Apsara Nuclear Reactor: বার্ধক্যের ঘরে ভারতের ‘অপ্সরা’ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পরিণত হবে জাদুঘরে
Nuclear Reactor: 1957 সালের 20 জানুয়ারী, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এই পারমানবিক চুল্লিটিকে দেশবাসীকে উৎসর্গ করেছিলেন। চুল্লি শুরু হলে তা থেকে নীল রশ্মি বের হয়। এ কারণে নেহেরু এর নাম দেন অপ্সরা।
ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পঞ্চম বৃহত্তম উৎস হল পরমাণু শক্তি। প্রথমেই আসে কয়লা, দ্বিতীয় হল গ্যাস, তৃতীয় বায়ু শক্তি ও চতুর্থ জলবিদ্যুৎ। বর্তমানে ভারতে 22 টি সক্রিয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এশিয়ার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘অপ্সরা’ মুম্বইতে অবস্থিত। এটি ভারত তথা এশিয়ার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। চুল্লিটি জাদুঘরে পরিণত হতে চলেছে। বিশ্বে এর আগে কখনও কোনও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়নি। ট্রম্বেতে ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে (BARC) অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি 4 অগাস্ট, 1956 সালে চালু করা হয়েছিল। তারপর 1957 সালের 20 জানুয়ারী, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এই পারমানবিক চুল্লিটিকে দেশবাসীকে উৎসর্গ করেছিলেন। চুল্লি শুরু হলে তা থেকে নীল রশ্মি বের হয়। এ কারণে নেহেরু এর নাম দেন অপ্সরা। 1 মেগাওয়াট চুল্লিটি 2009 সালে বন্ধ হয়ে যায় এবং তারপর 10 সেপ্টেম্বর 2018-এ অপ্সরা ইউ হিসাবে পুনরায় চালু হয়। বিজ্ঞানীরা পারমাণবিক পদার্থবিদ্যা, চিকিৎসা প্রয়োগ, পদার্থ বিজ্ঞান এবং বিকিরণ নিয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য এটি ব্যবহার করেন।
অপ্সরার শুরুর দিক:
অপ্সরা 1955 সালে বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডঃ হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা ডিজাইন করেছিলেন। ইউনাইটেড কিংডম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে সহায়তা করেছিল। অপ্সরা একটি পুল-টাইপ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল, 80 শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম জ্বালানি ব্যবহার করত। অপ্সরা ছিল সুইমিং পুলের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে একবারে এক মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ উৎপাদিত হত। চুল্লিতে অ্যালুমিনিয়াম-ইউরেনিয়াম মিশ্রিত প্লেট জ্বালিয়ে শক্তি উৎপাদন করা হত। এতে বিশেষ জ্বালানি ব্যবহার করা হত, যা আসত ব্রিটেন থেকে। তারপর 2009 সালে চুল্লিটি বন্ধ হয়ে যায়। ভাভার মতে, পারমাণবিক চুল্লি যে কোনও পারমাণবিক কর্মসূচির মেরুদণ্ড। হোমি জাহাঙ্গীরকে ভারতে পারমাণবিক শক্তির জনক বলা হয়।
জাদুঘরের রূপ নেবে অপ্সরা:
এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের পরিকল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। বিএআরসি-র পরিচালক এবং পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে মোহান্তি Times Of India-কে বলেছেন, “আমরা অপ্সরাকে একটি জাদুঘরে রূপান্তর করতে চলেছি। এর মাধ্যমে ভারতের পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে মানুষ জানতে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বার্ক (BARC) উচ্চ নিরাপত্তা অঞ্চল। এখানে কোনওভাবেই নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা যাবে না। এটি ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির কেন্দ্র। নিরাপত্তার সঙ্গে আপস না করে কীভাবে মানুষকে জাদুঘরে আনা হবে সেটাই প্রশ্ন।” এই কাজে এক বছর বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন মোহান্তি।