AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

West Bengal Jatra: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে যাত্রা শিল্প

West Bengal Jatra: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে যাত্রা শিল্প

TV9 Bangla Digital

| Edited By: Moumita Das

Updated on: Sep 12, 2023 | 8:26 PM

Share

ঘরে ঘরে টিভি আর হাতে হাতে মোবাইল।সে সবেই সস্তা এবং সহজ বিনোদনের বহু রসদ খুঁজে নেন মানুষ। যার প্রভাবে কৌলিণ্য হারিয়ে ক্রমেই ক্ষয়িষ্ণু হতে হতে প্রায় বিলুপ্তপ্রায় শিল্পে পরিণত হয়েছিল বাংলার যাত্রাশিল্প। আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে করোনা মহামারির প্রভাবে।মনে হয়েছিল যাত্রাশিল্প বুঝি নির্বাসনে গেল।

ঘরে ঘরে টিভি আর হাতে হাতে মোবাইল।সে সবেই সস্তা এবং সহজ বিনোদনের বহু রসদ খুঁজে নেন মানুষ। যার প্রভাবে কৌলিণ্য হারিয়ে ক্রমেই ক্ষয়িষ্ণু হতে হতে প্রায় বিলুপ্তপ্রায় শিল্পে পরিণত হয়েছিল বাংলার যাত্রাশিল্প। আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে করোনা মহামারির প্রভাবে।মনে হয়েছিল যাত্রাশিল্প বুঝি নির্বাসনে গেল। তবে এ বিষয়ে আপাতত আর হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আবারও ক্ল্যারিওনেট, কর্নেট, ফ্লুটের সমবেত কনসার্টে জেগে উঠবে শীতের রাত ও গ্রাম বাংলা। যাত্রাপালার আসর বসবে শহরে, গ্রামে।প্রিয় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য মানুষও ভিড় জমাবেন যাত্রা আসরে।যাত্রাশিল্পে নবজোয়ার আসার সুখবর দিচ্ছেন যাত্রার কলাকুশলী থেকে শুরু করে যাত্রাদলের ম্যানেজার, গদিঘরের কর্নধার সকলেই।বাংলা লোকসংস্কৃতির প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিনোদন মাধ্যমগুলির অন্যতম হল- যাত্রাপালা।মেদিনীপুরের মানুষ সংস্কৃতিবান। চিরায়ত সংস্কৃতির পীঠস্থান এই অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার (পূর্ব, পশ্চিম ও ঝাড়গ্রাম ) স্বাভাবিকভাবে ঠাঁই পেয়েছে যাত্রা, নাটক, থিয়েটারও। বর্তমানে যাত্রার একটা বৃহত্তম বাজার তৈরি হয়েছে জেলায়।নন্দকুমার ও বেলদাকে বলা হয় ‘মেদিনীপুরের চিৎপুর’।কিন্তু চটুল এবং সস্তার সংস্কৃতির বৃদ্ধিতে যাত্রা সংস্কৃতির নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেযাত্রাশিল্পের।স্তিমিত হতে থাকে যাত্রা নিয়ে জনমানসে তৈরি হওয়া আঞ্চলিক ক্লাব, গ্রাম কমিটি, বিদ্যালয় কিংবা কোনও প্রতিষ্ঠান তাদের মেলা উৎসবে যাত্রাশিল্প থেকে মুখ ফেরানোয় হতাশাজনক হয়ে ওঠে যাত্রাশিল্পকে ঘিরে তৈরি হওয়া অন্নসংস্থানের পথও। তবুও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বুকিং এজেন্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি যাত্রার বুকিং বেড়েছে। তাঁদের কথায়, বিলুপ্তপ্রায় যাত্রাকে ফিরিয়ে আনার নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। যাত্রা দলগুলির তরফেও বদল আনা হয়েছে নানা ভাবনায়।বর্তমান টিভি ধারাবাহিকের যুগে যাত্রার কাহিনী নির্মাণে পৌরাণিক, ঐতিহাসিকের পরিবর্তে সামাজিক এবং রাজনৈতিক পটভূমির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বিশেষ ভাবে।তেমনই জোর দেওয়া হচ্ছে বর্তমান যুগোপযোগী অভিনয়ের ধারায়। আর তার প্রভাবেই নবযাত্রা শুরু হয়েছে বাংলার যাত্রাপালার। নন্দকুমারে রয়েছে নাগ কোম্পানি, দেবীপল্লী যাত্রা সমাজ, যাত্রা নিকেতন, বিষ্ণুলোক, অগ্নিবীণা,স্টার,উমা,বনমালী, কল্যাণী অপেরার মতো একাধিক নামকরা যাত্রাদল। নন্দকুমার, নিমতৌড়ি এলাকার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে যাত্রা দলগুলির বিভিন্ন পালার মহড়া।সেই সব যাত্রাদলের লোকজন তাঁদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছেন, যাত্রাপালার সুদিন ফিরছে। কল্যাণী অপেরার ‘ চাঁদের ঘরে চন্দ্রবোড়া’ যাত্রাপালায় এবার নায়কের ভূমিকায় রয়েছেন অর্ণব ঘোষ। ১০ বছর ধরে জড়িয়ে যাত্রা অভিনয়ের সঙ্গে।তাঁর কথায়, যাত্রা আবার স্বমহিমায় মাঠে ফিরছে।এ জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন তিনি। অর্ণব বলেছেন, ‘ যাত্রাপালাকে মাঠমুখী করে তুলতে বর্তমান সরকারের ভূমিকা অপরিসীম। দুঃস্থ ও বয়স্ক যাত্রাশিল্পীদের অনুদান,যাত্রাদলের উন্নয়ন থেকে শুরু করে সরকারি নানা মেলা, অনুষ্ঠানে যাত্রাকে প্রাধান্য দিয়েছে রাজ্যের সরকার। তাছাড়া যুগোপযোগী কাহিনী নির্মাণ ও অভিনয়ে জোর দিচ্ছি আমরা।তাতেই জনমানসে যাত্রা নিয়ে নতুন উন্মাদনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাত্রা শিল্পে সত্যি সত্যি নতুন জোয়ার এসেছে।’ একই কথা পালার অপর অভিনেতা অরুনাভ দত্তেরও। তাঁর কথায়, সময়ের ধারায় যাত্রাও এখন আরও আধুনিক এবং স্মার্ট।স্বর্ণ মঞ্জরী যাত্রা দলের ম্যানেজার গোবিন্দ প্রামাণিকও স্বীকার করলেন যাত্রাপালার সুদিন ফেরার কথা। তিনি বলেন, ‘১৪৩০ বঙ্গাব্দে যাত্রার বায়না বেশ ভাল। নতুন দলের সংখ্যাও বেড়েছে। পুরোনোরা তো আছেনই নতুন নতুন অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও আসছেন যাত্রায়। নতুন আঙ্গিকের পালা তৈরি হচ্ছে। ফলে যাত্রার প্রতি আবারও মানুষের ঝোঁক বাড়ছে। ভাল বায়না হচ্ছে।’ দুই মেদিনীপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে ছাড়িয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বহু ক্লাব, সংস্থা এবার তাঁদের দুর্গাপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, কালীপুজো, বাসন্তীপুজোয় যাত্রাপালার উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে যাত্রার এই বায়না বৃদ্ধি দেখে আশাবাদী হয়ে উঠছেন গদিমালিক অর্থাৎ যাত্রা বুকিং অফিসের কর্নধার অক্ষয় দুয়ারী। নন্দকুমারের যাত্রাপাড়ায় ১৯ বছর কাটানো নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘ বিগত বছরের তুলনায় এবার যাত্রার বায়না অনেক ভাল। আর এবার বহু আগে থেকেই যাত্রার বায়না শুরু হয়ে গেছে। অন্যান্য বছরে আমরা দুর্গাপুজোর আগে আগে বুকিং কাউন্টার খুলতাম। এবার রথের দিন থেকেই শুরু করেছি। এখনও বায়না চলছে।’

Published on: Sep 12, 2023 07:09 PM