উত্তর ২৪ পরগনা: চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভু এখনও জেলবন্দি। আগামী ২ জানুয়ারি ফের আদালতে জামিন মামলা এগনোর আর্জির শুনানি। তার আগেই ভারতে এলেন চিন্ময়প্রভুর আইনজীবী। চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে ন্যায় বিচার দিতে নয়া কৌশল সাজাচ্ছেন তাঁর আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। বারাকপুরে একটি বিশেষ কাজে এসে তেমনই ইঙ্গিত দিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী। সঙ্গে আরও একটি বিস্ফোরক কথাও বললেন তিনি। আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘আমি ওঁর প্রাণহানির আশঙ্কা করছি।’
প্রবীণ আইনজীবী জানালেন, ঢাকা থেকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য এসেছেন তিনি। সাত-আট দিন থাকব। এইমস হাসপাতালে তাঁর আগে অপারেশন হয়েছিল। সেটারই ফলো আপ করাতে এসেছেন। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আইনজীবী হিসাবে ৩৮ বছর কাজ করছি। ঢাকায় প্র্যাকটিস করি। চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম, চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে লড়তে। কারণ কোনও আইনজীবী সেখানে দাঁড়াতে পারছেন না। কতগুলো মামলা দেওয়া হয়েছে, যা জামিন অযোগ্য। এক আইনজীবীর খুন হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। কে খুন করেছে, তা ভিডিয়োতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই নিয়ে ৭১ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রশাসনের লোক, কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা কেন?”
গত দিনের শুনানিও ভেস্তে গিয়েছে। সেটাও এক অদ্ভুত কারণে। আইনজীবী রবীন্দ্র যখন এজলাসে পৌঁছেছিলেন, আগে থেকেই সেখানে ৫০ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। বিচারক যুক্তি খাড়া করেছিলেন, যেহেতু রবীন্দ্র ঘোষ ঢাকায় প্র্যাকটিস করেন, যেহেতু চট্টগ্রাম বারে প্র্যাকটিস করেন না, তাই তিনি সওয়াল করতে পারবেন না। এই যুক্তিতে জামিন শুনানি এগনোর আর্জির শুনানি পিছিয়ে যায়। তারপর তিনি চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে যান। তখন তাঁর কী অভিজ্ঞতা হয়? এখন কেমন রয়েছেন চিন্ময়প্রভু? সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়েও ভয়ঙ্কর কথা বলেন তিনি।
রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, “আমি চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে দেখার জন্য ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ প্রিজন্সের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি। তিনি অনুমতি দিচ্ছিলেন না। মিনিস্ট্রি অফ হোমস অনুমতি দিলেন। আইনজীবী হিসাবে তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নিই। তারপর চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর এলেন। কান্না জড়ানো কন্ঠ। চোখে জল এসে গিয়েছে। ওঁ বলছেন, বাবা কেমন আছেন? আমি বললাম, আপনি কেমন আছেন? বলতেই আমাকে জড়িতে ধরলেন। ওঁ কেবল একা নন, আরও দুজন সাধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওঁ দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। একটা ফটো তুলেছেন, সেটা আমাকে ডেপুটি জেলার দেননি। আমাকে বলেছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেবেন। কিন্তু পাঠাননি।”
আইনজীবী জানান, তাঁকে চার ঘণ্টা বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। চিন্ময়কৃষ্ণ কী কথা বলেছেন, সেটাও জেল কর্তৃপক্ষ রেকর্ড করছে, সেটা তো কোনওভাবেই করা যায় না। তবে তিনি লড়াইয়ের নয়া কৌশল তৈরি করছেন। বললেন, “২ তারিখ আমি আবার যাব আদালতে। ফাইট করবই। ওঁর মৃত্যুর ভয় আছে বলে মনে করছি, এই কারণে, কেন আমাদের ঢুকতে দেবে না? এটা আইন।”