বাঁকুড়া : ডাইনি অপবাদ (Witchcraft) দিয়ে মারধরের অভিযোগ আদিবাসী দম্পতিকে (Tribal Couple)। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার (Bankura) সারেঙ্গা থানা এলাকার ডাকাই গ্রামে। অভিযোগ, বাউল হেমব্রম ও সরলা হেমব্রম নামে ওই দম্পতিকে পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বেধড়ক মারধরের পর ওই দম্পতিকে বাড়িছাড়া করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আতঙ্কিত ওই দম্পতি এখন বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। ইতিমধ্যেই ওই দম্পতি লিখিত ভাবে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও এই মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার খাতড়ায় মহকুমা শাসক ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের দফতরে হাজির হয়ে ওই দম্পতি লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁদের অভিযোগ, বিগত কয়েক বছর থেকেই সরলা হেমব্রমকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে গালিগালাজ ও কটূক্তি করে যাচ্ছিল গ্রামবাসীদের একাংশ। সম্প্রতি গ্রামের এক বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে পড়লে, সেই অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়ে। ডাইনি অপবাদে মারধরের পাশাপাশি ওই মহিলাকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে ওই দম্পতি এখন খাতড়ায় নিজের বিবাহিত মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। বিষয়টি নিয়ে মহকুমা শাসক ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর, দ্রুত নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রামের দু’পক্ষকে শুক্রবার সারেঙ্গা থানায় তলব করা হয়।
বাউল হেমব্রম ও সরলা হেমব্রমকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর ওই পুড়িয়ে মারার অভিযোগ মানতে চায়নি অভিযুক্তরা। অভিযুক্তদের পাল্টা দাবি, প্রতিবেশীর খড়ের গাদা থেকে গরুর খড় খাওয়া নিয়ে বাউল ও সরলা হেমব্রমের সঙ্গে গ্রামবাসীদের একাংশের বিবাদ বাঁধে। ডাইনি অপবাদ দেওয়া কিংবা মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্তরা। ডাকাই গ্রামের বাসিন্দা রসমনি মুর্মু তথা সারেঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও ডাইনি অপবাদ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে, বিষয়টির দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে ঘটনাটি আসলে কি হয়েছিল, সত্যিই ডাইনি অপবাদে অত্যাচার? নাকি খড়ের গাদা নিয়ে সমস্যা? সেই সব দিক খতিয়ে দেখতে দুই পক্ষকে থানায় ডেকেছেন পুলিশকর্মীরা।