শিলিগুড়ি: বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারতে গিয়ে খালের জলে তলিয়ে গিয়েছিল বছর তেইশের মৃগাঙ্ক। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আটক করে তাঁর বন্ধুদের। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার উদ্ধার হয় যুবকের দেহ। তবে ফিটফাট চেহারার ছেলেটাকে যে এভাবে দেখতে হবে তা হয়ত স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি মৃগাঙ্কের মা-বাবা। ওই যুবকের শরীরের একাধিক জায়গায় রয়েছে ক্ষতচিহ্ন। শুধু তাই নয়, মুখশ্রী থেকে যেন ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে চোখ। ছেলের শরীরের এই বীভৎস অবস্থা দেখে তাঁদের অনুমান জলে ডুবে নয়, পরিবারের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগও জমা দেন তাঁরা। মৃতের পরিবারের দায়ের ভিত্তিতে গ্রেফতার মৃগাঙ্গর বন্ধু স্বপ্ননীল নন্দী।
গত শনিবার সন্ধ্যায় বন্ধু স্বপ্ননীল নন্দীর সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়ে খালের জলে তলিয়ে যায় বছর ২৩ এর মৃগাঙ্ক চৌধুরী। তিনি শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা। এ দিকে, রাত অবধি বাড়ি না ফেরায় থানায় নিখোঁজ ডায়রি করে পরিবার। তদন্তের স্বার্থে শনিবার রাত্রেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ স্বপ্ননীল নন্দীকে আটক করে।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হয় মৃগাঙ্কর দেহ। শরীরে বেশ কয়েক জায়গায় ক্ষত দেখতে পাওয়া যায়। পরিবারের অনুমান তাঁকে খুন করেছে বন্ধু স্বপ্ননীলই। সেই পরিপেক্ষিতে মৃগাঙ্কের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে এনজেপি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মৃগাঙ্ক এর পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করে স্বপ্ননীল নন্দীকে। মঙ্গলবার অভিযুক্তকে জলপাইগুড়ি আদালতে পাঠানো হয়। তাঁকে চারিদিনের পুলিশ হেওয়াজতে নেওয়া হয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, মৃগাঙ্ক এবং স্বপ্ননীল দুজনেই ছিলেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। একসঙ্গেই গানবাজনাও করতেন তাঁরা। মৃগাঙ্ক গান করতেন এবং স্বপ্ন নীল গিটারিস্ট ছিলেন। ঘটনার পর স্বপ্ননীল পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে বন্ধুকে গ্রেফতার করে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিছক দুর্ঘটনা নাকি এর পেছনে অন্য রহস্য আছে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
মৃতের পরিবারের দাবি, দেহে আঘাতের চিহ্ন আছে। চোখে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। পেটেও জল ছিল না। ফলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই পরিষ্কার হবে সব কিছু। ফলত, পুলিশের তদন্তের উপরই ভরসা রাখছেন মৃতের পরিবার।