West Bengal: গাফিলতিতে নষ্ট হল শিশুর চোখ!

TV9 Bangla Digital | Edited By: Tapasi Dutta

Nov 01, 2023 | 8:56 PM

Bardhaman Crime News: নবজাতকের ভুল চিকিৎসার কারণে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন শিশুর বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

নবজাত শিশুর ভুল চিকিৎসার কারণে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন শিশুর বাবা। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার এই অভিযোগ করেন শিশুটির পিতা। তার দাবি, এ বছরেরই ২৪ জুন প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে বর্ধমানের বাম চাঁদাইপুরেএকটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি হন শিশুর মা।জানা গেছে, বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের কাছে একটি অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা এই চৌধুরী পরিবারের বধূ মাত্র ৭ মাস গর্ভাবস্থায় অত্যধিক প্রি ম্যাচিওর শিশুর জন্ম দেন। জন্মের পর থেকেই শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুকে এনআইসিইউ বা নিকু বিভাগে ভর্তি রাখার পরামর্শ দেন। সেখানে ৪৩ দিন পর্যন্ত ভর্তি থাকার পর শিশুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শিশুর পরিবারকে জানানো হয়, তার ছেলে প্রিম্যাচিওর হবার জন্য চোখে সমস্যা আছে। আর. ও পি প্রসিডিওর করাতে হবে। চৌধুরী দম্পতি ওখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞ জানিয়ে দেন, এই সমস্যা প্রিম্যাচিওর বেবির ক্ষেত্রে সাধারণত হয়ে থাকে। পরিবারের দাবি, তারা জেনেছেন, এর চিকিৎসা দু থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই করতে হয়।

হিতেশ চৌধুরী জানান, ‘এরপরে আমরা দক্ষিণ ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সেখানেও আমাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবার কথা বলা হয়েছে। তারপরেও দুটি অপারেশন করা হয়। পরিবারের দাবি, তবে দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি ফিরে আসার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়ে দেন তারা। হিতেশবাবু জানান, ‘বর্ধমানের ওই বেসরকারি হাসপাতাল প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা বিল নেবার পরেও আমার ছেলের এতবড় ক্ষতি হয়ে গেল।” তিনি বলেন, ” আমি স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি। প্রয়োজনে আমি আদালতের শরনাপন্ন হব।।’ ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার চার মাসের ছেলের বাম চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এনআইসিইউ-৩ সুবিধা থাকা একটা হাসপাতালে কেন আরপি স্ক্রিনিং করানো হল না।?” চিকিৎসার বিভিন্ন নথি দিয়ে শিশুর বাবা হিতেশ চৌধুরী জেলাশাসক, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানান। তারপরে তিনি ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলো’ হেল্পলাইনে ফোন করে গোটা ঘটনার কথা জানান। ১৬ অক্টোবর জেলা স্বাস্থ্য অফিসে তাঁকে ডেকে তার বয়াণ লিপিবদ্ধ করা হয়। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, ‘আমরা শিশুটির বাবা মায়ের বক্তব্য সহ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখেছি। হাসপাতালের কাছ থেকেও এই বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে পুরো বিষয়টির তদন্ত শুরু হয়েছে।”

ওই হাসপাতালের শিশু বিভাগের ইনচার্জ ডা: মীর. টি. জামান জানান, তাদের কাছে প্রথম অগ্রাধিকার ছিল ওই শিশুটিকে চরম বিপন্নতা থেকে বাঁচিয়ে আনা। মানবিক দিক এবং চিকিৎসার প্রোটোকল মেনেই তারা কাজ করেছেন। পরিবারের সদস্যদের সব সম্ভাবনা জানানো হয়েছিল। শিশুটিকে প্রথমে ১৪ দিন ভেন্টিলেশনের মধ্যে এবং পরে ১০ দিন সি প্যাপ এবং পরে আরো ১০ দিন অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়। শিশু স্থিতিশীল না হলে আর ও পি করা সম্ভব ছিল না।এছাড়াও অক্সিজেন সাপোর্ট আর ও পির জন্য দায়ি হলেও সেই মুহূর্তে শিশুটির জীবন বাঁচানোই ছিল মুখ্য। আগে যেমন পরিবারকে জানান হয়েছিল। তেমনিভাবেই শিশুটি অক্সিজেন সাপোর্ট থেকে বেরোনোর পরই তাদের মেডিকেল কলেজে যাবার কথা বলা হয়।এছাড়াও তিনি জানান, প্রথমে শিশুটির শারীরিক গঠনেই বড়ধরণের নানা সমস্যা ছিল।সে পঙ্গু হয়ে যেতে পারত। সেই অবস্থায় তাকে কোনোওভাবেই দক্ষিণ ভারত বা নিদেনপক্ষে কলকাতায় নিয়ে চোখের চিকিৎসা করা কার্যত অসম্ভব ছিল।তিনি আরো জানান, শিশুটিকে প্রাণে বাঁচাতে যে পর্যায়গুলো পেরোতে হয়েছে তাতে আর ও পি হওয়া খুব স্বাভাবিক। ‘