Basirhat Police For Old Age People: একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধার জন্য পুলিশের ‘অবলম্বন’
পুলিশি সহায়তায় 'অবলম্বন' করে একাকীত্ব জীবনে আশার আলোর খোঁজে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। বৃদ্ধাশ্রম নয়, একাকীত্বদের সব রকম পরিষেবা দেবে রাজ্য পুলিশের 'অবলম্বন'। এই ধরনের পরিষেবা পেয়ে স্বভাবতই আপ্লুত সমাজের প্রবীণরা।
ক্ষীণ হয়েছে চোখের দৃষ্টি, ঝুল ধরেছে চামড়ায়, বয়সের ভারে মূহ্যমান হয়েছেন তারা সকলেই। তারা হলেন সমাজের সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। তাদের সন্তানরা কেউ চাকরি সূত্রে রাজ্য, দেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করছেন। কারোর সন্তানরা তাদের বাবা-মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আবার কারোর একমাত্র কন্যা সন্তানের বিয়ে হওয়ায় চলে গিয়েছে শ্বশুরবাড়ি। আবার কারোর সন্তানের নানান কারণে মৃত্যু হয়েছে। এমনকি কোনো বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার স্বামী বা স্ত্রী মৃত্যু হয়েছে। যার ফলে একাকীত্ব তাদের সব সময়ের সঙ্গী। দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা করা, ওষুধের পরিষেবা বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মত একাধিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন এই বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। তাই সেই নিঃসঙ্গতা বা একাকীত্ব কাটিয়ে তাদের সমস্ত রকম পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে এলো বসিরহাট পুলিশ জেলা। বসিরহাট ও টাকি পৌরসভার ৪২ জন নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা তথা বৃদ্ধ দম্পতিদের চিহ্নিত করে তাদেরকে পরিষেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো পুলিশের পক্ষ থেকে। ‘অবলম্বন’ এই প্রকল্প থেকে পরিষেবা পাবেন সমাজের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ডক্টর জবি থমাস কে. বলেন, “যে সমস্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেন, তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে আমাদের সিভিক ভলেন্টিয়াররা। তাদের খোঁজখবর নেওয়া হবে। এমনকি তাদের কোনরকম ওষুধ বা অন্যান্য পরিষেবা লাগবে কিনা সেগুলি সম্পর্কে তারা খোঁজ নেবেন। তারপর আমরা তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।” এই সমস্ত বৃদ্ধ বৃদ্ধাদেরকে পুলিশের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে একটি মোবাইল নম্বরে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে টাকি ও বসিরহাট পৌরসভা। হাসনাবাদ থানার কনফারেন্স রুমে এদিনের এই ‘অবলম্বন’ প্রকল্পের সূচনা লগ্নে বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সহ উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৌতম ব্যানার্জি, বসিরহাটের মহকুমা শাসক মৌসম মুখার্জি, বসিরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অদিতি মিত্র রায়চৌধুরী ও টাকি পৌরসভার উপ পৌর প্রধান ফারুখ গাজী সহ পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এক বৃদ্ধা বলেন, “তাদের সন্তানরা দীর্ঘদিন পরে পরে বাড়িতে আসে। আবার অনেক সময় আসেও না। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আমরা যথেষ্টই উপকৃত হবো।” প্রাথমিক পর্যায়ে শহর টাকি ও বসিরহাট এলাকায় এই প্রকল্প চালু হলেও আগামী দিনে বসিরহাট পুলিশ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। এই ধরনের পরিষেবা পেয়ে স্বভাবতই আপ্লুত সমাজের প্রবীণরা।