Manik Bhattacharya News: ‘বাম আমলেও চাকরি বিক্রি’, তাপসের পর্দাফাঁস করলেন প্রতিবেশীরা
তখনও নাকি শাসক দল অর্থাৎ বামেদের প্রভাব খাটিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাঁশকুড়ার বেশ কয়েকজনকে দমকলে চাকরি পাইয়ে দেন তাপস, দাবি পড়শিদের।
পূর্ব মেদিনীপুর: সুপ্রিম কোর্টে মানিক ভট্টাচার্যের স্বস্তির মধ্যেও তদন্তে অলআউট ইডি। এবার মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের কারবারে নজর কেন্দ্রীয় এজেন্সির। ইতিমধ্যেই ইডির আতসকাচে তাপসের মিনার্ভা টিচার্স ট্রেনিং সংস্থা। নব্বইয়ের দশকে কোচিং সেন্টার দিয়ে শুরু, তখন থেকেই পাঁশকুড়ার ভিটে ছেড়ে কলকাতায় বাস করা শুরু করেন তাপস মণ্ডল। খুব প্রয়োজন না থাকলে তিনি গ্রামের বাড়িতে যেতেন না বলেই খবর। ধীরে ধীরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনিং সেন্টার খুলে বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরির টোপ দিতেন। বৃহস্পতিবার ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা তাঁর। ফোনে টিভি নাইন বাংলাকে জানিয়েছিলেন তিনি বাইরে রয়েছেন, কলকাতা ফিরেই দেখা করবেন।
বাড়ি থেকে দফতর, কলকাতার সল্টলেক থেকে বারুইপুর, স্ক্যানারে উঠে আসে তাপসের একাধিক ডেরা। এই সব জায়গা থেকেই নাকি চলত চাকরি বিক্রির কারবার, দাবি ইডির তদন্তকারীদের। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে রাশি রাশি নথিও। জেলায় জেলায় বেসরকারি বিএড কলেজ খেকেই প্রার্থী বাছাই করে ছোট ছোট অফিসেই লাখ লাখ টাকার ডিল করতেন নিয়োগ চক্রের মিডলম্যান। আর সব কিছুই মানিক যোগের সাহায্যে হত বলে অভিযোগ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও নাকি নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাপসের। শাসক যোগেই রাতারাতি ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে তাঁর, সূত্রের খবর। ৩০টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, বেনামে এনজিও, একাধিক মোবাইল নম্বর সব কিছুই এখন ইডির নজরে।
পাঁশকুড়ায় তাপস মণ্ডলের পাড়ায় গিয়েছিল TV9 বাংলা। তাঁর এক প্রতিবেশী জানান, ‘পাঁশকুড়াতে প্রচুর টাকার জালিয়াতি করেছেন তিনি। তাপস মণ্ডল প্রচুর টাকা চিটিংবাজি করেছেন, ওঁর চিটফান্ড ছিল। একবার তিনি চিটফান্ডের জন্য গ্রেফতারও হন’। বাম আমলের দমকল মন্ত্রী রাম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরেই তাঁর সংস্থার প্রথম পথ চলা। তখনও নাকি শাসক দল অর্থাৎ বামেদের প্রভাব খাটিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে পাঁশকুড়ার বেশ কয়েকজনকে দমকলে চাকরি পাইয়ে দেন তাপস, দাবি পড়শিদের। বাম আমলে প্রথমে সিপিএম, পরে মার্কসিস্ট ফরওয়ার্ডে যোগ দেন। আশির দশকে জেলা সভাপতি হন। অভিযোগ, ওই সময়ই পাঁশকুড়া স্টেশনের সামনে মিনার্ভা নামে চিটফান্ডের অফিস খোলেন তাপস মণ্ডল। প্রায় ৭ বছর এলাকার মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে, তারপরই ফাঁস হয় আসল কীর্তি। ২০১১ সালে তৃণমূল জমানার শুরু। আবারও শাসক দলের ছত্রছায়ায় ঢুকে পড়েন তাপস। ২০১৮ তে ফের প্রত্যাবর্তন তাপসের। সূত্রের খবর, তিনি টাকার বিনিময়ে চাকরি দিতেন। ভাইয়ের বউকেও চাকরি করিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। অর্থাৎ প্রথমে বাম, তারপর তৃণমূল, শাসকের হাত ধরে বাড়বাড়ন্ত তাপসের। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ মানতে নারাজ বাম- তৃণমূল দুই শিবিরই।