দার্জিলিং: পাহাড়ের গন্ধ নাকে মুখে। দূর থেকে ভেসে আসছে ঢাকের বোল। মাইকে বাজছে শিল্পী শ্রেয়া ঘোষালের গলায় ‘এলো দুর্গা মা’। পুজোয় দার্জিলিং ম্যালের এই ছবি দেখে যে কোনও বাঙালির প্রাণ নেচে উঠতে বাধ্য। গত কয়েক বছর ধরেই দার্জিলিং চৌরাস্তা ম্যালে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। পুজোর সময় অনেক পর্যটক পাহাড়ে বেড়াতে আসেন। মূলত সে কথা মাথায় রেখেই এই পুজো শুরু হয়। যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে সেই পুজোর রংও। আয়োজনে এতটুকু বাড়াবাড়ি নেই কোথাও। পাহাড়ি নির্যাসকে বজায় রেখেই ম্যালে এ পুজো বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
পুজোর ছুটিতে টুক করে পাহাড়ের পথে বেরিয়ে পড়া বাঙালির অভাব নেই। তবে পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে শীতপোশাকে নিজেদের ঢেকে, মোমোর গরম স্যুপে ঠোট ছোঁয়াতে ছোঁয়াতে যদি পুজোর আনন্দ উপভোগ করা যায়, এর থেকে বড় পাওনা কী বা হতে পারে? উদ্যোক্তারা জানান, পর্যটকরা বেড়াতে এসে যদি দেখেন, এখানে পুজো হচ্ছে স্বভাবতই আনন্দ পাবেন। সেটা মাথায় রেখেই এই আয়োজন।
পাহাড় আর ঘনকুয়াশার ফাঁকে মায়ের এমন আবাহনে খুশি পর্যটকরা। নদিয়া থেকে এবার সপরিবারে দার্জিলিং ঘুরতে গিয়েছেন জনসন সন্দীপ। তিনি বলেন, “খুব ভাল লাগছে। পুজো উপলক্ষে ম্যাল খুব সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। প্রচুর মানুষ এখানে এসেছেন। পুজোর আনন্দ আর পাহাড়ের আনন্দ মিলেমিশে একাকার। এরকম অভিজ্ঞতা আগে হয়নি। পাহাড়ে যে এমন পুজো পাব, পুজোয় এমন আন্তরিকতা পাব ভাবিনি। মানুষকে দেখছি প্রচুর কেনাকাটা করছে। জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করছে। সকলেই খুব মজা করছে। এত সুন্দর প্রতিমা। বাঙালির পুজোর আনন্দ কিন্তু পুরোপুরি এখানে পাচ্ছি।”
মুর্শিদাবাদ থেকে পাহাড়ে বেড়াতে এসেছেন সাবির আলি। স্ত্রী ও কোলের বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন প্রথমবার পাহাড়ে। তাঁর স্ত্রীর কথায়, “প্রথমবার পাহাড়ে এলাম। আর এসে দেখছি দুর্গাপুজোও হচ্ছে। এর থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে। আমাদের জেলায় যেমন পুজোর সময় হইহই হয়, এখানেও দেখছি সেই একই ছবি।” পরিবার হোক বা বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে, পাহাড়ে বেড়াতে এসে এভাবে দুর্গাপুজোর স্বাদ পাওয়াকে ‘বোনাস’ বলছেন পর্যটকরা।