শিলিগুড়ি: ভেঙেছে ১৪ হাজার কোটির বাঁধ, সিকিম বিপর্যয়ে প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে ৪০ জনের। নিখোঁজ অনেকেই। ফলে পাহাড়ি উচ্চতায় সরকারি ছাড়পত্র নিয়েই চলা বাঁধগুলি এখন কতটা সুরক্ষিত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ভূ বিজ্ঞানীরাই। ভূ বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশের দাবি, শুধুমাত্র হ্রদে ক্লাউড ব্লাস্ট হয়ে এই বিপর্যয় হলে সে ক্ষেত্রে এত মানুষের মৃত্যু হত না। পড়তে হত না এত ক্ষতির মুখে। লোহনকের জল নেমে এসে চুংথামে বাঁধে এসে পড়ে। এমনিতেই বাঁধে আটকে থাকা প্রবল জলের চাপ, আর বাড়তি বিপুল জলরাশি প্রবল বেগে আছড়ে পড়ায় আর চাপ নিতে পারেনি বাঁধগুলি। হুড়মুড়িয়ে আলগা হয় বাঁধন। যার জেরে প্রলয় তাণ্ডব চলে তিস্তাপাড়ে।
শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান রঞ্জন রায় বলেন, এই এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ। এখানকার মাটিও অপেক্ষাকৃত নবীন। বাঁধগুলিতে সব সময় বিপুল পরিমাণ জল আটকে রাখায় তার ক্রমাগত চাপ রয়েছে। এর সঙ্গে বাড়তি চাপ যোগ হতেই কয়েক হাজার কোটি টাকার বাঁধ হুড়মুড়িয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। একইসঙ্গে নজরদারি পর্যাপ্ত ছিল কি না সে প্রশ্ন তুলছেন তিনি। পাশাপাশি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সময়গুলি ছাড়া বাকি সময়ে চাপ কমাতে নিয়মিত কিছু জল ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
রঞ্জনবাবুর বক্তব্য, অধিক উচ্চতায় নদীর বাঁধ বিপদ ডেকে আনে। সরকারি ছাড়পত্র নিয়েই পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণে বাঁধ তৈরি করে ফেলা হয়েছে। পাহাড়ের ভিতর দিয়েই সুড়ঙ্গ করে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনাও হচ্ছে। আমাদের ভাবা উচিত, উৎপাদিত জলবিদ্যুতে মানুষের মঙ্গল সাধন করতে এই প্রকল্প আগামীতেও চালাব কি? নাকি এত মানুষের ক্ষতি রুখব? আমরা কি ভেবেছিলাম জাতীয় সড়ক এভাবে তলিয়ে যাবে? সামনে আরও বিপদ আসছে এটুকু বলতে পারি।