Darkeshwar: দারকেশ্বরে বালি তুলতে গিয়ে হাতে ঠেকেছিল, ডাঙায় তুলতেই প্রায় ১০০০ বছরের পুরনো দেব দর্শনে পড়ে গেল লাইন
Darkeshwar: শনিবার বিকালে ওন্দা ব্লকের ওলা দুবরাজপুর এলাকায় দারকেশ্বর নদী গর্ভ থেকে বালি তোলার সময় মূর্তিটি চোখে পড়ে শ্রমিকদের। লোকমুখে সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা মূর্তিটিকে স্থানীয় একটি মন্দিরে নিয়ে যান। হইচই শুরু হয়ে যায় গোটা এলাকায়।

দুবরাজপুর: বালি তুলতে গিয়ে ডুব এক্কেবারে ইতিহাসের পাতায়। হাতে এসে যাবে প্রাচীন দেব মূর্তি তা কে আর জানত! দারকেশ্বর নদ থেকে বালি তোলার সময় বালির নিচ থেকে উদ্ধার হল পাথরের তৈরি প্রাচীন দেব মূর্তি। শনিবার বিকালে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের ওলা দুবরাজপুরের মন্দিরতলা এলাকা থেকে। মূর্তিটি বাদামী বেলেপাথরে তৈরি দ্বাদশভূজ লোকেশ্বর বিষ্ণুমূর্তি বলে দাবি গবেষকদের।
বাঁকুড়ার কংসাবতী ও দারকেশ্বর নদ তীরবর্তী সভ্যতা বহু প্রাচীন। একসময় এই দুই নদের তীরে গড়ে উঠেছিল উন্নত জৈন সভ্যতা। পরবর্তীতে সেই সভ্যতা হিন্দু সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেলেও ওই দুই নদী তীরবর্তী এলাকায় এখনও বহু জৈন মন্দিরের ছাপ রয়ে গিয়েছে। মাঝেমধ্যে নদী গর্ভ থেকে জৈন তীর্থঙ্করদের দীগম্বর মূর্তি উদ্ধারের ঘটনাও বিরল নয়। তবে এবার দারকেশ্বর নদের গর্ভ থেকে উদ্ধার হল বিষ্ণুর বিরল মূর্তি। তাতেই শোরগোল গোটা এলাকায়।
শনিবার বিকালে ওন্দা ব্লকের ওলা দুবরাজপুর এলাকায় দারকেশ্বর নদী গর্ভ থেকে বালি তোলার সময় মূর্তিটি চোখে পড়ে শ্রমিকদের। লোকমুখে সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা মূর্তিটিকে স্থানীয় একটি মন্দিরে নিয়ে যান। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, একসময় দারকেশ্বর নদের পাড়ে একটি প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির ছিল। সেই মন্দিরের নামানুসারে এলাকার নাম হয় মন্দিরতলা। সেই মন্দিরেই রাখা ছিল এই প্রাচীন মূর্তিটি। সম্প্রতী দারকেশ্বর নদের ভাঙনে মন্দিরটি নদীগর্ভে তলিয়ে গেলে মূর্তিটিও হারিয়ে যায়। সেই মূর্তিই পুনরায় উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এর প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য কত?
প্রত্ন গবেষকরা অবশ্য বলছেন এইটি অত্যন্ত মূল্য। প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছেও এর মূল্য অসীম। ৩ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা ও প্রায় ২ ফুট চওড়া বাদামী বেলে পাথরের মূর্তিটিকে দ্বাদশভূজ লোকেশ্বর বিষ্ণুর মূর্তি বলে দাবি প্রত্ন গবেষক সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মূর্তির মাঝখানে থাকা বারোটি হাত বিশিষ্ট বিষ্ণুর দুদিকে দুই হাত রয়েছে আয়ুধ পুরুষের মাথায়। অপর দু’টি হাত রয়েছে দু’পাশে থাকা শ্রীদেবী ও ভূদেবীর মূর্তির মাথায়। গবেষকদের দাবি মূর্তিটিতে কীরিট, কর্ণকুন্তল, বরমালা ও যজ্ঞোপবিত সহ বিভিন্ন অংশ অক্ষত অবস্থায় থাকায় মূর্তিটি শিল্পের দিক থেকে যেমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই ঐতিহাসিক দিক থেকেও প্রত্নসামগ্রী হিসাবে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একাদশ বা দ্বাদশ শতকে নির্মীত বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান প্রত্ন গবেষকদের। এদিকে এটি উদ্ধারের পর থেকেই তা দেখতে কার্যত মেলা বসে গিয়েছে এলাকায়।
