বীরভূম: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এদিকে জেলার মুখ এখন তিহাড়ে। কেষ্টর অনুপস্থিতিতে বীরভূম দেখবেন মমতাই, সে কথা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে কালীঘাটের বৈঠকেই। তবে জেলায় থেকে সেখানকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হয়েছিল চন্দ্রনাথ সিংহ, বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিংহ ও আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। বীরভূমের সংগঠনের নজরদারিতে বলা হয়েছিল সাত জনের কোর কমিটি বৈঠক করবে প্রতি সপ্তাহে। যা হয়ইনি এতদিন। শনিবার কালীঘাটের বৈঠকে নেত্রীর ধমক খেতেই বৈঠকে বসছে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি। প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠনের রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা হয়েছিল। এসবে ইতি টেনে নেত্রী নিজে বীরভূমের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জেলা সভাপতি থাকবেন কেষ্টই, কেবল তাঁর অনুপস্থিতিতে জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব তাঁর ৫ জনের কোর কমিটির হাতে দিয়েছিলেন নেত্রী।
ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন মুখ্যমন্ত্রী নতুন ভাবে সাত সদস্যের কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। নির্দেশ দিয়েছিলেন, নির্বাচনকে লক্ষ্য করে সংগঠনকে মজবুত করতে প্রত্যেক মাসে বৈঠক করতে হবে কোর কমিটির সদস্যদের। কিন্তু নেত্রীর সেই নির্দেশ পালন হয়নি। অর্থাৎ কোর কমিটির কোনও সদস্যই কোনও বৈঠকে বসেননি। শনিবার কালীঘাটের বৈঠকে তা জেনেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেত্রী। তারপরই তড়িঘড়ি বৈঠকের সিদ্ধান্ত। গোষ্ঠীকোন্দল-বিতর্ক সরিয়ে রেখে শেষমেশ মাস দুয়েক পর কোর কমিটির প্রথম বৈঠক রবিবার। দুপুর দুটোয় বৈঠক শুরুর কথা। বোলপুর দলীয় অফিসেই হবে জেলা কমিটির বৈঠক।
কালীঘাটের বৈঠক থেকেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, বিবাদ নয়, ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের সংগঠনকে মজবুত করতে হবে। কেষ্টর ওপর তাঁর ভরসা এতটাই, যে তিনি তিহাড়ে থাকলেও ভোটের মুখে তাঁর পদ অন্য কাউকেউ দেননি নেত্রী। বরং একজন মুখ্যমন্ত্রী হলে এত ব্যস্ততার মধ্যেও এক জেলা সভাপতির দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। কেবল কাজ ভাগ করে দিয়েছেন কোর কমিটির কয়েকজন নেতার মধ্যে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায় এর গুরুত্ব অপরিসীম।
এরই মধ্যে খবর আবারও বীরভূমে যেতে পারেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, দলীয় সংগঠন নিয়েই মমতা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিকে যেতে পারেন বীরভূম। অনুব্রতহীন জেলায় দলীয় স্তরে ক্ষোভ, একাংশ দলীয় কর্মীদের বসে যাওয়া আর জেলার পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি মাথা ব্যথার কারণ। আর তৃণমূলের এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি ও বামেরা। আর সেখানেই নিজের হাতে রাশ রেখে বীরভূম জেলার সংগঠন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মজবুত করতে চান মমতা বন্দোপাধ্যায়। সে কারণেই দু’মাসের মাথায় ফের জেলা সফরে যেতে পারেন মমতা।