মাসের পর মাস, বছরের পর বছর মহাকাশ স্টেশনে থেকে গবেষণা করেন অসংখ্য মহাকাশচারী। এক কথায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়া মহাকাশচারীরা মহাকাশে খুব ব্যস্ত থাকেন। স্টেশনে থাকার সময় তাদের অনেক ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়, পৃথিবীতে তথ্য পাঠাতে হয় এবং পৃথিবী থেকে আসা নতুন তথ্য তাদের পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। তবে এত কিছুর মধ্যে নিজেদের যত্ন নিতে একেবারেই ভোলেন না তারা। বেশ কিছুটা সময় জিমেও দেন। ভাবছেন তো, মহাকাশ স্টেশনে আবার জিম? যেখানে মহাকাশচারীদের সোজা হয়ে দাঁড়ানো মুশকিল হয়ে যায়, সেখানে কীভাবে জিম করা সম্ভব? মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে থাকতে হলে শরীরকে তো সুস্থ রাখতেই হবে। তাই সব অসম্ভবকে সম্ভব করেই জিম করেন প্রত্যেক মহাকাশচারী।
ব্যায়াম রুটিনের একটি অংশ-
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) একটি জিম আছে এবং প্রত্যেক নভোচারীকে সেখানে ব্যায়াম করতে হয়। জিমে যাওয়া মহাকাশচারীদের প্রতিদিনের রুটিন। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন আইএসএসে জিমে যাওয়া এত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, শূন্য মাধ্যাকর্ষণ বা মাইক্রো মাধ্যাকর্ষণ (মাইক্রোগ্র্যাভিটি) পরিবেশে মহাকাশচারীরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের শারিরীক সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই নিজেদের সুস্থ রাখতে তারা ব্যায়াম করেন জিমে।
হাঁটা বা দৌড়ানো যাবে না-
জিমে যাওয়া মানেই ট্রেডমিলে ঘন্টা খানেক হাঁটা, দৌড়িয়ে ঘাম ঝড়ানো। কিন্তু এমনটা পৃথিবীতে হয়, মহাকাশে নয়। তাহলে জিম হয় কীভাবে? জানলে অবাক হবেন, মহাকাশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এমনটা হয় না। এতে হাঁটা বা দৌড়ানোর মতো কোনও কাজই মহাকাশচারীরা করতে পারে না।
প্রতিদিন কমপক্ষে দুই ঘন্টা ব্যায়াম-
মহাকাশচারীদের শূন্য মাধ্যাকর্ষণ বা মহাকর্ষের মাইক্রো গ্র্যাভিটি পরিবেশে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই ঘন্টা ব্যায়াম করতে হয়। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তিনটি বড় ব্যায়ামের সরঞ্জাম রয়েছে। একটি ট্রেডমিল, একটি সাইকেল এবং একটি অ্যাডভান্সড রেজিস্টিভ এক্সারসাইজ ডিভাইস (ARED) এখানে ইনস্টল করা হয়েছে। তবে ট্রেডমিলে তারা দৌড়াতে পারেন না। ট্রেডমিল এবং সাইকেলে নিজেদেরকে তারা যন্ত্রপাতির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। আর সেভাবেই ব্যায়াম করে ওজন কমান মহাকাশে থাকা সমস্ত মহাকাশচারী।