Dengue: ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বিজেপি জেলা সভাপতির মায়ের, অভিযোগের কাঠগড়ায় আসানসোল পুরসভা

Chandra Shekhar Chatterjee | Edited By: Sukla Bhattacharjee

Aug 27, 2023 | 10:08 PM

Dengue: শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালে মোট ৬৭৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ১৪৪ জন। এই মুহুর্তে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫ জনেরও বেশি রোগী।

Dengue: ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বিজেপি জেলা সভাপতির মায়ের, অভিযোগের কাঠগড়ায় আসানসোল পুরসভা
ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার পর মৃত্যু বিজেপি সভাপতির মায়ের।
Image Credit source: টিভি৯ বাংলা

Follow Us

আসানসোল: ফের ডেঙ্গি (Dengue)  আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। এবার মৃত্যু হল BJP-র আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের মা চন্দনা চট্টোপাধ্যায়ের (৬৫)। ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার পর সেপটিক শকজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয় বলে ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আসানসোল পুরসভা (Asansol Municipal Corporation) -সহ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ডেঙ্গি প্রতিরোধে আসানসোল পুরভা কোনও পদক্ষেপ করেনি এবং তার জেরেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তাঁর মা-কে হাসপাতালে ভর্তি করার ২৪ ঘণ্টা পর রিপোর্ট এসেছে বলে অভিযোগ বিজেপি সভাপতির।

বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় জানান, গত ২৪ অগস্ট রাতে তাঁর মা-কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রচণ্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল তাঁর। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা করে প্রথমে জানান, চন্দনাদেবী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করেন তাঁরা। বেশ কয়েকটি রক্ত পরীক্ষাও করা হয়। তারপর ২৬ তারিখ রাতে চিকিৎসকেরা বাপ্পাবাবুকে জানান, তাঁর মায়ের ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এরপর চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও চন্দনাদেবীকে বাঁচাতে পারেননি। যদিও চন্দনাদেবীর মৃত্যুর কারণ হিসাবে ডেথ সার্টিফিকেটে সেপটিক শক হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি। ডেঙ্গি রিপোর্ট আসতে কেন ২৪ ঘণ্টা দেরি লাগল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। গোটা ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি।

চন্দনাদেবীর মৃত্যুর পর বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের কাকাও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যদিও তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আসানসোল পুর এলাকায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, পুরসভা ডেঙ্গি প্রতিরোধে কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেও অভিযোগ বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের।

যদিও বিজেপি সভাপতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসানসোল পুরসভার ৭ নম্বর বোরো চেয়ারম্যান শিবানন্দ বাউরি। ওই এলাকারই বাসিন্দা বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভার পক্ষ থেকে সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে দাবি জানিয়ে শিবানন্দ বাউরি বলেন, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভা খুব সচেতন। স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা যেভাবে কাজ করছে, সেটা সবাই দেখছে। আশাকর্মী থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও ডেঙ্গি প্রতিরোধে কাজ করছে। তবে কিছু ব্যক্তিগত জায়গা আছে যেখানে তাঁরা ঢুকতে পারছেন না।” তাই মানুষকেও সচেতন হতে হবে বলে জানান বোরো চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “যেখানে আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ঢুকতে পারছেন না সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারাই জমা জমলে কেরোসিন ঢেলে দিলে ডেঙ্গির মশার জন্ম হবে না।”

তবে আসানসোলে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যু হয়। জামুড়িয়া নন্ডী গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার নাম বুধনী হাঁসদা (৩৭)। গত ২০ অগস্ট তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে রক্ত পরীক্ষায় তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়ে। এর আগে গত ১৭ অগস্ট দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আসানসোল পুর এলাকার বাসিন্দা ২০ বছরের অবিনাশ সাউয়ের মৃত্যু হয়েছিল। এই নিয়ে গত ১০ দিনে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে ৩ জনের ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল।

জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালে মোট ৬৭৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ১৪৪ জন। এই মুহুর্তে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫ জনেরও বেশি রোগী। এছাড়া গত ৭ দিনেরও বেশি সময় ধরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২৫ জন থেকে ১৫০ জনের মধ্যে থাকছে বলে খবর।

Next Article