Anubrata Mondal: প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যায় কপালে ভাঁজ শিক্ষা দফতরের, কেন এমন অবস্থা?
Primary School: সম্প্রতি রাজ্যের নির্দেশে জেলার স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ও শিক্ষকের সংখ্যা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায় স্কুল শিক্ষা দফতর।
বাঁকুড়া: প্রাথমিক স্কুলের বেহাল দশা! শুধুমাত্র বাঁকুড়া জেলার প্রায় এক চতুর্থাংশ সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০-এরও কম। অধিকাংশ স্কুলেই গত তিন বছর ধরে দ্রুত হারে নামছে পড়ুয়ার সংখ্যা। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। এত কম সংখ্যক পড়ুয়াকে নিয়ে স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ কী? ভেবে পাচ্ছেনা স্কুল কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে উঠে আসাতেই কি সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলিতে সন্তানকে পড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছেন অভিভাবকরা? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? পড়ুয়ার সংখ্যাহ্রাসের কারণ নিয়ে শুরু হয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলির মধ্যে প্রবল চাপানউতোর।
বাঁকুড়া জেলা জুড়ে মোট ৩৫৬৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৪৮ টি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের নির্দেশে জেলার স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ও শিক্ষকের সংখ্যা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায় স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই সমীক্ষায় জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির ভয়ঙ্কর ছবি সামনে উঠে আসে। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে বাঁকুড়া জেলার প্রায় এক চতুর্থাংশ স্কুলেই পড়ুয়ার সংখ্যা রয়েছে ৩০-এরও কম। কোনও কোনও স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে দুই, তিন, চার অথবা পাঁচ-এ। অথচ স্কুলগুলিতে পরিকাঠামোগত কোনও অভাব নেই, দুই বা ততোধিক শিক্ষক-শিক্ষিকাও রয়েছেন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বেশ কিছু স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা দ্রুত হারে কমছে।
জানা যাচ্ছে, পড়ুয়ার সংখ্যা দ্রুত হারে কমেছে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলিতেও। শিক্ষা দফতরের দাবি, বেসরকারি নতুন নতুন স্কুল চালু হওয়ায় পড়ুয়ার সংখ্যা কমে গিয়েছে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জটিলতা এড়াতে হাইস্কুল সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে বেছে নেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি শিক্ষা দফতরের। কম সংখ্যক পড়ুয়া থাকা স্কুলের শিক্ষকদের মতও তাই।
তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা হ্রাস নিয়ে অবশ্য ভিন্নমত প্রকাশ করেছে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন। তাঁদের দাবি, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও প্রাথমিকের নতুন সিলেবাস চালুর পর থেকেই সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে পড়ুয়ারা। বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যাও। আবার শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা পড়ুয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনগুলির তোলা অভিযোগ নস্যাৎ করেছে।