গ্রহাণু Bennu থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরছে নাসার স্পেসক্র্যাফট OSIRIS-REx

Sohini chakrabarty |

May 11, 2021 | 3:48 PM

জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে OSIRIS-REx। এখনও দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে পৃথিবীপৃষ্ঠে পৌঁছতে হবে তাকে।

গ্রহাণু Bennu থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরছে নাসার স্পেসক্র্যাফট OSIRIS-REx
হাউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে সংগৃহীত উপাদান।

Follow Us

মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার মহাকাশ অভিযান OSIRIS-REx শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। সোমবার ১০ মে নাসার তরফে জানানো হয়েছে যে OSIRIS-REx অবশেষে গ্রহাণু বেন্নু (Bennu)- এর অরবিট ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে পৃথিবীর উদ্দেশে। তবে তার আগে নমুনাও সংগ্রহ করেছে ওই গ্রহাণু থেকে। জানা গিয়েছে, নাসার মিশনের স্পেস ক্র্যাফট OSIRIS-REx এই অরবিট থেকে মূলত ধুলো সংগ্রহ করেছে গত বছর। এই স্যম্পেল নিয়েই এবার পৃথিবীতে ফিরছে এই মহাকাশ যান।

নাসার তরফে জানানো হয়েছে, গ্রহাণুদের সম্পর্কে গবেষণার জন্য OSIRIS-REx মহাকাশ অভিযান শুরু হয়েছিল আজ থেকে পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। 101955 Bennu গ্রহাণু থেকে অন্তত ৬০ গ্রাম স্যাম্পেল সংগ্রহ করাই ছিল এই মিশনের মূল লক্ষ্য। এই 101955 Bennu গ্রহাণু অনেকটাই পৃথিবীর মতোই। এর মধ্যে রয়েছে কার্বনের উপস্থিতি। তাই সেখান থেকে স্যাম্পেল সংগ্রহ করে পৃথিবীতে এনে গবেষণার ব্যাপারে মুখিয়ে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে OSIRIS-REx। এখনও দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে পৃথিবীপৃষ্ঠে পৌঁছতে হবে তাকে। নাসার ভিডিয়ো ব্রডকাস্টিং ইভেন্টে এই মিশনের প্রধান Dante Lauretta জানিয়েছেন,  গ্রহাণু Bennu থেকে ঘণ্টায় ৬০০ মাইল করে দূরে সরছে OSIRIS-REx।

বলা হচ্ছে, এই স্পেস ক্র্যাফটে ৬০ গ্রামের বেশি ‘ডাস্ট অ্যান্ড ফ্র্যাগমেন্টস’ অর্থাৎ স্যাম্পলে রয়েছে। গ্রহাণু Bennu থেকে এইসব উপাদান সংগ্রহ করা হয়েছে। অ্যাপলো মিশনের সময় মুন রক নিয়ে আসা হয়েছিল পৃথিবীতে। তার পর আর কোনও মহাকাশ অভিযানে এত বেশি পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনা হয়নি। তবে নাসার এই OSIRIS-REx অভিযানে হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ধুলোর সঙ্গে (ডাস্ট পার্টিকল) বেশ কিছু পাথুরে নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে এই স্পেস ক্র্যাফটের মধ্যে।

২০১৬ সালে অভিযান শুরুর ২ বছর পর গ্রহাণু Bennu- র কাছাকাছি পৌঁছেছিল। এরপর ২০১৮ সাল থেকে প্রায় দু’বছর ধরে এই গ্রহাণুর চারপাশের অরবিটে প্রদক্ষিণ করে নমুনা সংগ্রহ করেছে নাসার এই সোলার মিশনের স্পেস ক্র্যাফট। জানা গিয়েছে, এই স্পেস ক্র্যাফটের মধ্যে (বলা ভাল কেন্দ্রস্থল বা পেটের মধ্যে) একটি ক্যাপস্যুল রয়েছে। তার মধ্যেই এইসব নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। আপাতত প্রায় আড়াই বছর ধরে সফর করবে এই স্পেস ক্র্যাফট। তারপর পৌঁছবে পৃথিবীতে। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের কয়েক ঘণ্টা আগে স্পেস ক্র্যাফটের মধ্যে থেকে ওই ক্যাপস্যুল রিলিজ করা হয়। এরপর একটি প্যারাশুটের মাধ্যমে স্লো-ল্যান্ডিং হবে পৃথিবী পৃষ্ঠে।

আরও পড়ুন- ভারত মহাসাগরে ভেঙে পড়েছে চিনের রকেট, তীব্র নিন্দায় সরব নাসা

হাউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে সংগৃহীত উপাদান। খুব সামান্য অংশ নিয়েই বর্তমানে গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ৭৫ শতাংশ নমুনা সংরক্ষণ করে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই গ্রহাণু থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আসলে সৌরজগতের গঠন এবং সৃষ্টির পাশাপাশি পৃথিবীর তৈরি হওয়া এবং তা কীভাবে বাসযোগ্য হয়ে উঠল, এই সবই বুঝতে চাইছেন।

Next Article