Jiah Khan Case Update: জিয়ার নষ্ট ভ্রূণকে বাথরুমে ফ্লাশ করেছিলেন সূরজ পাঞ্চোলি?
কী হয়েছিল সে রাতে? দেখে নেওয়া যাক জিয়ার মৃত্যুর টাইমলাইন। ২০১৩-র ৩ জুন মুম্বইয়ের জুহুর ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হয় জিয়ার দেহ। সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। সে সময় জিয়ার বয়স মাত্র ২৫ বছর। প্রাথমিকভাবে পুলিশ আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করে জিয়ার মৃত্যুকে। কিন্তু মৃত্যুর একদিন পর জিয়ার মা দাবি করেন, মেয়ে আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে খুন করা হয়েছে
কোন পথে মামলা?
কলেজ পড়ুয়া দুই কিশোরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। ছুটি কাটাতে বন্ধুর বাড়িতে এসে তার বাবার প্রেমে পড়ে যায় মেয়ে। ‘নিঃশব্দ’ ছবির সেই অসম প্রেমের নায়িকা জিয়া খান প্রথম ছবিতেই চমকে দিয়েছিলেন সকলকে। জিয়ার মৃত্য়ুতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বলিউড। দীর্ঘ ১০ বছর পর অবশেষে রায় ঘোষণা হল জিয়ার আত্মহত্যার মামলার। তৎকালীন প্রেমিক সূরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছিল, উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে অভিনেতাকে মঙ্গলবার নির্দোষ ঘোষণা করল বিশেষ সিবিআই আদালত।
আত্মহত্যা নাকি খুন?
কী হয়েছিল সে রাতে? দেখে নেওয়া যাক জিয়ার মৃত্যুর টাইমলাইন। ২০১৩-র ৩ জুন মুম্বইয়ের জুহুর ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হয় জিয়ার দেহ। সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। সে সময় জিয়ার বয়স মাত্র ২৫ বছর। প্রাথমিকভাবে পুলিশ আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করে জিয়ার মৃত্যুকে। কিন্তু মৃত্যুর একদিন পর জিয়ার মা দাবি করেন, মেয়ে আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে খুন করা হয়েছে।
গ্রেফতার হন সূরজ
জুন মাসের ১০ তারিখ জিয়ার প্রাক্তন প্রেমিক সূরজ পাঞ্চোলিকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয় সূরজের বিরুদ্ধে। ওই দিনই জিয়ার ফ্ল্যাট থেকে তাঁর হাতে লেখা এক ছয় পাতার সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়। যেখানে সূরজের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগের কথা লেখা ছিল।
গর্ভবতী হয়ে পড়েন জিয়া
প্রকাশ্যে আসে ময়নাতদন্তের রিপোর্টও। সেখানে দাবি করা হয়, গলায় ফাঁস লাগানোর জেরে মৃত্যু হয়েছে জিয়ার। প্রায় ২২ দিন জেলে কাটানোর পর ২০১৩-এর ২ জুলাই বম্বে আদালত সূরজের জামিন মঞ্জুর করে। সে সময় বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে জিয়ার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া ও গর্ভপাতের কাহিনীও প্রকাশ্যে আসে। এমনকি জিয়া নিজেও তাঁর সুইসাইড নোটে জানান গর্ভপাতের কথা। বেশ কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়, চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি।
ভ্রূণকে বাথরুমে ফ্লাশ!
সন্তানসম্ভবা—এ কথা জানার পর গর্ভপাতের ওষুধ খান জিয়া। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাত শুরু হয় তাঁর, দাবি করেছিলেন জিয়ার মা। জিয়া ফোন করেন সূরজকে। জিয়ার মৃত্যুর পর বলিউডের এক সূত্র সে সময় এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ওর ব্যথা হচ্ছিল। ওকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনাটি বাইরে বেরিয়ে আসার ভয়ে জিয়াকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে মৃত ভ্রুণকে নিজেই হাত দিয়ে বের করে বাথরুমে ফ্লাশ করে দেন সূরজ।”
সিবিআই তদন্তের দাবি
২০১৩-এর অক্টোবরে জিয়ার মা রাবিয়া খান ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেন। তিনি দাবি করেন, সূরজের সঙ্গে সম্পর্কে ক্রমাগত অত্যাচারিত হতে-হতেই চরম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে জিয়া। ২০১৪ সালে বম্বে আদালত জিয়ার মৃত্যু মামলা সিবিআইকে হস্তান্তর করে। মৃত্যু মামলায় সূরজের বাড়িতে তল্লাশিও চালায় সিবিআই। জিয়া যে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছিলেন, তাতে লেখা ছিল, গর্ভপাতের কথা। লেখা ছিল শারীরিক অত্যাচারের কথাও। প্রাক্তন অর্থাৎ সূরজের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন মৃতা।
সিবিআইয়ের চার্জশিট পেশ
তদন্তভার হস্তান্তরিত হওয়ার পর ২০১৫-র ৯ ডিসেম্বর প্রথম চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। চার্জশিটে সূর্যের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনে সিবিআই। যদিও আত্মহত্যা ছাড়া আর অন্য কোনও ভাবে জিয়ার মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ খারিজ করে দেয় সিবিআই।
খারিজ হল আবেদন
২০১৭ সালে মেয়ের মৃত্যুর তদন্তের জন্য রাবিয়া খান বম্বে হাইকোর্টে বিশেষ তদন্তকারী দল বা এসআইটি-র হস্তক্ষেপ দাবি করেন। বিরোধিতা করে সিবিআই। পরে যদিও সেই আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে যায়।
বেকসুর খালাস সূরজ
২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিল, মৃত্যুর প্রায় দশ বছর পর সূরজকে নির্দোষ ঘোষণা করল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বিচারক এএস সইদ সূরজকে বেকসুর বলে রায় দেন।