বীরভূম: ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতেও এই ছবিই দেখা গিয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোট প্রচারে বেরিয়েও সেই অভিজ্ঞতা শতাব্দী রায়ের (Satabdi Roy)। বারবার বঞ্চিতদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। সোমবারের পর মঙ্গলবারও সাংসদ শতাব্দী রায়কে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসী। খয়রাশোলের পর এবার দুবরাজপুর। এদিন দুবরাজপুর ব্লকের চিনপাইয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের ভোটপ্রচারে। জলের অভাব, বার্ধক্য ভাতা, রাস্তার সমস্যা-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ শতাব্দীকে জানান গ্রামের মানুষ। এদিন চিনপাইয়ে ঢুকতেই শতাব্দীর দিকে এগিয়ে এসে অভিযোগ জানান স্থানীয় কয়েকজন মহিলা। বীরভূম সেই অনুব্রত মণ্ডলের জেলা, যিনি বলেছিলেন, তাঁর দল মানুষের জন্য এত কাজ করেছে যে রাস্তার ধারে উন্নয়ন দাঁড়িয়ে। ভোটাররা যখন ভোট দিতে যাবেন, সেই উন্নয়নকে রাস্তার ধারে দেখতে পাবেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। এখন তিনি তিহাড় জেলে। আর তাঁর জেলাতেই ‘উন্নয়ন’ এখন প্রশ্নের মুখে।
এদিন চিনপাইয়ে শতাব্দী ভোট প্রচারে যেতেই তাঁকে ঘিরে কয়েকজন বলেন, “জল আসে না। একটু জলের ব্যবস্থা করুন। আমাদের এখানে সজলধারা নেই, কিছুই নেই।” সূত্রের খবর, গ্রামের জলস্তর এতটাই নেমে গিয়েছে যে কারণে বোরিংয়ের কাজে কিছু সমস্যা থাকছে। এলাকার এক মহিলার কথায়, “জলের সমস্যা বললাম। তবে শুধু জলের সমস্যাই তো নয়, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতার কথাও বললাম। আমাদের জন্য কী ব্যবস্থা করা হয়েছে? কিছুই নেই। কিছুই তো করে দেয় না।” যদিও এ নিয়ে শতাব্দী রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কিছু বলার নেই।”
বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল জেলায় থাকাকালীন শতাব্দী রায়কে সাংগঠনিক কাজে যুক্ত করা হতো না বলেই অভিযোগ উঠত। সেই অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর শতাব্দীই জেলার অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন। বীরভূম জেলায় তৃণমূলের যে নয়া কোর কমিটি তৈরি হয়, তাতেও রাখা হয় শতাব্দী রায়কে। জেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাতেই দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু গত কয়েকদিনে জনসংযোগ হোক বা ভোট প্রচারে গিয়ে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। যদিও শতাব্দী অনুগামীদের দাবি, এটা ক্ষোভ নয়। মানুষ এতদিন না পাওয়াটা বলতে পারেননি হয়ত, এখন সেটাই উগরে দিচ্ছেন।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো বীরভূমেও নির্দলের কাঁটা শাসকদলের গলায়। এ প্রসঙ্গে এদিন শতাব্দী রায়ের হুঁশিয়ারি, “অনেকে ভাবছেন, যাঁরা প্রার্থী হবেন, শুধু তাঁদের নামই সামনে আসবে। তা নয়। তাঁদের পিছনে কারা মদত দিচ্ছে, তাদের নামও আসছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আইবি রিপোর্ট, পুলিশ রিপোর্ট পৌঁছয়। কে গোঁজ গুঁজে দিয়ে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলতে চায় সব খবর যায়। তাঁদের শাস্তি দিতে ২ মিনিট লাগবে।”