ন্যানোপ্লাস্টিকের মাত্র 10 শতাংশ। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাকিগুলি কী ধরণের প্লাস্টিক তা তারা এখনও জানতে পারেননি। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বোতলের জলে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে, তা আদতে মাটিতে পাওয়া যায়। এমনকী জলে এমন অনেক মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পেয়েছেন, যা কি না মেরুতে উপস্থিত বরফেও পাওয়া যায়। তবে এবার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, যে সেই ধরনের প্লাস্টিক জলের বোতলে কোথা থেকে আসছে? এতে স্বাস্থ্যের কতটা এবং কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এই নিয়ে এখনও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।