শিলিগুড়ি: ছিল রুমাল, হয়ে গেছে বিড়াল। পায়ের সমস্যা। চিকিৎসক পায়ের MRI করতে বলেছিলেন। কিন্তু হাসপাতাল করাল ওই রোগীরই মাথার MRI। ফের প্রশ্নের মুখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ইতিমধ্যেই ওই রোগীর পরিবার হাসপাতালে নালিশ ঠুকেছেন। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা একটি মাদ্রাসার মৌলানা আবু বক্কর সিদ্দিকি পায়ের কিছু সমস্যা ছিল। তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান চিকিৎসা করাতে। সেখানে তাঁকে ভর্তি নেওয়ার পর MRI করতে বলা হয়। রোগীর বক্তব্য, চিকিৎসক MRI করতে বললেও, টেস্ট করানোর জন্য ‘ডেট’ মেলেনি। দিনের পর দিন ঘুরে তারিখ না মেলার পর হাসপাতালেই তাঁর সঙ্গে এক দালালের দেখা হয়। আবু বক্কর সিদ্দিকির দাবি, দালালকে টাকা দিলেই দ্রুত MRI এর ‘ডেট’ মেলে।
গত ১৫ অক্টোবর MRI করিয়ে রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছালে চিকিৎসকের কথা শুনে তিনি আকাশ থেকে পড়েন। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, পায়ের MRI হলেও যে প্লেট রোগীকে দেওয়া হয়েছে তা মাথার MRI-এর।
আবু বক্কর বলেন, “আমি টাকা না দেওয়ার চার দিন নানা অজুহাতে ঘোরানো হয়। এরপরেও টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে পায়ের MRI করলেও দেওয়া হয় মাথার ছবির প্লেট।”
ইতিমধ্যেই এ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযোগ জানান তিনি। তদন্তের জন্যে সোমবার বক্কর ও তাঁর পরিবারকে ডেকে পাঠানো হয়। এদিন রোগীকে নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান আত্মীয় হাকিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা শাস্তি চাই। টাকা না দিলে পরিষেবা মেলে না। ঘুরানো হয়। ভুল রিপোর্ট দেওয়া হয়। এত বড় সরকারি হাসপাতালেই এমনটা ঘটছে, তাহলে আমরা যাব কোথায়?”
ভুলের কথা স্বীকার করে নিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আসিস্ট্যান্ট সুপার গৌতম দাসের দাবি, “নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে ভুলের জেরেই এমনটা হয়েছিল। তবে দালাল চক্রের বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। হয়ত কারও খপ্পরে পড়েছেন।”
সরকারি হাসপাতালে দালালচক্রের বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ আগেও উঠেছে। কলকাতার প্রথম সারির সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলিতেও এহেন অভিযোগ একাধিক উঠেছে। রাজ্যের মন্ত্রী খোদ হাসাপাতালে দালালচক্রের রমরমা নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারপরও এই অবস্থা।