কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে মৃত্যু! এখন আর এ নিয়ে সন্দেহের খুব একটা অবকাশ নেই। ইউরোপ ও আমেরিকায় কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ থেকে ২০২২—তিন বছরে ইউরোপের মৃত্যু হার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি, এর কারণ খুঁজতেই ৪৩টি দেশে গবেষণা শুরু হয়। এখানে তিনটি বিষয় উঠে এল। প্রথমত, এই তিন বছরে কোভিডের জন্য মৃত্যুর বেড়েছে। তবে শুধু কোভিডকেই এজন্য দায়ী করা যাবে না। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি ভ্যাকসিন নেওয়ার আড়াই তিন বছর পরেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয়ত, ২০২১ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই ভ্যাকসিনেটেড এবং এদের বয়স ৪০-এর কম। এদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ হঠাত্ করেই মারা গিয়েছেন। তৃতীয়ত, নন-ভ্যাকসিনেটেডদের তুলনায় ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষের মৃত্যুর ঘটনা বেশি। বিএমজে পাবলিক হেলথ জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এবং প্রকাশিত হতেই দুনিয়া জুড়ে আলোড়ন তৈরি পড়েছে। হওয়ারই কথা। কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নির্মাতা সংস্থার স্বীকারোক্তির কথা আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে। এই তো গত মাসের কথা। অ্যাস্ট্রোজেনকা জানিয়েছিল, কয়েকটি ক্ষেত্রে তাঁদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ধরা পড়েছে। নির্মাতা সংস্থা দাবি করে, তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন থেকে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া বা টিটিএস-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে সংস্থার দাবি ছিল, প্রতি ৫ লক্ষে এক- আধজনের ক্ষেত্রেই এটা হতে পারে। শুধু কোভিড নয়, যে কোনও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও নাকি এটা ঘটতে পারে। এই দাবির পরপরই বাজার থেকে কোভিড ভ্যাকসিনের স্টক তুলে নিয়েছিল অ্যাস্ট্রোজেনেকা। এই পরিস্থিতিতে দু-তিনটে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া দরকার। এক, ভ্যাকসিনেটেডদের মৃত্যুর আগে কী ধরণের উপসর্গ দেখা গিয়েছিল? দুই, কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এই মৃত্যু হতে পারে, এমনটা কোন ভিত্তিতে বলা হচ্ছে? গবেষণাপত্রে দাবি, মৃত্যুর আগে ভ্যাকসিনেটেডদের মূলত চারটি উত্সর্গ দেখা গিয়েছিল। রক্ত চলাচলে সমস্যা, মস্তিস্কে ক্লট, হাত-পায়ে ব্যথা ও ক্লান্তি। এদের একটি অংশ ব্রেন স্ট্রোকেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখানে আরও একটা বিষয় উল্লেখ করতেই হবে। কোভিডের সময় বা তার পর আমেরিকা ও ইউরোপে যে সব কমবয়সী হাসপাতালে ভর্তি হন, তাঁদের বড় অংশই এইসব সমস্যায় ভুগছিলেন। এদের একটা অংশ কখনই কোভিডে আক্রান্ত হননি এবং ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের ভিরজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের প্রধান এটার বস। তাঁর দাবি, ইউরোপে মৃত্যুহার বাড়ার পিছনে কোভিড ভ্যাকসিনের যে ভূমিকা রয়েছে, তা নিয়ে আর কোনও সংশয় থাকা উচিত নয়। তবে শুধুমাত্র ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এঁদের মৃত্যু হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। এজন্য আরও গভীরে গবেষণা চালানো দরকার। এত কোটি কোটি মানুষ ভ্যাকসিন নিলেন। তার মধ্যে একটি ছোট অংশের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন প্রাণঘাতী হয়ে উঠল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেও আরও অপেক্ষা করতে হবে। এবার সেই বিষয়ে আছি, যেটা আমার- আপনার সবার প্রশ্ন। আমরাও তো ভ্যাকসিন নিয়েছি। আমরা কী ভাবে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকব? উত্তরে বলি, ভারতে ভ্যাকসিনের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনও কোনও রিপোর্ট বা অভিযোগ ওঠেনি। কোভিডের ঢেউ থিতিয়ে যাওয়ার পর এদেশে মৃত্যুর হারেও তেমন কোনও অস্বাভাবিক বদল আসেনি। তাই আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে করছেন চিকিত্সকরা। তাঁদের বক্তব্য, শারীরিক সমস্যা হলে চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তবে অকারণ উদ্বিগ্ন হয়ে ছোটাছুটির প্রয়োজন নেই।
কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে মৃত্যু! এখন আর এ নিয়ে সন্দেহের খুব একটা অবকাশ নেই। ইউরোপ ও আমেরিকায় কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০২০ থেকে ২০২২—তিন বছরে ইউরোপের মৃত্যু হার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি, এর কারণ খুঁজতেই ৪৩টি দেশে গবেষণা শুরু হয়। এখানে তিনটি বিষয় উঠে এল। প্রথমত, এই তিন বছরে কোভিডের জন্য মৃত্যুর বেড়েছে। তবে শুধু কোভিডকেই এজন্য দায়ী করা যাবে না। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি ভ্যাকসিন নেওয়ার আড়াই তিন বছর পরেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয়ত, ২০২১ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই ভ্যাকসিনেটেড এবং এদের বয়স ৪০-এর কম। এদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ হঠাত্ করেই মারা গিয়েছেন। তৃতীয়ত, নন-ভ্যাকসিনেটেডদের তুলনায় ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষের মৃত্যুর ঘটনা বেশি। বিএমজে পাবলিক হেলথ জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এবং প্রকাশিত হতেই দুনিয়া জুড়ে আলোড়ন তৈরি পড়েছে। হওয়ারই কথা। কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নির্মাতা সংস্থার স্বীকারোক্তির কথা আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে। এই তো গত মাসের কথা। অ্যাস্ট্রোজেনকা জানিয়েছিল, কয়েকটি ক্ষেত্রে তাঁদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ধরা পড়েছে। নির্মাতা সংস্থা দাবি করে, তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন থেকে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া বা টিটিএস-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে সংস্থার দাবি ছিল, প্রতি ৫ লক্ষে এক- আধজনের ক্ষেত্রেই এটা হতে পারে। শুধু কোভিড নয়, যে কোনও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও নাকি এটা ঘটতে পারে। এই দাবির পরপরই বাজার থেকে কোভিড ভ্যাকসিনের স্টক তুলে নিয়েছিল অ্যাস্ট্রোজেনেকা। এই পরিস্থিতিতে দু-তিনটে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া দরকার। এক, ভ্যাকসিনেটেডদের মৃত্যুর আগে কী ধরণের উপসর্গ দেখা গিয়েছিল? দুই, কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এই মৃত্যু হতে পারে, এমনটা কোন ভিত্তিতে বলা হচ্ছে? গবেষণাপত্রে দাবি, মৃত্যুর আগে ভ্যাকসিনেটেডদের মূলত চারটি উত্সর্গ দেখা গিয়েছিল। রক্ত চলাচলে সমস্যা, মস্তিস্কে ক্লট, হাত-পায়ে ব্যথা ও ক্লান্তি। এদের একটি অংশ ব্রেন স্ট্রোকেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। এখানে আরও একটা বিষয় উল্লেখ করতেই হবে। কোভিডের সময় বা তার পর আমেরিকা ও ইউরোপে যে সব কমবয়সী হাসপাতালে ভর্তি হন, তাঁদের বড় অংশই এইসব সমস্যায় ভুগছিলেন। এদের একটা অংশ কখনই কোভিডে আক্রান্ত হননি এবং ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের ভিরজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের প্রধান এটার বস। তাঁর দাবি, ইউরোপে মৃত্যুহার বাড়ার পিছনে কোভিড ভ্যাকসিনের যে ভূমিকা রয়েছে, তা নিয়ে আর কোনও সংশয় থাকা উচিত নয়। তবে শুধুমাত্র ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এঁদের মৃত্যু হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। এজন্য আরও গভীরে গবেষণা চালানো দরকার। এত কোটি কোটি মানুষ ভ্যাকসিন নিলেন। তার মধ্যে একটি ছোট অংশের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন প্রাণঘাতী হয়ে উঠল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেও আরও অপেক্ষা করতে হবে। এবার সেই বিষয়ে আছি, যেটা আমার- আপনার সবার প্রশ্ন। আমরাও তো ভ্যাকসিন নিয়েছি। আমরা কী ভাবে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকব? উত্তরে বলি, ভারতে ভ্যাকসিনের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনও কোনও রিপোর্ট বা অভিযোগ ওঠেনি। কোভিডের ঢেউ থিতিয়ে যাওয়ার পর এদেশে মৃত্যুর হারেও তেমন কোনও অস্বাভাবিক বদল আসেনি। তাই আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে করছেন চিকিত্সকরা। তাঁদের বক্তব্য, শারীরিক সমস্যা হলে চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তবে অকারণ উদ্বিগ্ন হয়ে ছোটাছুটির প্রয়োজন নেই।