দার্জিলিং: বাগডোগরায় পৌঁছয় শহিদ ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপার কফিনবন্দি দেহ। সোমবার রাতে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইতে মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার তাঁকে বাগডোগরা ব্যাঙ্কে আনা হয়েছে। সেখানে এক রাত থাকার পর বৃহস্পতিবার দার্জিলিং নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর দেহ। আগামী ১৯ জুলাই, সকাল ৮টায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের ডোডায় সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইতে শহিদ হন দার্জিলিংয়ের লেবংয়ের বড়াগিঙ্গের বাসিন্দা ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপা। ২৭ বছর বয়সে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়ে নিহত হয়েছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া গোটা শৈলশহরে। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের ডোডা থেকে চার ঘণ্টা দূরত্বে একটি পাহাড়ি জঙ্গলে অভিযানের সময় আচমকা জঙ্গিরা হামলা চালায়।
জঙ্গিদের হামলার পাল্টা জবাব দেয় সেনা জওয়ানরাও। দু’পক্ষের লড়াইতে ব্রিজেশ-সহ আরও চার সেনা জওয়ানের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এদিন শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে দেহ নিয়ে যাওয়ার পর বাগডোগরা সেনা ছাউনিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্মান জানানো হয় তাঁকে। সেখান থেকে তাঁর দেহ সড়কপথে লেবংয়ে তাঁর জন্মভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ব্রিজেশের বাবা কর্নেল ভুবনেশ থাপা (অবসরপ্রাপ্ত) বলেন, ‘‘ছোট থেকেই ব্রিজেশের সেনার প্রতি খুব আকর্ষণ ছিল। নিজেকে সেইভাবেই তৈরি করেছিল ও। কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আক্ষেপ নেই। আমার সন্তান দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হয়েছে।’’
কর্নেল ভুবনেশ থাপা ২০১৪ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। বর্তমানে তিনি দার্জিলিংয়ের লেবংয়েই এক্স সার্ভিসম্যান হেলথ সার্ভিস স্কিমে কর্মরত রয়েছেন। পরিবারে রয়েছেন মা নিলীমা থাপা ও দিদি নিকিতা থাপা। নিকিতা থাপা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় সঙ্গীত নিয়ে পড়াশুনো করছেন। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনিও বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
ব্রিজেশ থাপার জন্ম লেবংয়ে। বাবার কাজের জন্য ব্রিজেশ পড়াশুনো করেছেন রাজ্যের বাইরেই। বি টেক পাশ করার পর কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন তিনি। ২০১৮ সালে তিনি ওই ডিফেন্স সার্ভিসের শর্ট সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় পাশ করেন ও ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তাঁকে এক্সট্রা রেজিমেন্টাল ডিউটির জন্য ভারতীয় সেনার বিশেষ বিভাগ ১৪৫ আর্মি এয়ার ডিফেন্সের অধীন জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা সেনা ছাউনিতে বদলি করা হয়। কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন তিনি। নিজের ট্রুপ নিয়ে অভিযানে যাওয়ার সময় আচমকা তাঁদের উপর হামলা হয়। সেই হামলাতেই প্রাণ হারান ব্রিজেশ।