শিলিগুড়ি: ‘গত চল্লিশ বছর ধরে সব রাজনৈতিক দল আমাদের ঠকিয়েছে। আজ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর কৃপায় যে সিএএ লাগু হয়েছে, তাতে আমরা খুবই গর্বিত।’ কথাগুলো বলতে বলতে এক বাধ ভাঙা আনন্দ আর উচ্ছ্বাস বেরিয়ে আসছিল কার্তিক কবিরাজের চোখে-মুখে। শিলিগুড়ির ঠাকুরনগর কলোনীতে বাড়ি কার্তিকবাবুর। সোমবার সন্ধেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরই সীমাহীন আনন্দে ফেটে পড়েছেন তিনি। শুধু কার্তিকবাবুই নন, শিলিগুড়িতে ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন ঠাকুরনগর এলাকায় সন্ধে থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের সকলের মধ্যেই এক উৎসবের মেজাজ।
সেই ২০১৯ সাল থেকে অপেক্ষা করছেন তাঁরা। তবে মোদী সরকার কথা রেখেছে। যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের জন্য মতুয়ারা এতদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন, সেই অপেক্ষার দিন আজ শেষ হয়েছে। সোমবার থেকেই দেশব্যাপী কার্যকর হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। আর এই নতুন আইন কার্যকর হতেই আনন্দে রাস্তায় নেমে পড়েছেন মতুয়া সমাজের মানুষজন। কেউ ঢাক-ঢোল বাজাচ্ছেন, কেউ কাঁসর বাজাচ্ছেন, কেউ আবার উলুধ্বনি দিয়ে এই আনন্দ-মুহূর্তে সামিল হয়েছেন।
সিএএ কার্যকর হওয়ার খুশিতে ডগমগ মতুয়াদের গলায় আজও সেই পুরনো দিনের অভিজ্ঞতার কথা। কীভাবে তাঁদের বছরের পর বছর ধরে ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার করা হয়েছে, সে কথাও শোনালেন তাঁরা। কার্তিক কবিরাজ বললেন, ‘আমরা এতদিন ধরে ঠকে এসেছি। আজ আমাদের বাঁচার মতো একটা আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তাই আজ আমরা গর্বিত হয়ে রাস্তায় নেমেছি। ৪০ বছর ধরে আমার বাবা-কাকাদের মানুষের মর্যাদাই দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাঁদের শিয়াল-কুকুরের মতো অবজ্ঞা করা হয়েছে। ভোটের সময় শুধু আমাদের চিহ্নিত করা হত – আমরা উদ্বাস্তু, আমরা শরণার্থী। কিন্তু ভোট চলে গেলে আর কেউ আমাদের কথা বলে না।’
আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে যে নতুন দিগন্ত খুলে দিল মোদী সরকার, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন তাঁরা। বলছেন, ‘আজ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমরা খুব খুশি। আমরা আজ বলতে পারব, যে আমরাও মানুষের অধিকার পেয়েছি।’