বোলপুর : অমর্ত্য সেনের বাড়ি ভাঙতে এলে তিনি নিজে বুলডোজারের সামনে বসে পড়বেন। কয়েকদিন আগেই এ কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এবার বোলপুরে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা গেল মমতার মুখে। অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’-র জায়গার কোনও অংশ যাতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নিতে না পারে, সে ব্যাপারে আগেই বীরভূমের তৃণমূল নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই জমিতে কেউ হাত দিলে যে তিনি থেমে থাকবেন না, বোলপুরে দাঁড়িয়ে সেই বার্তাই দিয়ে গেলেন মমতা। শুক্রবার মালদহ থেকে ফেরার সময় ট্রেন বোলপুকে দাঁড়াতেই দরজার কাছে বেরিয়ে আসেন তৃণমূল সুপ্রিমো। প্লাটফর্মে তখন জেলার নেতাদের ভিড়। কীভাবে অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হবে, সেই পরামর্শও এদিন দেন মমতা।
‘অমর্ত্য সেনের বাড়িতে হাত দিয়ে দেখুক, আমাকে তো চেনে না…’, এই বলেই ট্রেন থেকে দলীয় কর্মীদের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলেন মমতা। শুধু তাই নয়, ৯ মে অর্থাৎ রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিন পর্যন্ত কীভাবে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়ে উদযাপন করতে হবে, সেটাও বুঝিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে কীভাবে অবস্থান করতে হবে, সেই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মূলত বাউল শিল্পী ও মহিলাদের নিয়ে অবস্থান করার কথা বলেছেন।
তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী এদিন প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে কথা বলেন দলনেত্রীর সঙ্গে। পরে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে অবস্থান চলবে। রবীন্দ্র সঙ্গীত গানের মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ কর্মসুচি চালিয়ে যেতে হবে।’ এছাড়া আগামী ৯ মে বীরভূমে যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দলীয় কর্মসূচির ব্যাপারেও এদিন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেথেন মমতা।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো প্রতীচির সামনে অবস্থান কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের বাইরে বিশিষ্টজনদেরও বোলপুরে যেতে বলেছেন মমতা। ১৩ ডেসিমেল জমি ছাড়তে হবে বলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে নোটিস দেয় বিশ্বভারতী। শনিবার অর্থাৎ ৬ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই নোটিসে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে আপাতত কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।